আমিরাতকে গুঁড়িয়ে আশা বাঁচিয়ে রাখল শ্রীলঙ্কা
বাঁচা-মরার লড়াইয়ে শুধু জিতলেই হতো না, বড় ব্যবধানে জিতে বাড়াতে হত রানরেট। সেই পথে শুরুতে আগ্রাসী ব্যাট করলেও কার্তিক মেইয়াপ্পনের হ্যাটট্রিকে খেই হারিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। পরে পাথুম নিশানকার ফিফটিতে দেড়শো ছাড়ানো পুঁজির পর জ্বলে উঠেন তাদের বোলাররা। দুশমন্ত চামিরা, ভানিন্দু হাসারাঙ্গার কোন জবাব খুঁজে পায়নি সংযুক্ত আমিরাত।
মঙ্গলবার জিলঙ্গে প্রথম রাউন্ডের 'এ' গ্রুপের লড়াইয়ে শ্রীলঙ্কা জিতেছে ৭৯ রানের বড় ব্যবধানে। আগে ব্যাট করে ১৫২ রান আনার পর দাসুন শানাকার দল প্রতিপক্ষকে গুঁড়িয়ে দেয় কেবল ৭৩ রানে। এই জয়ে রান রেটে নেদারল্যান্ড থেকে ভালো অবস্থায় চলে গেছে লঙ্কানরা।
দলের বড় জয়ে ব্যাটিংয়ে ৬০ বলে ৭৪ রান করে অবদান নিশানকার। ৪ ওভার বল করে মাত্র ৮ রানে ৩ উইকেট নিয়ে সেরা হাসারাঙ্গা। পেসের ঝাঁজে শুরুতে ৩ উইকেট নেওয়া চামিরা দেন কেবল ১৫ রান। রহস্য স্পিনার থিকসেনাও ১৫ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট।
১৫২ রানের নিচে আমিরাতকে আটকানোর মিশনে নেমে তৃতীয় ওভারেই জোড়া সাফল্য পায় শ্রীলঙ্কা। চামিরার পেসে মোহাম্মদ ওয়াসিম ও আরিয়ান লারকা খোয়ান স্টাম্প।
পঞ্চম ওভারে সিপি রিজওয়ানকেও তুলে নেন চামিরা। চিরাগ সুরিকে শিকার ধরেন প্রমোদ মাধুশান। পাওয়ার প্লের মধ্যে ২১ রানে ৪ ব্যাটার হারিয়ে ফেলে আমিরাত। ম্যাচ থেকে তখনই ছিটকে যায় তারা। বাকি পথে লঙ্কানদের জয়ের ব্যবধান কত হয় তা ছিল দেখার বিষয়।
পাওয়ার প্লের পরও তাদের রানের চাকায় গতি আসেনি। নবম ওভারে বাসিল হামিদকে আউট করেন শানাকা। পরের ওভারে ভ্রিতা অরভিন্দকে তুলে নেন হাসারাঙ্গা। দুই ওভার পর কাসিফ দাওদও তার শিকার।
হ্যাটট্রিক ম্যান মেইয়াপ্পনকে স্টাম্পিং করে ৮ম উইকেট ফেলেন মহেশ থিকসেনা, আয়ান খানকে ছেঁটে পরের ওভারে নবম উইকেট তুলেন হাসারাঙ্গা। থিকসেনে পরে মুড়ে দেন ইনিংস।
পরের পর্বের আশা জিইয়ে রাখতে রানরেটও চড়া করার মিশন ছিল শ্রীলঙ্কার। টস হেরে ব্যাটিং পাওয়া তাই একদিক থেকে তাদের জন্য হয় শাপেবর। সেই সুবিধা কাজে লাগিয়ে আসে উড়ন্ত শুরুও।
কুশল মেন্ডিস ও নিশানকা মিলে পাওয়ার প্লেতেই তুলেন ঝড়। ওভার প্রতি দশের উপর রান আনতে থাকেন তারা। পঞ্চম ওভারে ১৩ বলে ১৮ করা মেন্ডিস ফেরেন আরিয়ান লারকার বলে।
দ্বিতীয় উইকেটে এরপর জমে যায় ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ও নিশানকার জুটি। ধনঞ্জয়া নেমেই রান আনতে থাকেন তরতরিয়ে। ১০ ওভার শেষে স্কোর দাঁড়ায় ১ উইকেটে ৮৪। তখন এমনকি দুশো স্পর্শ করাও মনে হচ্ছিল খুব সম্ভব। কে জানত পরের কয়েক ওভারে দেখা দেবে নাটকীয়তা!
৫০ রানের জুটির পর দ্বাদশ ওভারে নিশানকার সঙ্গে ভুল বুঝাবুঝিতে রানআউটে কাটা পড়েন ধনঞ্জয়া। এরপরই বদলে থাকে ইনিংসের সুর।
চারে নেমে ভানুকা রাজাপাকসে প্রথম কয়েকবল দেখছিলেন। যখনই আগ্রাসী হতে যাবেন তখনই বিদায় তার। ১৫তম ওভারে গিয়ে তাকে ক্যাচ বানিয়ে হ্যাটট্রিকের সূত্রপাত মেইয়াপ্পনের। পরের দুই বলে একাদশে আসা চারিথা আসালাঙ্কা ও অধিনায়ক দাসুন শানাকাকে গুগলিতে ধোঁকা দিয়ে করে ফেলেন হ্যাটট্রিক।
পরের ওভারে হাসারাঙ্গাও ফিরে গেলে জোর ধাক্কা খায় লঙ্কানরা। শেষ দিকে চামিকা করুনারত্নেও তুলতে পারেননি কার্যকর ঝড়। এক প্রান্ত আগলে পড়ে থাকা নিশানকা ইনিংসের শেষ দিকে আউট হওয়ার আগে করেন ৬০ বলে ৭৪ রান। কোনমতে দেড়শো ছাড়ানো পুঁজি হওয়ায় খুব একটা স্বস্তিতে ছিল না এশিয়ান চ্যাম্পিয়নরা। পরে যদিও দারুণ বোলিংয়ে বড় জয়ে হাসি ফিরেছে শানাকাদের।
গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে নেদারল্যান্ডকে হারালেই প্রত্যাশিতভাবে সুপার টুয়েলভে যাবে ২০১৪ সালের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
Comments