আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০২৩

আফগানিস্তানের আগে বাংলাদেশ, বাংলাদেশের চেয়েও এগিয়ে কেনিয়া ও আয়ারল্যান্ড

বিশ্বকাপে টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষে তিনটি জয় পেতে কোন দলের বেশি ম্যাচ লেগেছে, বাংলাদেশ নাকি আফগানিস্তান?

আফগানিস্তানের আগে বাংলাদেশ, বাংলাদেশের চেয়েও এগিয়ে কেনিয়া ও আয়ারল্যান্ড

ছবি: রয়টার্স

গতকাল শ্রীলঙ্কাকে ৩ উইকেটে হারিয়ে দেওয়া আফগানদের সাফল্যের জোয়ার উঠেছে যেন। আচ্ছা বলুন তো, বিশ্বকাপে টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষে তিনটি জয় পেতে কোন দলের বেশি ম্যাচ লেগেছে, বাংলাদেশ নাকি আফগানিস্তান?

উত্তরটা বাংলাদেশই। তবে আরও দুটি দেশ তা করেছে বাংলাদেশেরও আগে। নাম দুটি শুনলে একটু চমকে যেতে পারেন। একটি হচ্ছে কেনিয়া।

বিশ্বকাপে টেস্টজাতির বিপক্ষে তিনটি জয় পেতে কেনিয়ার লেগেছে ১৪ ম্যাচে। সেই জয়টা এসেছে কার বিপক্ষে জানেন? বাংলাদেশ। ২০০৩ বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে যে ৩২ রানে হারিয়েই দিয়েছিল কেনিয়া। সে বিশ্বকাপেই এর আগে তারা শ্রীলঙ্কাকেও হারিয়ে দিয়েছিল ৫৩ রানে। আর টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষে তাদের বিশ্বকাপে প্রথম জয় আসে ১৯৯৬ বিশ্বকাপে। ক্রিকেটবিশ্বকে চমকে দিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তারা হারিয়ে দেয় ৭৩ রানে। সেটিও কিনা বিশ্বকাপে তাদের চতুর্থ ম্যাচেই!

১৪তম ম্যাচে গিয়েই যেখানে পূর্ণ-সদস্য দলের বিপক্ষে তৃতীয় জয় পেয়েছে কেনিয়া, বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সেটি করতে লেগেছে ১৭ ম্যাচ। ১৯৯৯ বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে ৬২ রানে হারানো সেই স্মরণীয় জয় প্রথম! বিশ্বকাপের পঞ্চম ম্যাচেই টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষে প্রথম জয় পেয়ে যায় বাংলাদেশ। এরপর দ্বিতীয়টি আসে ১২ ম্যাচ পর। ২০০৭ বিশ্বকাপে ভারতকে ৫ উইকেটে হারিয়ে দেওয়ার স্মৃতি কে ভুলবে! ওই বিশ্বকাপেই বাংলাদেশ ৬৭ রানে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে দেয়, ওয়ানডে বিশ্বকাপে টেস্টজাতির বিপক্ষে তৃতীয় জয় পায়।

আচ্ছা এবার প্রথম প্রশ্নটাতে একটু বদল আনা যাক আফগানিস্তানের জায়গায় আয়ারল্যান্ড শুধু। উত্তর একই। আইরিশদের যে বিশ্বকাপে টেস্টজাতির বিপক্ষে তিন জয় পেতে লেগেছে মাত্র ১১ ম্যাচ। কেনিয়ার মতো তাদের সে তিনেও আছে বাংলাদেশ। বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচেই পাকিস্তানকে ৩ উইকেটে হারিয়ে আয়ারল্যান্ডের প্রথম জয়। দ্বিতীয়টি আসে ২০০৭ সালেরই বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে ৭৪ রানে হারিয়ে। আর তৃতীয়টি সেই ঐতিহাসিক ম্যাচ। বেঙ্গালুরুতে ২০১১ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে ডুবিয়ে ৩ উইকেটে তাদের জয়।

আয়ারল্যান্ড এখনও বিশ্বক্রিকেটে প্রসিদ্ধ নাম হতে পারেনি। ক্রিকেটে কেনিয়া তো কালের গর্ভে হারিয়েই গেছে। বাংলাদেশ সময়ের সাথে ক্রিকেটকাননে আরও সুবাস ছড়িয়েছে। তবে সেটা যতটা না পারফর্ম্যান্সে, ততটা জনপ্রিয়তায়। বাংলাদেশের অনেক পরে ক্রিকেটের যাত্রায় পা রাখে আফগানিস্তান, সেই আফগানরা এখন বাংলাদেশকে টপকায় হরহামেশাই! চলতি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ যেখানে একটি জয় নিয়ে বসে আছে দুর্দশার ঘরে বন্দী হয়ে, আফগানরা নতুন করে লিখছে ইতিহাস।

আফগানিস্তানের কম সময়ে উন্নতির গ্রাফ উপরে তুলে নিয়ে যাওয়ার কথা নতুন করে বলতে হয় না। চলতি বিশ্বকাপের আগে টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষে কোন জয়ই ছিল না আফগানদের। এবার তারা পেয়ে গেছে তিন তিনটি জয়। কিন্তু হিসাবে গেলে বিশ্বকাপে টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষে প্রথম তিন জয় পেতে আফগানিস্তানের যত ম্যাচ লেগেছে, বাংলাদেশের চেয়ে তা বেশি!

বাংলাদেশের ১৭ ম্যাচের বিপরীতে ২১ ম্যাচে গিয়ে আফগানরা তিনবার টেস্টজাতিকে ডিঙিয়ে গেছে। প্রথম জয়টা পেতেই তো লেগে গিয়েছিল ১৮ ম্যাচ। চলতি বিশ্বকাপেই ইংল্যান্ডকে ৬৯ রানে হারিয়ে শুরু। ২০তম ম্যাচে এসে পাকিস্তানকে তারা হারাল ৮ উইকেটে। আর শ্রীলঙ্কাকে ৭ উইকেটে হারিয়ে দিয়ে তিনের ঘর ছুঁয়ে ফেললো।

এক বিশ্বকাপেই এসব জয় আফগানিস্তানের উন্নতিরই আরেক প্রমাণ। শুরুতে বাংলাদেশ বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের চেয়ে দ্রুতই সাফল্য পেয়েছে। কিন্তু সেই সাফল্যটা যে সেখানেই আটকে গেছে, ডানা মেলে উড়াল দিতে পারল না। সে কারণে আফগানদের চেয়ে ভালো শুরু পেয়ে গেলেও খুশির যে সুযোগ নেই, তা তো জানেনই। উল্টো আফগানরদেরই টপকে যাওয়ার ভালো সম্ভাবনা!

জনপ্রিয়তা ও ক্রিকেটপিপাসুর জয়জয়কারে কেনিয়ার মতো বাংলাদেশে ক্রিকেট হারিয়ে যাবে না। তবে কেউ কেউ সে আশঙ্কা করে বসলে, তাতে খুব একটা দোষের কিছু নেই!

Comments

The Daily Star  | English

UN says cross-border aid to Myanmar requires approval from both govts

The clarification followed Foreign Adviser Touhid Hossain's statement on Sunday that Bangladesh had agreed in principle to a UN proposal for a humanitarian corridor to Myanmar's Rakhine State

1h ago