ইফতিখার-শানের ফিফটিতে ভারতকে চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য দিল পাকিস্তান

ছবি: এএফপি

ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ মানেই যে 'বিশেষ কিছু' তার আভাস আরও একবার দেখল ক্রিকেট বিশ্ব। ক্ষণে ক্ষণে পাল্টাল দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর লড়াইয়ের রঙ। শুরুতে বাবর আজমদের চেপে ধরলেও তাদেরকে অল্পতে আটকাতে পারেনি রোহিত শর্মাবাহিনী। শান মাসুদ ও ইফতিখার আহমেদের হাফসেঞ্চুরিতে লড়াকু পুঁজি পেল পাকিস্তান।

রোববার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে দুই নম্বর গ্রুপের ম্যাচে ভারতকে চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য দিয়েছে পাকিস্তান। মেলবোর্নে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৫৯ রান তুলেছে তারা।

দুই তারকা ওপেনার অধিনায়ক বাবর ও উইকেটরক্ষক-ব্যাটার মোহাম্মদ রিজওয়ান দ্রুত ফিরলে বিপাকে পড়ে পাকিস্তান। এরপর তৃতীয় উইকেটে ৫০ বলে ৭৬ রানের ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়েন শান ও ইফতিখার। দুজনেই পান ফিফটির স্বাদ। ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ৩৪ বলে ৫১ রানের ইনিংস খেলে পাল্টা জবাব দেন ইফতিখার। তিনে নামা শান ৪২ বলে ৫২ রানে অপরাজিত থেকে দলের সংগ্রহ দেড়শ পার করান।

দ্বিতীয় ওভারেই রোহিতের ফিল্ডিং বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্তের কার্যকারিতা দেখান আর্শদীপ সিং। এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন বাবরকে। তার ইনসুইং ডেলিভারি বুঝে উঠতে পারেননি পাকিস্তান অধিনায়ক।

উইকেটে থাকার শেষ চেষ্টায় রিভিউ নেন তিনি। তবে সেই চেষ্টা কাজে আসেনি। দেখা যায়, বল সোজা আঘাত হেনেছে স্টাম্পে। গোন্ডেন ডাক মেরে প্যাভিলিয়নে ফেরেন বাবর।

অপর প্রান্তে রিজওয়ানও ছিলেন খোলসে বন্দী। চতুর্থ ওভারের শেষ বলে তিনি ফিরে যান আর্শদীপের দ্বিতীয় শিকার হয়ে। ২২ বছর বয়সী তরুণ পেসারের বাউন্সারে নাকাল হন তিনি। টপ এজ হয়ে বল ডানা মেলে আকাশে। তা তালুবন্দি করেন ভুবনেশ্বর কুমার।

মাত্র ১৫ রানে ২ উইকেট হারিয়ে মহাবিপর্যয়ে পড়ে পাকিস্তান। এরপরই খেলার দৃশ্যপট পাল্টে দিতে শুরু করেন ইফতিখার ও শান। নিয়মিত বাউন্ডারি মেরে ও দৌড়ে দুই-তিন রান নিয়ে রানরেটের উন্নতি ঘটান তারা। 

রবিচন্দ্রন অশ্বিনের ১১তম ওভারে হাত খোলেন ইফতিখার। ডাউন দ্য উইকেটে এসে লং অন দিয়ে হাঁকান বিশাল ছক্কা। পরের ওভারে আরও রুদ্রমূর্তি ধারণ করেন ৩২ বছর বয়সী এই অভিজ্ঞ ব্যাটার। অক্ষর প্যাটেলকে সেই ওভারে একে একে মারেন তিনটি ছক্কা।

ওই ওভারের শেষ বলে ব্যক্তিগত অর্ধশত রানও পূর্ণ করে ফেলেন ইফতিখার। সেজন্য তার লাগে ৩২ বল। পরের ওভারেই ব্রেক থ্রু আনে ভারত। পেসার মোহাম্মদ শামি এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন ইফতিখারকে। তার ব্যাট থেকে আসে ২ চার ও ৪ ছক্কা। এরপর ঘটে ছন্দপতন।

১৪তম ওভারে জোড়া আঘাতের ধাক্কা সইতে হয় পাকিস্তানকে। একই ওভারে শাদাব খান ও হায়দার আলিকে ফেরান হার্দিক পান্ডিয়া। ফলে ৯৮ রানে ৫ উইকেট উইকেট হারিয়ে ফেলে পাকিস্তান।

ভারত আরও চেপে ধরতে পারত প্রতিপক্ষকে। কিন্তু শানের ফিরতি ক্যাচ হাতে জমাতে পারেননি অফ স্পিনার অশ্বিন। তখন শান ব্যাট করছিলেন ৩১ রানে। তবে উইকেট পড়ার ধারা চলতে থাকে। মোহাম্মদ নওয়াজকে বিপজ্জনক হতে দেননি হার্দিক। আসিফ আলিকে একই কায়দায় বাউন্সারে পরাস্ত করে দ্রুত আউট করেন আর্শদীপ।

এদিকে শান মাসুদ বারবার আগ্রাসী হতে চেষ্টাব করেও সফল হচ্ছিলেন না। উইকেটে ছিলেন শাহীন আফ্রিদি, ফলে দ্রুত রান তোলার দায়িত্বটা ছিল তার কাঁধেই। শেষ পর্যন্ত শামির ১৮তম ওভারে দুটি চার মেরে পাল্টা আক্রমণের ইঙ্গিত দেন।

শান রানের গতিতে দম দেন ১৮তম ওভারে। শাহিন শাহ আফ্রিদিও পরের ওভারে চার-ছক্কা মারেন আর্শদীপকে। অষ্টম উইকেটে ১৬ বলে ৩১ রান যোগ করেন দুজন। ফলে লড়াকু পুঁজি পাওয়া নিশ্চিত হয় পাকিস্তানের। শাহিন ৮ বলে ১৬ রানের ক্যামিও খেলে শিকার হন ভুবনেশ্বরের। হার্দিক ৩০ রানে ও আর্শদীপ ৩২ রানে ৩ উইকেট করে নেন।

Comments

The Daily Star  | English

Election in first half of April 2026

In his address to the nation, CA says EC will later provide detailed roadmap

1h ago