আফগানদের বিশ্বকাপ থেকে বিদায় করে দিল শ্রীলঙ্কা
ভানিন্দু হাসারাঙ্গা ও লাহিরু কুমারা মিলে অল্প রানে বেঁধে ফেললেন আফগানিস্তানকে। সাদামাটা লক্ষ্যে নেমে পরে ব্যাট হাতে জ্বলে উঠলেন ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। তাদের নৈপুণ্যে অনায়াসে শেষ হাসি হাসল শ্রীলঙ্কা। আর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেল আফগানদের।
মঙ্গলবার ব্রিসবেনে সুপার টুয়েলভের ম্যাচে রশিদ খান-মোহাম্মদ নবিদের ৬ উইকেটে হারিয়েছে লঙ্কানরা। টস জিতে ব্যাটিংয়ে ৮ উইকেটে ১৪৪ রান স্কোরবোর্ডে জমা করে আফগানিস্তান। জবাবে ৯ বল হাতে রেখে ৪ উইকেটে ১৪৮ রান তুলে জয় নিশ্চিত করে দাসুন শানার দল। এই জয়ে আসরের সেমিফাইনালে খেলার আশা টিকে রইল তাদের।
ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতা লেগ স্পিনার হাসারাঙ্গা করেন নিয়ন্ত্রিত বোলিং। ৪ ওভারে মাত্র ১৩ রান খরচায় ৩ উইকেট নেন তিনি। পেসার কুমারা ২ উইকেট নিতে দেন ৩০ রান। সতীর্থরা ইনিংস বড় করতে না পারলেও একাই দাঁড়িয়ে যান ধনঞ্জয়া। ৪২ বলে ৬ চার ও ২ ছয়ে অপরাজিত ৬৬ রান আসে তার ব্যাট থেকে।
ব্যাটিংয়ে নেমে আফগানরা বড় সংগ্রহের ভিতই পেয়েছিল উদ্বোধনী জুটিতে। রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও উসমান ঘানি মিলে ৬ ওভারে আনেন ৪২ রান। রানের চাকা খুব দ্রুতগতির না হলেও উইকেট হাতে থাকায় সুবিধাজনক অবস্থানে ছিল আফগানরা। পাওয়ার প্লের পর প্রথম ওভারে জুটি ভেঙে শ্রীলঙ্কাকে উল্লাসে মাতান কুমারা। ২৪ বলে ২৮ রানে বোল্ড হন গুরবাজ।
এরপর নিয়মিত বিরতিতে পড়তে থাকে উইকেট। কোনো জুটিই আর জমে ওঠেনি। আরেক ওপেনার ঘানিকে শানাকার ক্যাচ বানিয়ে উইকেট উৎসবে যোগ দেন হাসারাঙ্গা। ২৭ বলে ২৭ রান আসে ঘানির ব্যাট থেকে। ইব্রাহিম জাদরানকে বিপজ্জনক হতে দেননি কুমারা। আক্রমণে এসেই নাজিবউল্লাহ জাদরানকে ফেরান ধনঞ্জয়া।
শেষ ৪ ওভারে মাত্র ৩১ রান তুলতে আরও ৪ উইকেট হারায় আফগানিস্তান। রানআউটের ফাঁদে পড়েন ধুঁকতে থাকা গুলবদিন নাইব। কাসুন রাজিথাকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে শানাকার তালুবন্দি হন অধিনায়ক নবি। ইনিংসের শেষ ওভারে রশিদ ও মুজিব উর রহমানকে চার বলের মধ্যে সাজঘরের পথ দেখান হাসারাঙ্গা।
লক্ষ্য তাড়ায় দ্বিতীয় ওভারেই পাথুম নিসাঙ্কার উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। অফ স্পিনার মুজিবের বলে স্টাম্প হারান তিনি। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে এই ধাক্কা সামলানোর চেষ্টা করেন কুসল মেন্ডিস ও ধনঞ্জয়া। তাদের ৩৪ রানের জুটি ভাঙে কুসলের বিদায়ে। রশিদের বলে উইকেটের পেছনে গুরবাজের গ্লাভসে ধরা পড়ার আগে তিনি করেন ২৭ বলে ২৫ রান।
রান তোলার গতি বাড়ে এরপর। খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসেন ধনঞ্জয়া। চারিথ আসালাঙ্কাকে নিয়ে গড়েন ৩৪ বলে ৫৪ রানের জুটি। তাতে চাপ এড়িয়ে জয়ের সুবাস পেতে থাকে লঙ্কানরা। তাদের রান যখন ঠিক ১০০, তখন আসালাঙ্কাকে আউট করেন রশিদ।
ভানুকা রাজাপাকসের সঙ্গে জুটি জমে যায় ধনঞ্জয়ার। ইনিংসের ১৮তম ওভারে ৩৬ বলে হাফসেঞ্চুরির স্বাদ নেন তিনি। ব্যক্তিগত মাইলফলক স্পর্শের পর মুজিবকে টানা দুই চার মারেন তিনি। জয় যখন হাতের নাগালে, তখন মুজিবের বলে কট বিহাইন্ড হন রাজাপাকসে। ভাঙে ২৭ বলে ৪২ রানের জুটি। পরের ওভারে বাঁহাতি পেসার ফজল হক ফারুকিকে চার মেরে খেলা শেষ করে দেন ধনঞ্জয়া।
চার ম্যাচে দুই জয়ে শ্রীলঙ্কার পয়েন্ট ৪। তারা রয়েছে এক নম্বর গ্রুপের পয়েন্ট তালিকার তিনে। সমান ম্যাচে আফগানিস্তানের অর্জন ২ পয়েন্ট। তাদের অবস্থান ছয় দলের মধ্যে তলানিতে। শীর্ষে থাকা নিউজিল্যান্ডের পয়েন্ট তিন ম্যাচে ৫। এক ম্যাচ বেশি খেলে স্বাগতিক ও শিরোপাধারী অস্ট্রেলিয়াও পেয়েছে ৫ পয়েন্ট। তারা অবশ্য পিছিয়ে আছে নেট রান রেটে।
Comments