আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০২৩

রাচিনের রেকর্ডের সমাহারের দিনে পাকিস্তানের অম্ল-মধুর অভিজ্ঞতা

রাচিন রবীন্দ্রর নামে যে শচীন টেন্ডুলকারের উপস্থিতি, সেই শচীনেরই একের পর এক রেকর্ড তাড়া করে যাচ্ছেন নিউজিল্যান্ডের ব্যাটার।

রাচিনের রেকর্ডের সমাহারের দিনে পাকিস্তানের অম্ল-মধুর অভিজ্ঞতা

রাচিন রবীন্দ্রর নামে যে শচীন টেন্ডুলকারের উপস্থিতি, সেই শচীনেরই একের পর এক রেকর্ড তাড়া করে যাচ্ছেন নিউজিল্যান্ডের ব্যাটার।
রাচিন রবীন্দ্র
ছবি: এএফপি

রাচিন রবীন্দ্রর নামে যে শচীন টেন্ডুলকারের উপস্থিতি, সেই শচীনেরই একের পর এক রেকর্ড তাড়া করে যাচ্ছেন নিউজিল্যান্ডের ব্যাটার। শনিবার বেঙ্গালুরুতে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে তো কয়েকটি রেকর্ডই নিজের করে নিয়েছেন তিনি। তার রেকর্ডের সমাহারের দিনে পাকিস্তানের ওপেনার ফখর জামানও তাণ্ডব চালিয়ে একাধিক রেকর্ডের মালিক হয়েছেন।

বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ডিএলএস পদ্ধতিতে ২১ রানে জিতে মধুর সমাপ্তিই টেনেছে পাকিস্তান। তবে ৪০২ রান তোলার পথে নিউজিল্যান্ড যখন ব্যাট করছিল, তখন পাক বোলাররা বেধড়ক মার খাওয়ায় জমা হয়েছিল রাজ্যের অস্বস্তি।

পরিসংখ্যানের আলোকে নিউজিল্যান্ড-পাকিস্তান ম্যাচের উল্লেখযোগ্য কিছু রেকর্ড-কীর্তি-ঘটনা তুলে ধরা হলো দ্য ডেইলি স্টারের পাঠকদের জন্য।

৫- চলতি বিশ্বকাপে স্বপ্নের মতো সময় পার করা রাচিন খেলেন পঞ্চম পঞ্চাশোর্ধ্ব রানের ইনিংস। বয়স পঁচিশের ঘরে প্রবেশের আগেই এক আসরে এর চেয়ে বেশি পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংস খেলতে পারেননি আর কেউ। সমান পাঁচটি খেলেছিলেন ওই শচীনই। ১৯৯৬ বিশ্বকাপে সাত ম্যাচে কিংবদন্তি শচীন রান করেছিলেন ৫২৩। আট ম্যাচে ২০২৩ বিশ্বকাপে রাচিনেরও রান ৫২৩। এক আসরে পঁচিশের কম বয়সীদের মধ্যে সর্বোচ্চ রান করার রেকর্ডের মালিক এখন যৌথভাবে শচীন ও রাচিন। তবে শচীনকে ছাড়িয়ে যাওয়ার জন্য অন্তত একটি ম্যাচ পাবেন রাচিন।

৩- পঁচিশে পা রাখার আগেই বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির রেকর্ডও গড়েন রাচিনের। এর আগে সর্বোচ্চ দুটি সেঞ্চুরি ছিল সেই শচীনেরই। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৯৯৬ বিশ্বকাপে ১৩৭ রানের ইনিংস খেলেছিলেন শচীন, এরপর কেনিয়ার বিপক্ষে অপরাজিত ১২৭ রানের ইনিংসও ছিল লিটল মাস্টারের। শচীন ও রাচিন বাদে এই বয়সীদের মধ্যে আর কারও একটির বেশি সেঞ্চুরি নেই। পাকিস্তানের বিপক্ষে এদিন ১০৮ রান করার আগে বাঁহাতি এই ব্যাটার অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১১৬ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। আর তার স্বপ্নীল বিশ্বকাপের শুরুটা হয়েছিল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১২৩ রানের মাধ্যমে।

