বঙ্গোপসাগরের তীরে বিশ্বকাপের ঢেউ

ধর্মশালায় বিশ্বকাপের প্রচারণার সবটা জুড়েই ছিলেন ক্রীড়া মন্ত্রী ও বিজেপি নেতা অনুরাগ ঠাকুর। চেন্নাইতে পুরো ব্যতিক্রম। ক্রিকেট বিশ্বকাপের প্রচারণায় ক্রিকেটারদের চেহারাই ব্যবহৃত হয়েছে। ধর্মশালা থেকে চেন্নাইর দূরত্ব আড়াই হাজার কিলোমিটারের বেশি। সংস্কৃতি, খাদ্যভাস, ভাষার দূরত্বও ঠিক এতটাই হবে

চেন্নাই থেকে

বঙ্গোপসাগরের তীরে বিশ্বকাপের ঢেউ

বিশ্বকাপ ২০২৩

চেন্নাই বিমানবন্দরে নামতেই অভ্যর্থনা জানানোর মতন ভেসে উঠল সাকিব আল হাসান ও কেইন উইলিয়ামসনের ছবি। একদিন পরে এখানে যে বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড ম্যাচ আছে সেই বার্তা স্পষ্ট। অবশ্য চেন্নাইর চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে যতগুলো ম্যাচ আছে সবগুলোরই প্রচারণা চলছে ডিজিটাল বিজ্ঞাপন বোর্ডে।

ধর্মশালায় বিশ্বকাপের প্রচারণার সবটা জুড়েই ছিলেন ক্রীড়া মন্ত্রী ও বিজেপি নেতা অনুরাগ ঠাকুর। চেন্নাইতে পুরো ব্যতিক্রম। ক্রিকেট বিশ্বকাপের প্রচারণায় ক্রিকেটারদের চেহারাই ব্যবহৃত হয়েছে।

ধর্মশালা থেকে চেন্নাইর দূরত্ব আড়াই হাজার কিলোমিটারের বেশি। সংস্কৃতি, খাদ্যভাস, ভাষার দূরত্বও ঠিক এতটাই হবে। উত্তর ভারতের সাত হাজার ফুট উঁচু পাহাড়ের প্রান্ত থেকে রাজধানী দিল্লি হয়ে আসতে হয়েছে দক্ষিণ ভারতের সমুদ্রের কিনারে। যে সমুদ্র আবার বঙ্গোপসাগর! হ্যাঁ আমাদের বঙ্গোপসাগরই।

বঙ্গোপসাগরের এক প্রান্তে অবস্থান চেন্নাই শহরের। যে শহরটিকে আমরা এক সময় মাদ্রাজ বলে জানতাম। চিকিৎসার প্রয়োজনে যে শহরের সঙ্গে বাঙালিদের সম্পর্কও গত কয়েক বছরে প্রবল ঘনিষ্ঠ হয়েছে। সেই ছাপ মিলল অবশ্য বার কয়েক। বাংলা খাবারের দোকান চোখে পড়ল, বাংলা সাইনবোর্ডও! এমনকি বাংলা চ্যানেলেও দেখা গেল টেলিভিশনে। চেন্নাই শহরে যে প্রচুর বাঙালির বাস সেটা টের পেতে খুব বেশি সময় লাগবে না।

ক্রিকেট সংস্কৃতির দিক থেকে চেন্নাই ভারতের মূল ভেন্যুগুলোর একটি। সেটা এই ভেন্যুর সার্বিক পরিস্থিতিও জানান দেয়। ধর্মশালা থেকে আগের রাতে ম্যাচ শেষ করে এগারো ঘণ্টা বাস ভ্রমণ শেষে দিল্লি পৌঁছেই ধরতে হয় চেন্নাইর ফ্লাইট। তিন ঘণ্টার যাত্রা শেষে চেন্নাই নেমে ছিমছাম শহরে ভ্রমণ ক্লান্তি ততটা কাবু করল না।

চেন্নাইর হোটেল থেকে হাঁটা দূরত্ব চিদাম্বরম মাঠ, পুরো এলাকা জুড়েই বিশ্বকাপের আমেজ তাই স্পষ্ট। সন্ধ্যায় সেখানে নিউজিল্যান্ড দলের অনুশীলনে গণমাধ্যম কর্মীদের সহায়তায় দারুণ ব্যবস্থাপনা বুঝিয়ে দিল এই অঞ্চলে ক্রিকেট সংস্কৃতির ভিত আসলে মজবুত।

আইপিএলের চেন্নাইর মাঠের সঙ্গে সমার্থক হয়ে আছেন মাহেন্দ্র সিং ধোনি। ধোনি আছেন পুরো চিদাম্বম মাঠ জুড়ে। এই শহরের না হয়েও যেন অনেক বেশি শহরের সন্তান হয়ে গেছেন তিনি।

চেন্নাই শহর ঘেঁষা বঙ্গোপসাগরের ঢেউয়ের মতনই চিদাম্বমর মাঠের বাইশ গজ বাংলাদেশ দলকে দিতে পারে পরিচিত আবহ। এখানকার উইকেট ঐতিহ্যগতভাবে স্পিনারদের হয়ে কথা বলে। অনেকের মতে ভারতের মিরপুর হচ্ছে চেন্নাই!

কন্ডিশন সহায়ক হলেও বর্তমান দলের কেউই এই মাঠে খেলেননি। বাংলাদেশ দলই এখানে ম্যাচ খেলেছে কেবল একটা। ২৫ বছর আগে সেই ১৯৯৮ সালে সেই ম্যাচের স্মৃতি অবশ্য ভুলে যাওয়ার মতন। সেবার কোকাকোলা কাপে কেনিয়ার কাছে হারতে হয়েছিল ২৮ রানে। এই ২৫ বছরে বদলে যাওয়া বাস্তবতায় বাংলাদেশের ক্রিকেট ভিত অনেক মজবুত। সেটা কতটা তা অবশ্য এবার বিশ্বকাপেই দেখাতে হবে সাকিব আল হাসানদের।

Comments

The Daily Star  | English
NCP will not accept delay in Teesta master plan

Won’t accept any implementation delay: Nahid

National Citizen Party Convener Nahid Islam yesterday said his party would not accept any delay or political maneuver over implementing the Teesta master plan.

2h ago