গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই সেমিতে ভারত

নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার হারে সেমিফাইনাল আগেই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল ভারতের। তবে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বিরাট কোহলি-রোহিত শর্মাদের ম্যাচটিতেও ছিল একটি সমীকরণ। জিতলেই গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন। আর সে কাজটি দারুণভাবে করেছে তারা। সহজ এক জয় তুলে গ্রুপ সেরা হয়েই শেষ চারে নাম লেখাল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম চ্যাম্পিয়নরা।

রোববার মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে সুপার টুয়েলভের শেষ ম্যাচে জিম্বাবুয়েকে ৭১ রানে হারিয়েছে ভারত। টস জিতে আগে ব্যাট করে পাঁচ উইকেট হারিয়ে ১৮৬ রানের বড় পুঁজি পায় রোহিতের দল। লোকেশ রাহুল ও সুরিয়াকুমার যাদবের ফিফটিতে এই রান করে তারা। জবাবে ১৭.২ ওভারে মাত্র ১১৫ রানে গুটিয়ে যায় জিম্বাবুয়ে। ভারতীয় বোলারদের মধ্যে জ্বলে ওঠেন প্রায় সকলেই।

বড় লক্ষ্যের চাপে শুরুতেই ফিরে যান জিম্বাবুয়ের দুই টপ অর্ডার ব্যাটার। ইনিংসের প্রথম বলেই কোহলির হাতে ক্যাচ দিয়ে ভুবনেশ্বর কুমারকে উইকেট দেন ওয়েসলি মাধেভেরে। গোল্ডেন ডাক পেয়ে ফিরে যান তিনি। পরের ওভারে রেগিস চাকাভাকে ফেরান আর্শদিপ সিং। তিনিও বিদায় নেন শূণ্য রানে।

তৃতীয় উইকেটে শন উইলিয়ামসকে নিয়ে মৃদু প্রতিরোধ গড়েন অধিনায়ক আরভিন। মোহাম্মদ শামির করা ষষ্ঠ ওভারের শেষ বলে উইলিয়ামসকে তুলে নিলে ভাঙে ২৬ বলে ২৬ রানের জুটি। এরপর আরভিনও টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ, পান্ডিয়ার বলে তার হাতেই ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন ১৫ বলে ১৩ রান করে।

অষ্টম ওভারে টনি মানইয়োঙ্গাকে ফেরান শামি। মাত্র ৩৬ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে দ্রুত গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় পড়ে জিম্বাবুয়ে। এরপর রাজা ও রায়ান বার্লের ব্যাটে মান বাঁচে জিম্বাবুয়ের। ষষ্ঠ উইকেটে ৩৫ বলে ৬০ রানের জুটি গড়েন তারা। ১৪তম ওভারে ২২ বলে ৩৫ রান করে ফিরে যান বার্ল।

তার বিদায়ের পর আবারও ব্যাটিং ধ্বসের কবলে পড়ে জিম্বাবুয়ে। ১৯ রানের ব্যবধানে সবকটি উইকেট হারিয়ে গুটিয়ে যায় তারা। নবম ব্যাটার হিসেবে আউট হন রাজা, এর আগে ২৪ বলে করেন ৩৪ রান। ১৮তম ওভারে চাতারাকে আউট করে জিম্বাবুয়ের ইনিংসের সমাপ্তি টানেন আকসার। তিন উইকেট নিয়ে ভারতীয় বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল ছিলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। দুই উইকেট পেয়েছেন শামি।  

এর আগে ব্যাট হাতে প্রথম নয় বলে দলীয় সংগ্রহের খাতা খুলতে পারেনি ভারত। টেন্ডাই চাতারার দশম বলে সিঙ্গেল নিয়ে রানের চাকা সচল করেন রোহিত। এই ম্যাচেও রাহুল ধরে রাখেন গত ম্যাচের ফর্ম। তৃতীয় ওভারে রিচার্ড এনগারাভাকে ছক্কা হাঁকিয়ে দেন ছন্দে থাকার ইঙ্গিত। অপর প্রান্তে অধিনায়ক ফিরে যান দ্রুতই। দলীয় ২৭ রানে ১৩ বলে ১৫ রান করে ফিরে যান রোহিত।

দ্বিতীয় উইকেটে বিরাটের সঙ্গে ৬০ রানের জুটি গড়েন রাহুল। ইনিংস বেশি বড় করতে পারেননি ছন্দে থাকা কোহলি, ২৫ বলে ২৬ রান করে ফিরেন শন উইলিয়ামসের শিকার হয়ে। এর পরের ওভারেই রাজাকে ছক্কা হাঁকিয়ে ফিফটি তুলে নেন রাহুল। কিন্তু বিধি বাম, পরের বলেই পরিণত হন ওয়েলিংটন মাসাকাদজার ক্যাচে।

৩৫ বলে তিন চার ও তিন ছয়ে ৫১ রান করে বিদায় নেন তিনি। ১৪তম ওভারে ফিরে যান রিশাভ পান্তও। সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার, মাত্র তিন রান করে আউট হয়ে ম্যাচের দ্বিতীয় উইকেট উপহার দেন উইলিয়ামসকে। ১৬তম ওভার থেকে শুরু হয় 'সুরিয়াকুমার ঝড়'।

একে একে তাণ্ডব চালান ব্লেসিং মুজারাবানি, এনগারাভা ও চাতারার ওপর। অপর প্রান্তে হার্দিক স্রেফ সঙ্গ দিয়েছেন তাকে। শেষ ওভারে এনগারাভার শিকার হয়ে ১৮ বলে ১৮ রান করে বিদায় নেন তিনি। তবে সুরিয়াকুমারের দুই ছক্কা ও এক চারে সেই ওভার থেকেও ২১ রান পায় ভারত। ওভারের চতুর্থ বলে দুই রান নিয়ে মাত্র ২৩ বলে ব্যক্তিগত অর্ধশতক স্পর্শ করেন এই বিধ্বংসী মিডল অর্ডার ব্যাটার। শেষ পর্যন্ত মাত্র ২৫ বলে ছয় চার ও চার ছক্কায় ৬১ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি। ম্যাচসেরার পুরস্কারও উঠেছে তার হাতে।

Comments

The Daily Star  | English
CSA to be repealed

CSA to be repealed within a week: Nahid Islam

About the election, Nahid said an election based on national consensus will be held after completing all necessary reforms.

2h ago