১৪- বিশ্বকাপে ইতোমধ্যে ১৪টি ছক্কা হাঁকিয়ে ফেলেছেন রাচিন। পঁচিশ বছর বয়সে প্রবেশের আগেই বিশ্বকাপে এত বেশি ছক্কা মারতে পারেননি কেউই। দ্বিতীয় স্থানে থাকা কাইরন পোলার্ড মেরেছিলেন ১১ ছয়।

২- বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের সর্বোচ্চ দুটি জুটিতেই জড়িয়ে আছেন রাচিন। ডেভন কনওয়ের সঙ্গে ২৭৩ রানের সর্বোচ্চ জুটি গড়েছিলেন এবারের বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। এদিন পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে কেইন উইলিয়ামসন ও রাচিন মিলে আনেন ১৮০ রান। 

১- বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের হয়ে এক আসরে সবচেয়ে বেশি (তিনটি) সেঞ্চুরি করার কীর্তির মালিকও এখন রাচিন। বিশ্বকাপে অভিষেক আসরে তিন সেঞ্চুরি হাঁকানো একমাত্র ব্যাটারও বনে গেছেন তিনি।

৭- নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিং অর্ডারের প্রথম সাত ব্যাটারই ২৫ রানের বেশি করেন। বিশ্বকাপে কোনো দলের প্রথম সাত ব্যাটারেরই ২৫ বা তার বেশি রান করার ঘটনা এটিই একমাত্র। সব ওয়ানডে মিলিয়ে আর মাত্র একবার হয়েছে সেটা। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম সাত ব্যাটার তা করেছিলেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে চলতি বছরেই।

৪৬- নিউজিল্যান্ড ৪০১ রানের স্কোর গড়ার পথে চার মারে ৪৬টি। বিশ্বকাপে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ চারের রেকর্ড এটি। এই রেকর্ডটা চলতি বিশ্বকাপেই নিজেদের করে নিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে ধরে রাখতে পারেনি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দিল্লিতে প্রোটিয়ারা মেরেছিল ৪৫টি চার।

৩- পাকিস্তানের তিন বোলার ৮০ রানের বেশি দেন এদিনের ম্যাচে। ওয়ানডে ক্রিকেটে পাকিস্তান এমন দিনের মুখোমুখি প্রথমবারের মতো বেঙ্গালুরুতেই হলো। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শাহিন আফ্রিদি ৯০, হারিস রউফ ৮৫ ও হাসান আলী দেন ৮২ রান। বিশ্বমঞ্চে যেসব দলের অন্তত দুই বোলার ৮০ রানের বেশি খরচ করেছেন, তাদের জয়ের নজির ছিল না এতদিন। কিন্তু এবার তিন বোলার আশির উপরে রান দেওয়ার পরও পাকিস্তান জিতে।

১১- ওয়ানডেতে পাকিস্তানের হয়ে এক ইনিংসে সবচেয়ে বেশি ছয় মারার রেকর্ড গড়েন ফখর। রেকর্ডটা আগেও ফখরেরই ছিল। ২০২১ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১০ ছক্কা মেরেছিলেন। এদিন কিউইদের বিপক্ষে নিজেকেই ছাড়িয়ে যান তিনি।

৬৩- বিশ্বকাপে পাকিস্তানের হয়ে দ্রুততম সেঞ্চুরি করতে ৬৩ বল লাগে ফখরের। তিনি ছাড়িয়ে যান ১৬ বছর ধরে টিকে থাকা ইমরান নাজিরের রেকর্ড। ২০০৭ সালে ৯৫ বলে সেঞ্চুরি করেছিলেন নাজির।

Comments