দারুণ জয়েও বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিল মেক্সিকো

বুধবার রাতে কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামে ‘সি’ গ্রুপের ম্যাচে সৌদি আরবকে ২-১ গোলে হারিয়েছে মেক্সিকো। কিন্তু জিতেও কান্নায় ভেঙে পড়তে হলো তাদের।পয়েন্ট সমান হলেও গোল গড়ে পিছিয়ে থেকে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিতে হয়েছে উত্তর আমেরিকার দেশকে।

আর্জেন্টিনার কাছে কোণঠাসা হয়ে হেরে ম্যাচ শেষ করা পোল্যান্ডের খেলোয়াড়দের চোখ তখন মোবাইল স্ক্রিনে। হুট করেই তাদের উল্লাস! কারণ মেক্সিকোর বিপক্ষে শেষ মুহূর্তে ব্যবধান কমিয়ে ফেলেছে সৌদি আরব। গোল গড়ে তাই নিশ্চিত হয়ে গেছে পোল্যান্ডের নকআউট রাউন্ড। উত্থান-পতন, আনন্দ বেদনার এক অদ্ভুত রাত দেখা গেল বিশ্বকাপে। দুর্দান্ত ফুটবল খেলেও বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিল মেক্সিকো।

বুধবার রাতে কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামে 'সি' গ্রুপের ম্যাচে সৌদি আরবকে ২-১ গোলে হারিয়েছে মেক্সিকো। কিন্তু জিতেও কান্নায় ভেঙে পড়তে হলো তাদের। পয়েন্ট সমান হলেও গোল গড়ে পিছিয়ে থেকে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিতে হয়েছে উত্তর আমেরিকার দেশকে।

 

খেলা ২-০ ব্যবধানে শেষ হলেও আরেক রকম ট্র্যাজেডির শিকার হতে হতো মেক্সিকোকে। পোল্যান্ড, মেক্সিকো দুই দলের পয়েন্ট সমান। মুখোমুখি লড়াইয়েও ড্র। গোল গড়ও সমান থাকার পর দেখা হয়েছিল ফেয়ার প্লে পরিসংখ্যান। তাতে কিছুটা এগিয়ে ছিল পোলিশরা।

পরের পর্বে যেতে বড় ব্যবধানে জেতার সমীকরণ নিয়ে নামা মেক্সিকো শুরু থেকেই ছিল মরিয়া। আক্রমণের স্রোত বইয়ে তারা প্রতিপক্ষকে কাঁপিয়ে দিতে থাকে।

গোটা ম্যাচে সৌদি আরবের বক্সের দিকে ২৬টি শট মারে মেক্সিকো, যার ১০টাই ছিল লক্ষ্যে। প্রতিপক্ষের ১০ শটের দুটি ছিল লক্ষ্যে। এই পরিসংখ্যান বলে দেয় খেলায় কতটা দাপট ছিল মেক্সিকানদের।

তিন মিনিটে প্রথম সুযোগ পেয়েছিল মেক্সিকো। লুইস শ্যাভেজ দারুণ বল বের করে দেন আলেক্সিস ভেগাকে। গোলরক্ষককে একা পেয়ে গিয়েছিলেন তিনি। তবে সৌদির কিপার আল ওয়াইস বেরিয়ে এসে দারুণ দক্ষতায় দলকে রক্ষা করেন।

৭ মিনিটে আবার সুযোগ পায় মেক্সিকো। এবার দারুণ ক্রস করেন ভেগা। হেনরি মার্টিন অল্পের জন্য তা স্পর্শ করতে পারেননি।

১৩ মিনিটে ফ্রি কিক থেকে নেওয়া মোহামেদ কান্নোর শট থেকে গোল পেতে পারত সৌদি আরবও। অল্পের জন্য তা হয় লক্ষ্যভ্রষ্ট। প্রতি আক্রমণে পরের মিনিটে সৌদির গোলরক্ষক আরও একটি আক্রমণ বাঁচিয়ে দেন সময়মত বেরিয়ে এসে।

