দুর্দান্ত মাইলেজের ৫ মোটরসাইকেল

একদিকে জ্বালানির চড়া দাম, অন্যদিকে দেশে গাড়ির দামও বাড়ছে। ফলে আগের তুলনায় মোটরসাইকেলের দিকে আরও বেশি ঝুঁকতে শুরু করেছে নগরবাসী।
দুর্দান্ত মাইলেজের ৫ মোটরসাইকেল
দুর্দান্ত মাইলেজের মোটরসাইকেল সম্পর্কে জেনে নিন।

একদিকে জ্বালানির চড়া দাম, অন্যদিকে দেশে গাড়ির দামও বাড়ছে। ফলে আগের তুলনায় মোটরসাইকেলের দিকে আরও বেশি ঝুঁকতে শুরু করেছে নগরবাসী।

বিশেষ করে রাজধানীতে তীব্র যানজটের মধ্য দিয়ে সহজে এবং কৌশলে যাতায়াতের জন্য দু-চাকার বাহন বেশ সুবিধাজনক। পাশাপাশি এর রক্ষণাবেক্ষণ সহজ এবং দামও সাধ্যের মধ্যে রয়েছে।

তবে জ্বালানির সাশ্রয়ও এখানে একটি চিন্তার বিষয়। জ্বালানির দামের কথা মাথায় রেখে সবাই চায় কম জ্বালানি খরচ করে বেশি দূরত্ব ভ্রমণ করতে।

আপনি যদি কম জ্বালানি খরচ হয় এমন মোটরসাইকেলের খোঁজে থাকেন তাহলে আপনার জন্য রয়েছে আমাদের স্থানীয় বাজারে পাওয়া সবচেয়ে সাশ্রয়ী ও সেরা মাইলেজ যুক্ত কয়েকটি মোটরসাইকেলের পরামর্শ।

দুর্দান্ত মাইলেজের ৫ মোটরসাইকেল
হোন্ডা সিবি শাইন এসপি

হোন্ডা সিবি শাইন এসপি

পুরনো হোন্ডা সিবি শাইন-এর ওপর নির্মিত হোন্ডা সিবি শাইন এসপি আগেরটির তুলনায় বেশ উন্নত একটি মডেল। এতে এসেছে এক নতুন লুক এবং যুক্ত হয়েছে আরও ভালো পারফরম্যান্স। এটিতে একটি ৫-স্পিড ম্যানুয়াল যোগ করা হয়েছে, যা এটিকে আরও নিয়ন্ত্রণযোগ্য, দ্রুত এবং কৌশলে চালানোর জন্য আরও দুর্দান্ত করে তোলে। এটি বেশ স্পোর্টি লুকের একটি বাইক যা প্রতিদিনের যাত্রীদের বিশেষ করে, তরুণ চাকরিজীবী এবং মধ্যবয়সী ব্যবহারকারীদের জন্য চমৎকার। যারা এমন একটি বাইক চান যা দেখতে দুর্দান্ত, জ্বালানি সাশ্রয়ী এবং আরামদায়ক, তাহলে এটি আপনার পছন্দের তালিকায় থাকতে পারে। বাইটিতে হোন্ডা মোটরসাইকেলের নির্ভরযোগ্যতার পাশাপাশি রয়েছে প্রতি লিটারে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত মাইলেজ। পাশাপাশি দীর্ঘ রাইডের জন্য আরামদায়ক বসার ব্যবস্থা রয়েছেই। অন্যদিকে, বাইকটির অন্যান্য প্রতিযোগীদের তুলনায় এতে একটি এসি বৈদ্যুতিক সিস্টেম এবং স্লিম টায়ার রয়েছে।

মূল্য: ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা

পরিবেশক: বাংলাদেশ হোন্ডা প্রাইভেট লিমিটেড

সিসি: ১২৫

ইঞ্জিন: এয়ার-কুলড, ৪-স্ট্রোক এসআই ইঞ্জিন

মাইলেজ: ৫০ কিমি/লিটার

ট্রান্সমিশন: ৫-স্পিড ম্যানুয়াল

সাসপেনশন: টেলিস্কোপিক (ফ্রন্ট), ৫-স্টেপ  অ্যাডজাস্টেবল হাইড্রোলিক শক অ্যাবসরভারস (রিয়ার)

ব্রেক: সিঙ্গেল ডিস্ক (ফ্রন্ট), ড্রাম ব্রেক (রিয়ার) (সিবিএস ব্রেকিং সিস্টেম)

