বাংলাদেশে ফেরার প্রতিশ্রুতি হেমিংয়ের, বিসিবিতে নয় দত্তক কন্যার কাছে

ছবি: স্টার

আট মাস আগে কিউরেটর টনি হেমিং বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন। যদিও বিসিবির সঙ্গে তার দুই বছরের চুক্তির এক বছর বাকি ছিল তখন। স্বল্প মেয়াদে দায়িত্ব পালন করলেও বেশ কিছু ঘটনায় সেসময় অসন্তুষ্টিও প্রকাশ করেন তিনি। এই বিখ্যাত কিউরেটরকে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) পরের সপ্তাহেই দুই বছরের চুক্তিতে নিয়োগ দেয়।

একজন শীর্ষস্থানীয় কিউরেটর হিসেবে হেমিংয়ের খ্যাতি এবং বাংলাদেশে তার পূর্ববর্তী মেয়াদ যেভাবে শেষ হয়েছে, তা বিবেচনা করলে অদূর ভবিষ্যতে এই অস্ট্রেলিয়ানের বিসিবিতে ফের যোগদানের সম্ভাবনা খুবই কম।

তারপরও রাওয়ালপিন্ডিতে কয়েকজন বাংলাদেশি সাংবাদিকের সাথে দীর্ঘ আলাপচারিতায় হেমিংকে জিজ্ঞেস করা হয়, শীঘ্রই বাংলাদেশে ফেরার কোনো পরিকল্পনা তিনি করছেন কিনা। তার জবাব সবাইকে বিস্মিত করে দেয়।

'আমাকে (বাংলাদেশে ফিরতে হবে)... আমি বাংলাদেশে একটি কন্যা দত্তক নিয়েছি। সে সিলেটে থাকে। সে ছোট নয়, তার বয়স ২০ বছর। সে একটি হোটেলে কাজ করে,' এই অপ্রত্যাশিত উত্তরটি দেন হেমিং।

এই অনন্য বন্ধন কীভাবে তৈরি হয়েছে তা বিস্তারিত জানান তিনি, 'আমি সিলেটে প্রায় তিন সপ্তাহ ছিলাম। তখন (বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার) একটি টেস্টের জন্য পিচ তৈরি করছিলাম। আমরা প্রতিদিন সকালের নাস্তায় কথা বলতাম। সে আমাকে বলেছিল যে, সে এতিম এবং বাবা-মাকে ছাড়াই বড় হয়েছে। সেই হোটলের ম্যানেজারও একজন এতিম। একটি এতিমখানা হোটেলে কাজ করার জন্য এতিমদের নিয়োগ করে থাকে, যেন তারা অগ্রসর হতে পারে এবং তাদের (স্বাবলম্বী হওয়ার) সুযোগ মেলে।'

'আমি মেলবোর্নে থাকা আমার মেয়েকে মিস করছিলাম তখন। কারণ সে বড় হয়ে গেছে এবং তার সঙ্গে আমার নিয়মিত যোগাযোগ হয় না... তাই আমার মনে হয়েছিল যে, আমি তাকে (বাংলাদেশি কন্যা) সাহায্য করতে চাই,' যোগ করেন হেমিং, যার নিজের চারটি সন্তান রয়েছে।

তিনি তার দত্তক নেওয়া বাংলাদেশি কন্যাকে যেভাবে সাহায্য করেছেন সেই বর্ণনাও দেন, 'আমি তাকে পাসপোর্ট পেতে এবং আর্থিকভাবে সাহায্য করেছি। আক্ষরিক অর্থে আমি সব মিলিয়ে এগুলোই করেছি। তাকে উৎসাহ দিয়েছি। প্রতিদিন শুভ সকাল জানানো, তার কোনোকিছু প্রয়োজন হলে আমাকে যেন জানায়, কোনো সমস্যায় পড়লে আমাকে যেন জানায়, এসবই।'

আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অভিভাবকত্ব অর্জন করবেন কিনা জানতে চাওয়া হলে হেমিং বলেন, 'আমার (কোনো প্রমাণপত্রের) দরকার নেই। তাছাড়া, যদি কারও বয়স ১৮ বছরের বেশি হয়, তাহলে আইনগত দিক থেকে কোনো সমস্যা নেই। বলতে পারেন, চাচা হওয়ার মতো ব্যাপার এটি। (মূল কথা হলো) কাউকে সাহায্য করা।'

'পাকিস্তানের ক্ষেত্রেও একই কথা (প্রযোজ্য)। এমন লোকদের সঙ্গে আপনার সাক্ষাৎ হবে, আপনি দেখতে পাবেন যে, তারা সত্যিকার অর্থেই (জীবনে) সংগ্রাম করছে। আমি এখন যা করছি, তাতে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে কর,' যোগ করেন তিনি।

*গোপনীয়তার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে দত্তক নেওয়া কন্যা ও হোটেলের নাম প্রকাশ করা হয়নি।

Comments

The Daily Star  | English

Sovereign guarantee rules to be revised

The government plans to amend the existing sovereign guarantee guidelines to streamline the process and mitigate fiscal risks if public entities fail to make repayments on time, according to a finance ministry report.

11h ago