সাকিব আছেন, সাকিব নেই

বাংলাদেশ অধিনায়কের কাছেও অনেক প্রশ্ন ছিল গণমাধ্যম কর্মীদের। তবে তাদের হতাশ হতে হয়েছে এদিনও।

ধর্মশালা থেকে

সাকিব আছেন, সাকিব নেই

বাংলাদেশ অধিনায়কের কাছেও অনেক প্রশ্ন ছিল গণমাধ্যম কর্মীদের। তবে তাদের হতাশ হতে হয়েছে এদিনও।
ছবি: একুশ তাপাদার

ফটোগ্রাফার স্ট্যান্ড থেকে পেছন ঘুরে বসেছিলেন সাকিব আল হাসান। বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান জালাল ইউনুস আর প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নুর সঙ্গে তার আড্ডা দেখে মনে হচ্ছিল— বেশ জম্পেশ। সেখানে মেহেদী হাসান মিরাজ যোগ দিতে কী একটা বিষয় নিয়ে তুমুল অট্টহাসিতে ফেটে পড়লেন সবাই। সাকিবের চেহারা সামনে থেকে দেখতে চাওয়া ধর্মশালার মাঠের এক সাপোর্ট স্টাফ তার নাম ধরে ডাক দিতেই বাংলাদেশ অধিনায়কের হাসিটা ধরা পড়ল ক্যামেরাতেও।

আগামীকাল মঙ্গলবার ধর্মশালায় বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। তার আগের দিন সোমবার দলের অনুশীলন ছিল ঐচ্ছিক। এর আগের দিনও ছিল ছুটি। ঐচ্ছিক অনুশীলনে মাঠে আসেননি লিটন দাস, মোস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদরা।

অধিনায়ক সাকিব মাঠে এলেও ব্যাটিং-বোলিং অনুশীলন করেননি। বাকিদের অনুশীলন চলাকালীন খোশগল্পে মাতোয়ারা দেখা গেছে সাকিবকে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে দলের প্রথম ম্যাচ জয়ের পর ফুরফুরে আবহের প্রমাণই হয়তোবা এটা।

ছবি: একুশ তাপাদার

তবে গণমাধ্যমে কথা বলার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ দলের অলিখিত কারফিউ হয়তো দিতে পারে ভিন্ন বার্তা। বিশ্বকাপের আগে মাঠের বাইরের অনেক ঘটনায় উত্তপ্ত ছিল দেশের ক্রিকেট। সেসব প্রসঙ্গ যাতে না আসে, সেই কারণেও হতেও পারে এই কৌশল।

আইসিসির বাধ্যতামূলক সংবাদ সম্মেলনে না আসলে জরিমানা দিতে হবে, তাই সেসবে প্রতিনিধি পাঠানো হচ্ছে। বাকিটা সময় মুখ বন্ধ। এবার বিশ্বকাপে বাংলাদেশ এইদিক থেকে সবচেয়ে অনন্য দল। স্বতন্ত্র হিসেবে একটা তকমা অবশ্যই তাদের এখনই প্রাপ্য।

দ্বিপাক্ষিক সিরিজ তো বটেই, বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চে সব সময়ই অধিনায়করা দলের ভাবনা জানাতে সংবাদ সম্মেলনে আসেন। অলিখিতভাবে এটাই রীতি। বাকি নয় দল এই রীতি অনুসরণ করেছে। প্রতিটি দলের প্রথম ম্যাচের আগে অধিনায়করা কথা বলেছেন, উত্তর দিয়েছেন বিবিধ প্রশ্নের। এমনকি বিশ্বকাপ শুরুর আগেও তাদের সরব উপস্থিতি পাওয়া গেছে।

বাংলাদেশ অধিনায়কের কাছেও অনেক প্রশ্ন ছিল গণমাধ্যম কর্মীদের। তবে তাদের হতাশ হতে হয়েছে এদিনও। আফগানদের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধি ছিলেন কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। এবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের আগে পাঠানো হয় স্পিন বোলিং কোচ রঙ্গনা হেরাথকে। অথচ ইংলিশদের হয়ে যেখানে কথা বলতে এসেছেন অধিনায়ক জস বাটলার।

হেরাথের পক্ষে দলের কৌশল, ভাবনা, পরিকল্পনা নিয়ে স্পষ্ট উত্তর দেওয়া পুরোপুরি সম্ভব ছিল না। স্বাভাবিকভাবেই তার উত্তরে সুনির্দিষ্ট কিছু পাওয়া যায়নি।

বাটলার সংবাদ সম্মেলনে কথা বলার পর আলাদা করে ব্রিটিশ সাংবাদিকদেরও সময় দিয়েছেন। এরপর আইসিসির আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন ইংল্যান্ডকে গত বিশ্বকাপ জেতানো অধিনায়ক ওয়েন মরগ্যান। গতকাল রোববারও জনি বেয়ারস্টোকে ব্রিটিশ গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ দেয় ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড।

সেই দিক থেকে, বাংলাদেশ নিজেদের রেখেছে বিচ্ছিন্ন করে। বিশ্বকাপ চলাকালীন বাইরের উত্তেজনার কোনো আঁচ যাতে না লাগে সেই চেষ্টা হয়তো চলছে প্রবলভাবে। এবার দেখার বিষয়, নিজেদের আগলে রাখার ফল কতটা পাওয়া যায়।

Comments