নিউজিল্যান্ডের জয়রথে আফগানদের বিশাল হার

ইংল্যান্ডের সঙ্গে জিতে পাওয়া আত্মবিশ্বাস নিয়ে মাঠে নেমেছিল আফগানিস্তান। কিন্তু সেই আত্মবিশ্বাসের ছিটেফোঁটাও মাঠে ফুটে উঠেনি। ছন্নছাড়া ফিল্ডিংয়ে ক্যাচ মিসের মহড়ার পর স্পিন-সহায়ক দ্বিতীয় ইনিংসে আফগানরা ব্যাট হাতে দাঁড়াতেই পারেনি। ৩৫তম ওভারে অলআউট হয়ে গেছে ১৩৯ রানেই। ১৪৯ রানের বিশাল জয়ে নিউজিল্যান্ড টানা চতুর্থ জয় নিশ্চিত করেছে চলতি বিশ্বকাপে।
২৮৯ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে আফগানিস্তানের ভরসার ওপেনিং জুটি ডানা মেলতেই পারেনি। ম্যাট হেনরি ও ট্রেন্ট বোল্টের আঁটসাঁট বোলিংয়ে প্রথম পাঁচ ওভারে আনে ১৯ রান। পরের ওভারেই রহমানুল্লাহ গুরবাজকে বোল্ড করে ১১ রানেই ফিরিয়ে দেন হেনরি। বোল্ট এসে আফগানিস্তানের ২৭ রানেই দ্বিতীয় উইকেট তুলে নেন। ইব্রাহিম জাদরান আউট হয়ে যান ১৪ রান করে।
২৮ রানে পাওয়ারপ্লে শেষ করা আফগানদের এরপর ভালোমতোন চেপে ধরে কিউই বোলাররা। ফার্গুসনের কুইক বাউন্সারে জীবন দিয়ে দেন এরপর হাসমতুল্লাহ শাহিদি। মিচেল স্যান্টনারের টুর্নামেন্ট সেরা হওয়ার দাবিদার ক্যাচে শহিদির বিদায় ঘটে ৮ রানে। রহমত শাহ একপাশে খোলসবন্দী হয়ে সময় পার করছিলেন, তরতর করে বেড়ে উঠছিলো আস্কিং রেট। ইনিংসের অর্ধেক শেষেও আফগানরা একশ রান আনতে ব্যর্থ হয়।
২৫ ওভারে ৯৪ রান আনা আফগানরা এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে। চেন্নাইয়ের চেনা রূপে আফগানিস্তানকে চেপে ধরে কিউই স্পিনাররা। বড় বড় টার্নে ব্যাটারদের অস্বস্তিতে রেখেছেন মিচেল স্যান্টনার ও রাচিন রবিন্দ্র।
আজমতুল্লাহ ওমরজাই ২৭ রানে বোল্টের বাউন্সারে কিপারে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান। কিছুক্ষণ পর রহমত শাহ তার ৬২ বলে ৩৬ রানের মন্থর ইনিংসের শেষ দেখেন রবিন্দ্রর বলে আউট হয়ে।
১০৭ রানে রহমতের ফেরার কিছুক্ষণ পর স্যান্টনারের দারুণ বলে বোল্ড হয়ে যান মোহাম্মদ নাবি। আফগানিস্তান তখন হারিয়ে ফেলে ১২৫ রানে ৬ উইকেট। আফগান ব্যাটিং অর্ডারের শেষ পাঁচজন এরপর দুই অঙ্ক ছুঁতে ব্যর্থ হয়েছেন। একপাশে ইকরাম আলী খিলকে ১৯ রানে অপরাজিত রেখে তাই আফগানিস্তান অলআউট হয়ে গেছে ১৩৯ রানেই।
এর আগে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নামে নিউজিল্যান্ড। নির্ধারিত ৫০ ওভার ব্যাট করে ৬ উইকেটে ২৮৮ রান করে দলটি। এদিন ব্যক্তিগত ১ রানেই প্রথম স্লিপে ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন উইল ইয়ং। সেই ক্যাচটা যদি ধরতে পারতেন রহমত শাহ তাহলে পরিস্থিতি বদলেও যেতে পারতো। কারণ সেই উইং শেষ পর্যন্ত খেলেছেন ৫৪ রানের ইনিংস। ডেভন কনওয়ের সঙ্গে ৩০ রানের জুটির পর রাচিন রবীন্দ্রর সঙ্গে গড়েন ৭৯ রানের জুটি। তাতে বড় পুঁজির দিকেই ছুটছিল দলটি।
এরপর অবশ্য দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় আফগানরা। ২১তম ওভারে রাচিনকে বোল্ড করে জুটি ভাঙেন আজমতুল্লাহ ওমরজাই। একই ওভারে ইয়ংকেও উইকেটরক্ষক ইকরাম আলী খিলের ক্যাচে পরিণত করেন তিনি। পরের ওভারে এসে রশিদ খান তুলে নেন ড্যারিল মিচেলকে। তাতে বেশ চাপে পড়ে যায় কিউইরা। থমকে যায় রানের গতি। প্রথম ২০ ওভারেই ১০৯ রান তুলে দলটি পরের ১০ ওভারে করে মাত্র ২৯ রান।
তবে চতুর্থ উইকেটে গ্লেন ফিলিপ্সকে নিয়ে দলের হাল ধরেন অধিনায়ক ল্যাথাম। স্কোরবোর্ডে ১৪৪ রান যোগ করেন এ দুই ব্যাটার। তাতেই বড় পুঁজি পেয়ে যায় দলটি। ডেথ ওভারে এসে এ দুই ব্যাটার নাভিন উল হকের শিকার হলেও শেষ দিকে মার্ক চাপম্যানের ক্যামিওতে শেষ পর্যন্ত ২৮৮ রানের পুঁজি আয় কিউইরা। শেষ ১০ ওভারে ১০৩ রান যোগ করে তারা।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭১ রানের ইনিংস খেলেন ফিলিপ্স। ৮০ বলে সমান ৪টি করে চার ও ছক্কায় এ রান করেন তিনি। ৭৪ বলে ৬৮ রান করেন ল্যাথাম। ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় সাজান নিজের ইনিংস। ৬৪ বলে ৪টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৫৪ রান করেন ইয়ং। রাচিনের ব্যাট থেকে আসে ৩২ রান। শেষ দিকে ১২ বলে ২৫ রানের ক্যামিও খেলেন চাপম্যান। শেষে কিউইদের ২৮৮ রানের পুঁজি এনে দিয়েছে ১৪৯ রানের বিশাল জয়।
Comments