রোমাঞ্চকর জয়ে নকআউট পর্বে সেনেগাল

Senegal

ড্র করলেই নকআউট পর্ব নিশ্চিত ছিল ইকুয়েডরের, সেখানে জিততেই হতো এমন সমীকরণ ছিল সেনেগালের সামনে। কঠিন হিসাব নিয়ে নেমে আক্রমণের স্রোত বইয়ে বিরতির আগেই এগিয়ে যায় আফ্রিকার দলটি। বিরতির পর ইকুয়েডর খেলায় ফিরলেও দ্রুতই এগিয়ে গিয়ে সেনেগাল তোলে রোমাঞ্চকর জয়। 'এ' গ্রুপে রানার্সআপ হয়ে তারা নিশ্চিত করে দ্বিতীয় রাউন্ড।

মঙ্গলবার কাতারের আল রাইয়ান স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপে 'এ' গ্রুপের শেষ ম্যাচে ইকুয়েডরকে ২-১ গোলে স্তব্ধ করে দিয়েছে সেনেগাল। বিশ্বকাপ শুরুর আগে দলের সেরা তারকা সাদিও মানেকে চোটের কারণে হারিয়েছিল সেনেগাল। স্বপ্নটাও একটা পর্যায়ে ফিকে হয়ে গিয়েছিল তাদের। অবশেষে  শঙ্কা পার করে তারা পা রাখল শেষ ষোলোয়।  দলের জয়ে গোল করে হিরো ইসমাইল সার ও কালিদো কোলিবালি। ইকুয়েডরের একমাত্র গোলদাতা মোসেস কাইসেডো।

পুরো ম্যাচে ১৭টি শট করে তিনটি লক্ষ্যে রাখতে পারে সেনেগাল। যা থেকে তারা আদায় করে ২ গোল। ইকুয়েডর ১৩ শটের চারটি লক্ষ্যে রাখতে পারলেও তা থেকে এক গোলের বেশি পায়নি।

ম্যাচের তৃতীয় মিনিটেই সুযোগ পায় সেনেগাল। বাম প্রান্ত দিয়ে লেফট ব্যাক ইসমাইল ইয়াকবস উঠে এসে বক্সের ভেতরে বল দেন। সেখানে ফাঁকায় থাকা মিডফিল্ডার ইদ্রিসা গুয়ের সুযোগ হাতছাড়া করেন পোস্টের বাইরে মেরে।

৮ম মিনিটে আরেকটি সুযোগ আসে সেনেগালের । এবার হেলায় তা হারান বোউলায়ে দিয়া। ইউসৌফ সাবালির ডিফেন্স চেরা পাস পেয়ে পোস্টের বাইরে মারেন তিনিও। পরের মিনিটে প্রতি আক্রমণে উঠে সেনেগালের বক্সের বাইরে ফ্রি কিক আদায় করে ইকুয়েডর। অধিনায়ক এন্নার ভ্যালেন্সিয়ার নেওয়া শট তৈরি করতে পারেনি বিপদ।

১৩ মিনিটে ইলিমান এনদিয়ায়ের বক্সের বাইরে থেকে মারা শটও লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে শুরুর তীব্র চাপ থেকে হতাশা বাড়ে সেনেগালের। ২ মিনিট পর  বাম কোনা থেকে পাপে গুয়ের দুর্বল শট জমা পড়ে গোলরক্ষকের হাতে। ২৩ মিনিটে আবারও হতাশ হন তিনি। এবার তার একক চেষ্টায় ঢুকে নেওয়া বাঁকানো শটও যায় বাইরে।

৩৮ মিনিটে  দিয়ার সঙ্গে চমৎকার লিঙ্ক আপ প্লেতে বক্সে ঢুকে যান ইসমাইল সার। কিন্তু বাধাগ্রস্ত হন প্রতিপক্ষের ডিফেন্সে। খানিক পরই আসে গোল।

৪১ মিনিটে অ্যাঞ্জেলো প্রেসিয়াদো সারকে বক্সের ভেতর  ফাউল করলে পেনাল্টি পেয়ে যায় সেনেগাল। নিজের তৈরি করা সুযোগ কাজে লাগিয়ে সার ঠান্ডা মাথায় বল জালে জড়িয়ে দলকে এগিয়ে নেন।

জিততেই হবে এমন সমীকরণের ম্যাচে প্রথমার্ধেই ১০টি শট মেরে একটিতে লক্ষ্য রেখে গোল আদায় করে নেন সেনেগাল। লাতিন আমেরিকার দেশ ইকুয়েডর ড্র করলেই চলে এমন সমীকরণে খেলেছে রক্ষণাত্মক। প্রথম ৪৫ মিনিটে কেবল দুটি শট মারতে পারে তারা। 

বিরতির পর খেলায় ফিরতে মরিয়া ইকুয়েডর বাড়াতে থাকে চাপ। তবে রক্ষণে শক্তি বাড়ানো সেনেগালের বক্সে গিয়ে বারবার খেই হারাচ্ছিল তারা। নিষ্প্রভ হয়ে পড়া ইকুয়েডর শিবিরে যখন হতাশা বাড়ছিল তখন আচমকাই আসে সমতা সূচক গোল।

৬৭ মিনিটে কর্নার থেকে বল পেয়ে প্রথমে হেডে ফেলিক্স তরেস বল নামিয়ে দেন। তা পেয়ে মোসেস কাইসেডো জালে জড়িয়ে মাতেন উল্লাসে।

ধাক্কা খেয়ে তিন মিনিট  পর ফের এগিয়ে যায় সেনেগাল। এই গোলেরও উৎস সেট পিস। উড়ে আসা বল জটলার মধ্যে পড়ে দিক বদলে আসে ফাঁকায় দাঁড়ানো কালিদো কোলিবালির কাছে। দারুণ শটে দলকে এগিয়ে দেন নাপোলি ডিফেন্ডার।

৭৬ মিনিটে সমতায় ফেরার সুযোগ হারান গঞ্জালো প্লাতা। জটলার মধ্যে বল নামিয়ে যে শট নিয়েছিলেন, তাতে ছিল না জোর। ৮২ মিনিটে ব্যবধান আরও বাড়তে পারত। বাম্বা দিয়েংয়ের দূরপাল্লার শট যায় অল্পের জন্য বাইরে দিয়ে।

শেষ কয়েক মিনিট বেশ কয়েকটি আক্রমণ চালায় ইকুয়েডর। ডিফেন্সে শক্তি বাড়িয়ে দাঁতে দাঁত চেপে তা সয়ে যায় সেনেগালিজরা। গ্রুপে ভালো অবস্থান নিয়েও শেষ ম্যাচের বেহাল দশায় কান্নায় ভেঙে পড়তে হয় লাতিন আমেরিকার দলকে। গ্রুপের আরেক ম্যাচে কাতারকে ২-০ গোলে হারিয়ে শীর্ষে থেকে নকআউট পর্ব নিশ্চিত করেছে নেদারল্যান্ডস।

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh races to expand air cargo capacity

In a first move to address the shortfall, Sylhet's Osmani International Airport is set to launch dedicated cargo operations today

10h ago