কোহলি-সুরিয়াকুমার-রোহিতের ব্যাটে টানা দ্বিতীয় জয় ভারতের
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বৃহস্পতিবারের প্রথম দুই ম্যাচেই কাকতালীয়ভাবে একই ঘটনা দেখল ক্রিকেট বিশ্ব। আগে ব্যাট করা দল চড়ল রান পাহাড়ে। সেই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মুখ থুবড়ে পড়ল পরে ব্যাটিং করা দল। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশের মতোই ভারতের বিপক্ষে রানরেটের চাপ সামলাতে ব্যর্থ হলো নেদারল্যান্ডস। রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি ও সুরিয়াকুমার যাদব ফিফটি হাঁকিয়ে দলের জয়ে রাখলেন বড় ভূমিকা।
বৃহস্পতিবার সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে সুপার টুয়েলভের ম্যাচে ৫৬ রানের বড় ব্যবধানে জিতেছে ভারত। আসরে এটি তাদের টানা দ্বিতীয় জয়। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ২ উইকেটে ১৭৯ রান তোলে তারা। জবাব দিতে নেমে মোটেও সুবিধা করতে পারেনি ডাচরা। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ৯ উইকেটে ১২৩ রান করতে পারে তারা। ভারতের পক্ষে বল হাতে অবদান রাখেন ভুবনেশ্বর কুমার, আকসার প্যাটেল, রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও আর্শদীপ সিং।
ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা (৩৯ বলে ৫৩ রান) আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত সঠিক প্রমাণের দায়িত্ব তুলে নেন নিজের কাঁধেই। সঙ্গে জ্বলে ওঠেন ফর্মের তুঙ্গে থাকা কোহলি (৪৪ বলে অপরাজিত ৬২ রান) ও সূর্যকুমার (২৫ বলে অপরাজিত ৫১)। ব্যাট হাতে প্রতিপক্ষের বোলারদের ওপর ছড়ি ঘোরান এই ত্রয়ী। তাদের কল্যাণে জয়ের পুঁজি পেয়ে যায় সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
ভারতের দেওয়া বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে তৃতীয় ওভারেই হোঁচট খায় নেদারল্যান্ডস। ব্যাক্তিগত ১ রানে ওপেনার বিক্রমজিত সিংকে বোল্ড করে সাজঘরে পাঠান ভুবনেশ্বর কুমার। আরেক ওপেনার ম্যাক্স ও'ডাউড এগিয়ে চলছিলেন ভালোভাবেই। তবে আকসার প্যাটেলের পঞ্চম ওভারে ছন্দপতন ঘটে তারও। সরাসরি বোল্ড হয়ে ১০ বলে ১৬ রান করে ফেরেন তিনি।
এদিকে প্রয়োজনীয় রানরেটের সঙ্গে কিছুতেই পাল্লা দিতে পারছিল না ডাচরা। তৃতীয় উইকেটে বাস ডি লিড ও কলিন অ্যাকারম্যান ২৭ রান যোগ করলেও তাতে খরচ করেন ৩০ বল। দশম ওভারের দ্বিতীয় বলে ১৬ রান করা লিডকে ফিরিয়ে সেই জুটি ভাঙেন আকসার। দলীয় ৪৭ রানে তৃতীয় উইকেটের পতন ঘটে নেদারল্যান্ডসের।
এরপর আর কখনোই ম্যাচে ফিরতে পারেনি ডাচ বাহিনী। স্কোরবোর্ডে পরের ৭৬ রান যোগ করতে গিয়ে তারা হারায় আরও ৬ উইকেট। ১৩তম ওভারে অশ্বিনের জোড়া আঘাতে ফিরে যান অ্যাকারম্যান (২১ বলে ১৭ রান) ও টম কুপার।
শেষদিকে টিম প্রিঙ্গেল (২০), শারিজ আহমেদ (১৬) ও পল ভন মিকেরেনের (১৪) ইনিংসে নেদারল্যান্ডসের দলীয় সংগ্রহ ১২৩ পর্যন্ত পৌঁছে। ভারতীয় বোলারদের প্রায় সবাই জ্বলে ওঠেন। ২টি করে উইকেট নেন ভুবনেশ্বর, আর্শদীপ, আকসার ও অশ্বিন।
এর আগে ব্যাট হাতে এই ম্যাচেও ব্যর্থ হন ভারতীয় ওপেনার লোকেশ রাহুল। তৃতীয় ওভারেই মিকেরেনের শিকার বনে যান তিনি। ফেরার আগে ১২ বলে কেবল ৯ রান করতে সক্ষম হন ফর্মহীন এই ব্যাটার। রোহিতকে ফেরানোর সুবর্ণ সুযোগও পেয়েছিল ডাচরা। কিন্তু সহজ ক্যাচ ফেলে তা হেলায় হারান প্রিঙ্গেল।
জীবন পেয়ে ফিফটি করে তবেই থামেন ভারত দলপতি। অপর প্রান্তে বিরাটও দারুণ সমর্থন জোগান রোহিতকে। ১২তম ওভারে ফ্রেড ক্লাসেন ফেরান ৫৩ রান করা রোহিতকে, ভাঙে ৫৬ বলে গড়া ৭৩ রানের জুটি। রোহিতের বিদায়ে ক্রিজে আসেন বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে নাম কুড়ানো সুরিয়াকুমার।
নেমেই স্বরূপে ব্যাট চালানো শুরু করেন তিনি। সেই তুলনায় অপর প্রান্তে কোহলি ছিলেন কিছুটা ধীরস্থিরই। পাকিস্তানের বিপক্ষে ভারতের জয়ের নায়ক খোলস ভেঙে বেরিয়ে আসেন ক্লাসেনের করা ১৭তম ওভারে। ১ ছয় ও ১ চারে সেই ওভারে ১৫ রান নেন সাবেক ভারতীয় অধিনায়ক। ওভারের চতুর্থ বল কাভারে ঠেলে সিঙ্গেল নিয়ে পূর্ণ করেন নিজের অর্ধশতকও।
সুরিয়াকুমারের ঝড় থামছিল না কিছুতেই। নেদারল্যান্ডসের কোনো বোলারই পাত্তা পায়নি তার সামনে। ইনিংসের শেষ বলে ছক্কা হাঁকিয়ে তিনি পেয়ে যান ফিফটিও। মাত্র ২৫ বলে এই মাইলফলক স্পর্শ করেন এই মারকুটে ব্যাটার। ডাচদের হয়ে উইকেটের দেখা পান কেবল মিকেরেন ও ক্লাসেন।
Comments