২৭ মিনিটে প্রায় গোল লাইন থেকে দলকে বাঁচান আল-আমারি। জায়গা পেয়ে হার্ভিং লোজানো ক্রস করে ছিলেন দূরের পোস্টে। পিনেদা করেছিলেন হেড, সৌদি ডিফেন্ডার আল-আমারি তা ঠেকিয়ে দিলে বেঁচে যায় এশিয়ার দলটি।

৪৩ মিনিটে শ্যাভেজের ফ্রি কিক থেকে পাওয়া বল ভালো জায়গায় পেয়ে কাজে লাগাতে পারেননি লোজানো।

প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে সুযোগ পেয়েছিল সৌদি আরবও। দারুণ এক ক্রস পেয়ে জোরালো হেড করেছিলেন আল হাসান। তার হেড অল্পের জন্য যায় দূরের পোস্টের বাইরে।

বিরতির পর নেমেই গোল পেয়ে যায় মেক্সিকো। সিজার মন্তেসের কাছ থেকে বল পেয়ে হেনরি মার্টিন জালে জড়িয়ে দেন বল। গোল খেয়ে প্রতি আক্রমণে উঠে সুযোগ তৈরি করেছিল সৌদিও।

৫২ মিনিটে চোখ ধাঁধানো গোলে ব্যবধান বাড়ায় মেক্সিকো। বক্সের বাইরে থেকে ফ্রিক কিক পেয়েছিল মেক্সিকো। বা পায়ের দুর্দান্ত শটে সরাসরি বল জালে জড়িয়ে দেন শ্যাভেজ।

অন্য ম্যাচে পোল্যান্ড আর্জেন্টিনার বিপক্ষে  ২-০ গোলে পিছিয়ে যাওয়ায় গোলগড় সমান হয়ে যায় মেক্সিকোর। কিন্তু তখন পর্যন্ত ফেয়ার প্লের রেকর্ডে পিছিয়ে ছিল তারা। নকআউটে যেতে আরেক গোল পেতে মরিয়া দলটি চেষ্টা চালায় একের পর এক।

৬৬ মিনিটে লোজানোর বল নিয়ে ছুটে কাট করে ভেতরে এসে নেন শট। সৌদির গোলরক্ষক তা ঠেকিয়ে দেন। ৭০ মিনিটের লোজানোর ফ্রি কিক ক্লিয়ার করলেও বল পেয়ে যান শ্যাভেজ, তিনি দেন মার্টিনকে। তার বলে এক বাউন্স খেয়ে যায় বারের উপর দিয়ে।

৭৮ মিনিটে বক্সের হালকা বাইরে থেকে পিয়েন্দার শট অল্পের জন্য যায় বাইরে। খানিক পর সুর্বণ সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যায় তাদের। লোজানো আবার বা প্রান্ত দিয়ে বল ভেতরে ঢুকিয়েছিলেন। প্রথম দফায় ভালো করে বল ক্লিয়ার করতে পারেননি ওয়াইস। ফাঁকায় দাঁড়ানো রদ্রিগুয়েজও কাজে লাগাতে পারেননি সুযোগ।

৮৮ মিনিটে বল জালে জড়িয়ে দিয়েছিল মেক্সিকো। মাঝ মাঠ থেকে পাস  পেয়ে উরিল আন্তুনা গোলরক্ষকে পরাস্ত করে গোল ঢুকিয়েছিলেন।  কিন্তু সহকারীর রেফারির অফ সাইডের বাঁশি হতাশ করে তাদের।

যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে ফ্রিফ কিক আবারও প্রতিহত করেন সৌদির গোলরক্ষক।

প্রবল আক্রমণের স্রোত ভেঙে ৯৫ মিনিটে গোল পেয়ে যায় সৌদি আরব। প্রতি আক্রমণ থেকে সালিম আল দাওসারি গোলরক্ষককে একা পেয়ে বল জালে জড়িয়ে দেন। গোল খাওয়ার ধাক্কা সামলে একদম শেষ মুহূর্তেও একটি সুযোগ হাতছাড়া করে মেক্সিকো।

 

Comments

The Daily Star  | English

The story of Gaza genocide survivor in Bangladesh

In this exclusive interview with The Daily Star, Kamel provides a painful firsthand account of 170 days of carnage.

1d ago