১৯৯২ বিশ্বকাপের ছায়া দেখছে পাকিস্তান
১৯৯২ সালে অস্ট্রেলিয়ায় যে ওয়ানডে বিশ্বকাপ হয়েছিল তাতে শুরুর দিকে বেহাল অবস্থা ছিল পাকিস্তানের। প্রথম পাঁচ ম্যাচে স্রেফ একটিতে জিতেছিল তারা। বৃষ্টিতে ভাগ্য সহায়তায় পয়েন্ট পাওয়ার পর বদলে যায় দলটি। সেবারও শুরু থেকেই উড়ছিল নিউজিল্যান্ড। কিন্তু ব্ল্যাক ক্যাপসরা সেমিফাইনালে ধরাশায়ী হয় পাকিস্তানের কাছে। ফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়নও হয়ে যায় পাকিস্তান। এবার ফরম্যাট আলাদা। কিন্তু চলার গতিপথে আছে অনেকটা মিল। প্রায় বিদায়ের শঙ্কা থেকে যে এবারও সেমির টিকেট পেয়ে গেছে বাবর আজমের দল। কোচ ম্যাথু হেইডেন বলছেন, ৩০ বছর আগের স্মৃতি অনুপ্রানীত করছে পাকিস্তানকে।
এবারের বিশ্বকাপ চির প্রতিদ্বন্দ্বি ভারতের কাছে হেরে শুরু হয় পাকিস্তানের। পরের ম্যাচেই তারা খায় বিশাল ধাক্কা। অনেক পিছিয়ে থাকা শক্তি জিম্বাবুয়ের কাছে হেরে যায় তারা। অপ্রত্যাশিত এই পয়েন্ট হারানো তাদের ফেলে দেয় খাদে। বাকি সব ম্যাচ জিতলেও নিজেদের হাতে থাকেনি সমীকরণ। ঘুরে দাঁড়িয়ে পাকিস্তান হারায় নেদারল্যান্ডস ও দক্ষিণ আফ্রিকাকে। তাতেও কাজ হতো না, যদি দক্ষিণ আফ্রিকা পা না হড়কাত।
অপ্রত্যাশিতভাবে টুর্নামেন্টে সবচেয়ে বড় অঘটনের জন্ম দিয়ে ফেভারিট দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে দেয় নেদারল্যান্ডস। এতেই দোয়ার খুলে যায় বাবরদের। বাংলাদেশকে হারিয়ে তারা পা রাখে সেমির দোয়ারে। বৃষ্টিতে দক্ষিণ আফ্রিকা জিম্বাবুয়ের কাছে পয়েন্ট না হারালেও নেট রানরেটে পিছিয়ে বিদায় নিতে হতো পাকিস্তানকে। এতে বোঝা যায় কতটা খাদের কিনার থেকে লাইফলাইন পেল তারা।
১৯৯২ সালে যাদেরকে হারিয়ে ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠে প্রথম শিরোপা জিতেছিল পাকিস্তান, বুধবার সেই নিউজিল্যান্ডই তাদের সামনে। দলটিকে ১৯৯৯ বিশ্বকাপের সেমিতেও হারিয়েছিল তারা। খেলার আগের দিন মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে হেইডেন জানালেন, পুরনো স্মৃতি সব প্রভাবের কারণ না হলেও উৎস হচ্ছে প্রেরণার, 'এটা প্রত্যক্ষ প্রভাব নেই। কিন্তু গণমাধ্যম, খেলোয়াড়, সাপোর্ট স্টাফ সবাই এই অভিযানের মূল্যটা বুঝতে পারছে। বিরানব্বই পাকিস্তানের ক্রিকেটের জন্য ছিল স্মরণীয়।'
'ওই টুর্মামেন্টটাতে পাকিস্তান দাপুটে ক্রিকেট কনা খেলেও হুট করে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল, পরে বিপদজনক হয়ে যায়। আসরও শেষ করে সেরা হয়ে। আমি ক্রিকেট ভক্ত হিসেবে তখনকার খেলা দেখার কথা মনে করতে পারি। পাকিস্তানের যেমন পেস আক্রমণ ছিল, ব্যাটিং লাইনআপ ছিল তা দেখার মতো ছিল।'
হেইডেনের জানান ইমরান খান, ওয়াসিম আকরাম, ইনজামাম উল হকদের অনুসরণ করে বেড়ে বাবর আজমের প্রজন্মও আশায় আছে বড় কিছুর, 'ওটা ছিল অসাধারণ যাত্রা। তখনকার সেসব কিংবদন্তি ক্রিকেটারদের দেখে এখানকার ক্রিকেটাররা বেড়ে উঠেছে। তারাও আশা করছে ওদের মতো এরকম কিছু একটা করে দেখাবে।'
বুধবার বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টায় সিডনিতে শুরু হবে পাকিস্তান-নিউজিল্যান্ডের প্রথম সেমিফাইনাল।
Comments