‘লিটন পাঁচ ম্যাচ ওপেন করলে অন্তত দুই ম্যাচ ভালো খেলতই’
বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচের আগেই পরীক্ষা নীরিক্ষার প্রশ্নে বিরক্ত হয়ে জবাব দিয়েছিলেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। লিটন দাস ওপেন করলেই কি বাংলাদেশ জিতবে? এমন প্রশ্নও রেখেছিলেন তিনি। এবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথম তিন ম্যাচে লিটনকে দেখা যায়নি ওপেনিংয়ে। ভারতের বিপক্ষে চতুর্থ ম্যাচে ওপেন করতে নেমেই তিনি দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ম্যাচ প্রায় জিতিয়েই দিচ্ছিলেন। সাকিব ও লিটনের কোচ, বিকেএসপির ক্রিকেট উপদেষ্টা নাজমুল আবেদিন ফাহিম দ্য ডেইলি স্টারকে বললেন, লিটনকে ওপেন করানোর বেনিফিট কাজে লাগায়নি বাংলাদেশ, যা ছিল 'ডিফেন্সিভ মুভ'।
নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে তিনে নেমে ৯, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৩৪ ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিনে ১৪ রান করেন লিটন। ভারতের বিপক্ষে ওপেন করতে নেমে খেলেন স্মরণীয় ইনিংস। ২৭ বলে করেন ৬০ রান। তার ব্যাটিংয়ের সময় এলোমেলো হয়ে পড়ে ভারতের বোলিং। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে রোহিত শর্মাদের চেহারায়। পাকিস্তানের বিপক্ষেও ওপেনিং বহাল থাকে লিটনের। শেষটায় ১০ রানের বেশি করা হয়নি।
চলতি বছর বাংলাদেশের ওপেনারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ফিফটি লিটনের। টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের ওপেনারদের মধ্যে বিশ্বকাপের আগ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ১৩২.৮০ স্ট্রাইকরেট ছিল লিটনের। বিশ্বকাপের পর যা আরও বেড়েছে। এই বছরে ওপেনিংয়ে তার স্ট্রাইকরেট ১৫০।
ওপেনিং নিয়ে যখন বাংলাদেশের বিস্তর ভোগান্তি। বিশ্বকাপের আগে ১৮ ম্যাচে ১২টি ভিন্ন জুটিতে করা হয়েছে পরীক্ষা নিরীক্ষা সেখানে থিতু থাকা লিটনকেই ওপেনিং থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। বিশ্বকাপের শেষ দুই ম্যাচে আবার নিজেদের সিদ্ধান্ত থেকে সরেও আসে দল।
নাজমুল জানান, টিম ম্যানেজমেন্টের এই অস্থিরতা নিজেদের সক্ষমতা সম্পর্কে ধারনা না থাকাকেই তুলে ধরে, 'এটাই প্রমাণ করে আমাদের সক্ষমতা সম্পর্কে আমরা পরিষ্কার ধারণা রাখি না। আমাদের শক্তি তো অনেক বেশি না। তারপরও যা আছে তাতেও বুঝি না শক্তির জায়গাগুলি কোনগুলি। টি-টোয়েন্টি এমন খেলা যেখানে যে দল ভাল খেলে সেখানে সেই দলের সম্ভাবনা বেশি বাড়ে। ওয়ানডেতে ভালো শুরু না করার পরও একটা দল ফিরতে পারে, মাঝে থেকে হাল ধরার টাইম পায় অনেক। টি-টোয়েন্টিতে ভালো শুরু করতে পারলে সেটার বেনিফিট অনেক বেশি। আমাদের এখানে লিটন দাস থাকার কারণে আমাদের অনেক ভালো করার সুযোগ ছিল। লিটন পাঁচটা ম্যাচ ওপেন করলে অন্তত দুটো ম্যাচ ও ভালো খেলতই। সেই দুই ম্যাচে আমাদের সম্ভাবনা বেশি থাকত। অলরেডি একটা ম্যাচে প্রায় হয়েও গিয়েছিল। এইটা না বোঝাটা খুবই দুঃখজনক।'
নাজমুল মনে করেন লিটন ওপেন করলে মিডল অর্ডারের চাপও অনেকটা কমে যেত। কিন্তু তা না করে তাকে তিনে খেলানো ছিল রক্ষণশীল মনোভাব, 'ও ওপেন করলে মিডল অর্ডার যে কতটা স্বস্তি পায় এই জিনিসটাও ভেবে দেখা দরকার ছিল। এটা আমরা মুখে মুখে বলি যে খুব আগ্রাসী খেলতে চাই। বাট দ্যাট ওয়াজ এ ভেরি ডিফেন্সিভ মুভ ওকে তিনে খেলানো। তার মানে আমরা তাকে প্রটেক্ট করার চেষ্টা করেছি। দলের একজন মুখ্য ব্যাটারকে - উই ট্রায়িং টু সেইভ হিম। সে কারণে ওকে তিনে খেলানো।'
'আমার মনে হয় ওকে এক নম্বরে খেলালে এটা আগ্রাসী অ্যাপ্রোচ আসত। আর আমাদের ওপেনিংয়ের যে সংকটটা সেটা থেকেও বাঁচতাম। ও যদি ওপেন করে, সাকিব যদি তিনে খেলত। নিচে আমরা একজন বোলারকে নিতে পারি নিশ্চিন্তে।'
Comments