বিধ্বস্ত পাকিস্তানি সমর্থকদের আশার নাম বাংলাদেশ

সোমবার সকাল। রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়ামের মূল প্রবেশপথের ঠিক সামনে কয়েকজন স্থানীয় ফেরিওয়ালা বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের পতাকা বিক্রি করছিলেন, যে দুটি দল চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির 'এ' গ্রুপের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে আজ মুখোমুখি হয়েছে। আর অবধারিতভাবেই তাদের বিক্রয়ের তালিকায় ছিল স্বাগতিক পাকিস্তানের পতাকা।
বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ড পতাকা বিক্রি করতে থাকা একজন ফেরিওয়ালাকে জিজ্ঞেস করা হলে, তার ঝটপট উত্তর শুনে বোঝা গেল, তার ও পাকিস্তানের বেশিরভাগ ক্রিকেটপ্রেমী আজ কোন দলের পক্ষে আছে, 'আমরা আজ বাংলাদেশকে সমর্থন করছি।'
নিউজিল্যান্ড ও ভারতের কাছে টানা দুটি ম্যাচে হেরে গেছে পাকিস্তান। ফলে টুর্নামেন্টের প্রথম রাউন্ড থেকেই বাদ পড়ার শঙ্কায় রয়েছে আয়োজক দলটি। এই মুহূর্তে তাই বেশিরভাগ পাকিস্তানি ভক্তের মধ্যে সাধারণ অনুভূতি এমন— তারা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশকে সমর্থন দিচ্ছে।
বাংলাদেশও দুবাইতে ভারতের কাছে তাদের প্রথম ম্যাচে হেরেছে। কিন্তু আজ যদি তারা জিততে পারে, তাহলে 'এ' গ্রুপে থাকা চারটি দলই সেমিফাইনালে পৌঁছানোর দৌড়ে টিকে থাকবে। তবে নিউজিল্যান্ড জিতলে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান উভয়েরই নকআউটে ওঠার আশা শেষ হয়ে যাবে।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে পাকিস্তান দলের হতাশাজনক পারফরম্যান্সের পর দেশটির ভক্ত, গণমাধ্যম ও প্রাক্তন ক্রিকেটারদের ক্ষোভ স্পষ্ট। বিখ্যাত উর্দু সংবাদপত্র 'ডেইলি এক্সপ্রেস' আজ প্রথম পৃষ্ঠায় শিরোনাম করেছে, 'পাকিস্তান চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে প্রায় ছিটকে গেছে। এখন সবকিছু নির্ভর করছে যদি-কিন্তুর ওপর। ভারতের কাছে হারে জাতি হতাশ।'
ক্ষুব্ধ সমর্থকদের একজন হলেন হাম্মাদ, যিনি এই প্রতিবেদক বর্তমানে যে হোটেলে অবস্থান করছেন, সেখানকার একজন স্টাফ। দুবাইতে গতকাল ভারতের কাছে পাকিস্তানের ৬ উইকেটের হার নিয়ে তিনি বলেন, "আসলে আমি এই দল নিয়ে সব আশা হারিয়ে ফেলেছি। কীভাবে খেলতে হবে সেই সাধারণ জ্ঞানও নেই। আমি ইতোমধ্যে তাদের খেলা দেখা ছেড়ে দিয়েছি।'
আশেপাশে অবশ্য কিছু আশাবাদী সমর্থকও রয়েছেন। তারা আশা করছেন যে, টাইগাররা ছন্দে থাকা কিউইদের হারিয়ে পাকিস্তান ও বাংলাদেশ উভয়কেই টুর্নামেন্টে টিকিয়ে রাখবে। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা একজন পুলিশ সদস্য বলেন, 'নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে দিন। আশা করি, আপনারা হতাশ করবেন না।'
সময়ই বলে দেবে যে, নাজমুল হোসেন শান্তরা আজ বাংলাদেশ ও পাকিস্তান দুটি ভিন্ন দেশের ভিন্ন দুটি ভক্তকূলের চাওয়া পূরণ করবে নাকি আশা ভেঙে দেবে।
Comments