এবিএস: নেই

মোটরসাইকেল, বাইক, মাইলেজ, জ্বালানি, তেল, জ্বালানি সাশ্রয়,
ইয়ামাহা স্যালুটো ১২৫

ইয়ামাহা স্যালুটো ১২৫

ইয়ামাহা স্যালুটো বাইকটি অবিশ্বাস্য মাইলেজের জন্য পরিচিত। অনেক ব্যবহারকারী এও দাবি করেন যে, এটি প্রতি লিটারে ৭০ থেকে ৭৪ কিলোমিটার পর্যন্ত যেতে পারে। তবে, ইয়ামাহা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতি লিটারে ৪৫ কিলোমিটার মাইলেজ দাবি করে এবং সালুটো ব্যবহারকারীরা প্রতি লিটারে ৬০ কিলোমিটার মাইলেজ দাবি করে থাকেন। এর দুর্দান্ত মাইলেজের জন্য এটি বেশ সাশ্রয়ী। তাছাড়া ব্যবহারে দিক থেকেও এটি খুব ভালো পারিবারিক মোটরসাইকেল, যা পারফরম্যান্স এবং স্টাইলের দিক থেকেও বেশ চমৎকার। স্যালুটোর রয়েছে সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৫০০ আরপিএম টর্ক এবং এর গতি প্রতি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১০০ কিলোমিটার, যা এর জ্বালানি খরচ কমাতে সাহায্য করে। এন্ট্রি-লেভেল চালকদের জন্য এটি পারফরম্যান্স, স্টাইল এবং আরামের সংমিশ্রণে তৈরি একটি নিখুঁত মোটরসাইকেল।

মূল্য: ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা

পরিবেশক: এসিআই মোটরস লিমিটেড

সিসি: ১২৫

ইঞ্জিন: এয়ার-কুলড, ৪-স্ট্রোক এসআই ইঞ্জিন এসওএইচসি

মাইলেজ: ৬০ কিমি/লিটার

ট্রান্সমিশন: ৪-স্পিড ম্যানুয়াল

সাসপেনশন: টেলিস্কোপিক (ফ্রন্ট), ডুয়াল স্প্রিং (রিয়ার)

ব্রেক: সিঙ্গেল ডিস্ক (ফ্রন্ট), ড্রাম ব্রেক (রিয়ার)

এবিএস: নেই

দুর্দান্ত মাইলেজের ৫ মোটরসাইকেল
টিভিএস মেট্রো প্লাস

টিভিএস মেট্রো প্লাস

টিভিএস মেট্রো প্লাস আন্ত:নগর ভ্রমণের জন্য একটি অত্যন্ত আরামদায়ক, স্টাইলিশ এবং দ্রুত বাইক। এর ক্রয়ক্ষমতা, নির্ভরযোগ্যতা এবং বাংলাদেশে তৈরি হওয়ার কারণে এটি স্থানীয় বাজারে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ব্যবহারকারীদের মতে এটির একটি দীর্ঘ ১২-লিটার ফুয়েল ট্যাঙ্ক রয়েছে, পাশাপাশি রয়েছে প্রতি লিটারে অবিশ্বাস্য ৬৫ থেকে ৭০ কিলোমিটার পর্যন্ত মাইলেজ। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে এই বাইকটির মাইলেজ প্রতি লিটারে ৫৫ কিলোমিটার বলা হয়েছে। বাইকটির সামনে ও পিছনে ড্রাম ব্রেক এবং পাতলা টায়ার থাকায়, ব্রেকিং ও উচ্চ গতি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। তবে সামগ্রিকভাবে, দাম এবং মাইলেজ বিবেচনায়, এটি একটি দুর্দান্ত বাইক।

মূল্য: ৯৫ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা।

পরিবেশক: টিভিএস অটো বাংলাদেশ লিমিটেড

সিসি: ১১০

ইঞ্জিন: এয়ার কুলড, ৪-স্ট্রোক, এসআই ইঞ্জিন

মাইলেজ: ৫৫ কিমি/লিটার

ট্রান্সমিশন: ৪-স্পিড ম্যানুয়াল

সাসপেনশন: টেলিস্কোপিক অয়েল ড্যাম্পড (ফ্রন্ট), সুইং আর্ম সহ ৫-স্টেপ অ্যাডজাস্টেবল হাইড্রোলিক শক (রিয়ার)

