অবিশ্বাস্য কোহলি, শেষ ওভারের নাটকীয়তায় পাকিস্তানকে হারাল ভারত

শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ১৬ রানের। প্রথম বলে হার্দিক পান্ডিয়াকে তুলে নিয়ে ম্যাচ জমিয়ে দিয়েছিলেন মোহাম্মদ নাওয়াজ। পরের দুই বলে দিলেন তিন। কিন্তু চার নম্বরটি নো-বল করেই হিসেব বদলে দেন তিনি। সে বলে আবার ছক্কা হাঁকান বিরাট কোহলি। এরপর দেন দুটি ওয়াইডও। ফলে দিনেশ কার্তিককে পঞ্চম বলে রানআউট করেও কাজ হয়নি পাকিস্তানের। রোমাঞ্চকর একটি ম্যাচ জিতে নেয় ভারত।

শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ১৬ রানের। প্রথম বলে হার্দিক পান্ডিয়াকে তুলে নিয়ে ম্যাচ জমিয়ে দিয়েছিলেন মোহাম্মদ নাওয়াজ। পরের দুই বলে দিলেন তিন। কিন্তু চার নম্বরটি নো-বল করেই হিসেব বদলে দেন তিনি। সে বলে আবার ছক্কা হাঁকান বিরাট কোহলি। এরপর দেন দুটি ওয়াইডও। ফলে দিনেশ কার্তিককে পঞ্চম বলে রানআউট করেও কাজ হয়নি পাকিস্তানের। রোমাঞ্চকর একটি ম্যাচ জিতে নেয় ভারত।

রোববার মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভের দুই নম্বর গ্রুপের ম্যাচে পাকিস্তানকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে ভারত। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৫৯ রান করে পাকিস্তান। লক্ষ্যে পৌঁছাতে শেষ বল পর্যন্ত খেলতে হয় ভারতকে।

রোমাঞ্চকর এ ম্যাচ জয়ের মূল নায়ক ছিলেন সাবেক অধিনায়ক কোহলি। ৩১ রানেই চার উইকেট হারানো দলটির ইনিংস হার্দিক পান্ডিয়াকে নিয়ে মেরামত করেন। একই সঙ্গে রানের গতিও রাখেন সচল। শেষ দিকে যখন প্রয়োজনীয় রান রেট বেড়ে যায় ষোলোতে, তখন রীতিমতো রুদ্ররূপ ধারণ করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ম্যাচ জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন কোহলি।

এদিন শেষ তিন ওভারে ভারতের প্রয়োজন ছিল ৪৮ রান। শাহিন শাহ আফ্রিদির করা ১৭তম ওভারের প্রথম বলে বাউন্ডারি মেরে শুরু করেন কোহলি। সে ওভারে আরও দুটি বাউন্ডারি মেরে মোট ১৭ রান তুলে দলকে লড়াইয়ে রাখেন এ ব্যাটার। এরপর বোলিংয়ে আসেন হারিস রউফ। যার দুর্দান্ত বোলিংয়েই ম্যাচে দারুণভাবে টিকে ছিল পাকিস্তান। শুরুটাও করেন তেমনই। প্রথম চার বলে দেন মাত্র ৩ রান। তখন ম্যাচ হেলে যায় পাকিস্তানের দিকেই। কিন্তু পরের দুই বলে দুটি দুর্দান্ত শটে বল মাঠের বাইরে আছড়ে ফেলেন কোহলি। তাতে ফের ম্যাচে ফেরে ভারত।

এরপর হয় নাটকের চূড়ান্ত পরিণতি। ক্ষণে ক্ষণে বদলায় ম্যাচের চিত্র। যেখানে দুটি উইকেট হারিয়েও প্রয়োজনীয় ১৬ রান তুলে নেয় ভারত। মূলত একটি নো-বলের খেসারৎটা দিতে হয় পাকিস্তানকে। তারপরও ম্যাচ ঝুলেছিল পেন্ডুলামের মতো। কার্তিক রানআউট হওয়ার পর শেষ বলে প্রয়োজন ছিল দুই রান। একটি ওয়াইড দিয়েই ভারতের চাপ কমিয়ে দেন নাওয়াজ। এরপর রবিচন্দ্রন অশ্বিনের আলতো চিপ। উল্লাসে মাতে ভারতীয় শিবির।