ব্রেক: ড্রাম (ফ্রন্ট), ড্রাম (রিয়ার)

এবিএস: নেই

দুর্দান্ত মাইলেজের ৫ মোটরসাইকেল
হোন্ডা লিভো ১১০

হোন্ডা লিভো ১১০

নতুন রাইডেরদের জন্য হোন্ডা লিভো একটি সেরা মোটরসাইকেল হিসেবে পরিচিত। এটি বেশ ডাইনামিক এবং স্টাইলিশ হওয়ার পাশাপাশি খুবই আরামদায়ক। সঠিক ফ্রেম, ট্রান্সমিশন এবং সাসপেনশন সেট-আপ সহ এর ইঞ্জিন পারফরম্যান্স খুবই চমৎকার। এর জ্বালানি খরচ কম, প্রতি লিটারে ৬০ কিলোমিটার এবং হোন্ডা-এর বিক্রয়োত্তর পরিষেবাগুলো এটিকে আরও ক্রেতা-বান্ধব করে তোলে৷ তবে এটির অন্যান্য প্রতিযোগীদের তুলনায় এর টায়ার বেশ পাতলা এবং ১১০ সিসি ক্যাটাগরির কিছু বাইকের তুলনায় এটি কিছুটা ব্যয়বহুল।

মূল্য: ১ লাখ ৫ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা।

পরিবেশক: বাংলাদেশ হোন্ডা প্রাইভেট লিমিটেড

সিসি: ১১০

ইঞ্জিন: এয়ার-কুলড, ৪-স্ট্রোক বিএস-আইভি ইঞ্জিন

মাইলেজ: ৫০ কিমি/লিটার

ট্রান্সমিশন: ৪-স্পিড ম্যানুয়াল

সাসপেনশন: টেলিস্কোপিক (ফ্রন্ট), স্প্রিং লোডেড হাইড্রোলিক (রিয়ার)

ব্রেক: ড্রাম ব্রেক (ফ্রন্ট), ড্রাম ব্রেক (রিয়ার) (সিবিএস ব্রেকিং সিস্টেম)

এবিএস: নেই

দুর্দান্ত মাইলেজের ৫ মোটরসাইকেল
রানার এডি-৮০স

রানার এডি-৮০স

রানার এডি-৮০স হলো বাংলাদেশের সবচেয়ে বাজেট-বান্ধব বাইকগুলোর একটি। ৮০সিসি এই বাইকটি বেশ চমৎকার এবং শক্তিশালী। এর এই চমৎকার ক্রয়ক্ষমতার প্রধান কারণ হলো এর প্রায় সব যন্ত্রাংশই বাংলাদেশে তৈরি হয়। এটি দীর্ঘ যাত্রার জন্যও খুব আরামদায়ক। এর রয়েছে একটি ৯-লিটার ফুয়েল ট্যাঙ্ক এবং প্রতি লিটারে ৬০ কিলোমিটার মাইলেজ। এমনকি বেশিরভাগ ভোক্তা এও বলেছেন যে, বাইকটি প্রতি লিটারে ৬৫ থেকে ৬৮ কিলোমিটার পর্যন্ত যেতে পারে। তবে দুর্ভাগ্যবশত, বাইকটিতে ভালো ব্রেক এবং সাসপেনশন সেট আপ নেই। ফলে অনেক সময় অবাঞ্ছিত কম্পনের সৃষ্টি হয়। তবুও, বাইকের সামগ্রিক ক্রয়ক্ষমতা এবং মাইলেজ বিবেচনা করলে, ত্রুটিগুলো উপেক্ষা করা যায়।

মূল্য: ৬০ হাজার টাকা থেকে ৮০ হাজার টাকা

পরিবেশক: রানার অটোমোবাইলস লিমিটেড

সিসি: ৮০

ইঞ্জিন: এয়ার-কুলড, ৪-স্ট্রোক পেট্রোল ইঞ্জিন

মাইলেজ: ৬০ কিমি/লিটার

ট্রান্সমিশন: ৪-স্পিড ম্যানুয়াল

সাসপেনশন: হাইড্রোলিক টেলিস্কোপিক (ফ্রন্ট), কয়েল স্প্রিং হাইড্রোলিক (রিয়ার)

ব্রেক: ড্রাম ব্রেক (ফ্রন্ট), ড্রাম ব্রেক (রিয়ার)

এবিএস: নেই

.

অনুবাদ করেছেন আহমেদ বিন কাদের অনি

 

 

Comments