অথচ লক্ষ্য তাড়ায় নেমে শুরুতে বড় চাপে পড়েছিল ভারতীয়রা। দলীয় ৩১ রানেই হারিয়ে ফেলে টপ অর্ডারের ৪টি উইকেট। লোকেশ রাহুলকে বোল্ড করে ওপেনিং জুটি ভাঙেন নাসিম শাহ। এরপর মঞ্চে আসেন হারিস রউফ। আরেক ওপেনার অধিনায়ক রোহিত শর্মাকে ফেরান তিনি। তবে স্লিপে ঝাঁপিয়ে পড়ে দারুণ এক ক্যাচ ধরেন ইফতেখার আহমেদ। চার নম্বরে নেমে দুই বাউন্ডারি মেরে ভালো শুরু করা সুরিয়াকুমার যাদবকেও ফেরান রউফ।

দুর্ভাগ্যটা আরও বড় হয় আকসার প্যাটেলের রানআউটে। মিডউইকেটে ঠেলে রান নিতে চেয়েছিলেন তিনি। তবে কোহলি ফিরিয়ে দেন তাকে। ঝাঁপিয়ে পড়ে চেষ্টা করলেও ক্রিজে ফিরতে পারেননি আকসার। চার উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া দলের হাল হার্দিক পান্ডিয়াকে নিয়ে ধরেন কোহলি। শুরুতে কিছুটা ধীর গতিতে খেলে চাপ কাটিয়ে ওঠেন তারা। মোহাম্মদ নাওয়াজের করা ১২তম ওভারে চড়াও হন এ দুই ব্যাটার। সে ওভারে আসে ২০ রান। এরপর নিয়মিত বাউন্ডারি মেরে রানের চাকা সচল রাখেন তারা। নাওয়াজের বলে জুটি ভাঙার আগে স্কোরবোর্ডে ১১৩ রান যোগ করেন এ দুই ব্যাটার। ততক্ষণে জয়ের ভিত মিলে যায় তাদের।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৮২ রানের ইনিংস খেলেন কোহলি। ৫৩ বলে ৬টী চার ও ৪টি ছক্কায় নিজের ইনিংস সাজান তিনি। ৩৭ বলে ৪০ রানের ইনিংস খেলেন পান্ডিয়া। মারেন ১টি চার ও ২টি ছক্কা। এ দুই ব্যাটার ছাড়া দুই অঙ্ক স্পর্শ করতে পেরেছেন কেবল সুরিয়াকুমার (১৫)। পাকিস্তানের পক্ষে ২টি করে উইকেট নেন হারিস ও নাওয়াজ।

এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা পাকিস্তানের সূচনাটাও ছিল বিবর্ণ। দলীয় ১৫ রানেই দুই ইনফর্ম ওপেনার মোহাম্মদ রিজওয়ান ও অধিনায়ক বাবর আজমকে হারায় দলটি। দুই ওপেনারকেই ফেরান আর্শদিপ সিং। বাবরকে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলার পর রিজওয়ানকে ভুবনেশ্বর কুমারের ক্যাচে পরিণত করেন। এরপর ইফতেখার আহমেদকে নিয়ে দলের হাল ধরেন শান মাসুদ। রানের গতি বাড়াতে না পারলেও শুরুর ধাক্কাটা সামলে নেন এ দুই ব্যাটার। তবে অক্ষর প্যাটেলের করা ১২তম ওভারে চড়াও হন ইফতেখার। সে ওভারে তিন ছক্কায় তুলে নেন ২১ রান। তাতে গতি বাড়ে পাকিস্তানের ইনিংসে।

তবে পরের ওভারে বল হাতে ফিরে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা এ জুটি ভাঙেন মোহাম্মদ শামি। ইফতেখারকে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলেন তিনি। ৭৬ রানের এ জুটি ভাঙার পর পান্ডিয়ার তোপে পড়ে স্কোরবোর্ডে ২৯ রান যোগ হতেই ৫টি উইকেট হারিয়ে লেজ বেরিয়ে যায় পাকিস্তানের। অষ্টম উইকেটে মাসুদকে কিছুটা সঙ্গ দিতে পারেন শাহিন শাহ। ৩১ রানের জুটি গড়েন তারা। তাতেই লড়াইয়ের পুঁজি পায় পাকিস্তান।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫২ রানের ইনিংস খেলে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন মাসুদ। ৪২ বলে ৫টি চারের সাহায্যে এ রান করেন তিনি। ৩৪ বলে ২টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৫১ রানের ইনিংস খেলেন ইফতেখার। ৮ বলে ১টি করে চার ও ছক্কায় ১৬ রানের ক্যামিও খেলেন শাহিন শাহ। ভারতের পক্ষে ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন আর্শদিপ সিং ও পান্ডিয়া।

Comments

The Daily Star  | English

Quake triggers panic, no damage reported

The magnitude 5.6 quake that struck the country in the morning triggered widespread panic, but there was no report of major casualties or damages

2h ago