ফাইভ-জি তরঙ্গ নিলামের প্রায় দুই বছর পর নীতিমালা প্রকাশ

৫জি নীতিমালা প্রকাশ করেছে বিটিআরসি। প্রতীকী ছবি: স্টার
৫জি নীতিমালা প্রকাশ করেছে বিটিআরসি। প্রতীকী ছবি: স্টার

৫জি তরঙ্গের নিলামের প্রায় দুই বছর পর বাংলাদেশের টেলিকম নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি একটি লাইসেন্সিং নীতিমালা প্রকাশ করেছে। নীতিমালা অনুযায়ী, মোবাইল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে এক বছরের মধ্যে এই সেবা চালু করতে পারবে।

নীতিমালা অনুযায়ী, ৫জি লাইসেন্সপ্রাপ্ত চার প্রতিষ্ঠানকে দ্বিতীয় বছরের শুরু থেকে সব ধরনের ৫জি সেবা চালু করার সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। এসব সেবার মধ্যে আছে স্মার্ট সিটি, স্মার্ট হোম, ইনটেলিজেন্ট ট্রান্সপোর্টেশন সিস্টেম, স্মার্ট গ্রিডসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সেবা।

'রেগুলেটরি অ্যান্ড লাইসেন্সিং গাইডলাইন্স ফর সেলুলার মোবাইল সার্ভিসেস ইন বাংলাদেশ' নামের এই সমন্বিত নীতিমালা ৫জির পাশাপাশি ২জি, ৩জি ও ৪জি প্রযুক্তির জন্যেও প্রযোজ্য হবে। 

২০২২ এর মার্চে দেশের চারটি মোবাইল অপারেটর গ্রাহকদের ৫জি সেবা দেওয়ার উদ্দেশ্যে ১২৩ কোটি মার্কিন ডলারে ১৯০ মেগাহার্জ তরঙ্গ কিনেছে।

দেশের প্রধান দুই অপারেটর গ্রামীনফোন ও রবি উভয়ই আলাদা আলাদা ভাবে তিন হাজার ৩৬১ কোটি টাকা খরচ করে ২৬০০ ব্যান্ডের ৬০ মেগাহার্জ করে তরঙ্গ কিনেছে। বাংলালিংক ২৩০০ ব্যান্ডের ৪০ মেগাহার্জ তরঙ্গ কিনেছে দুই হাজার ২৪১ কোটি টাকায়। রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা টেলিটক এক হাজার ৬৮১ কোটি টাকায় ২৩০০ ব্যান্ডের ৩০ মেগাহার্জ তরঙ্গ কিনেছে।

নিলামের সময় বিটিআরসি বলেছিল অপারেটরদের ছয় মাসের মধ্যে ৫জি সেবা চালু করতে হবে। তবে এই সেবার জন্য প্রযোজ্য নীতিমালা প্রণয়ন করতেই বিটিআরসি প্রায় দুই বছর সময় নিয়েছে।

সে সময় অপারেটরের কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, ৫জি সেবাকে তারা আর্থিক দিক দিয়ে লাভজনক বলে বিবেচনা করছেন না। কারণ হিসেবে অবকাঠামো নির্মাণের উচ্চ খরচ, ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতা নিয়ে উদ্বেগ, বিনিয়োগ উঠে আসা নিয়ে অনিশ্চয়তা ও উচ্চ মাত্রার কর-কাঠামোর কারণে ৪জি সেবা থেকে প্রত্যাশা অনুযায়ী মুনাফা অর্জন করতে না পারার কথা তারা উল্লেখ করেন।

তা সত্ত্বেও, অপারেটররা সাফল্যের সঙ্গে এই প্রযুক্তির ট্রায়াল রান সমাপ্ত করেছে।

ক্ষমতাসীন দলের ২০১৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে ৫জি সেবা চালুর অঙ্গীকার করা হয়েছিল।

৫জি প্রযুক্তি এখনো অনেক দেশে বাণিজ্যিক সাফল্য পায়নি।

জিএসএমএ ইন্টেলিজেন্সের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ২০২২ সালের শেষে সারা বিশ্বে ১০০ কোটির চেয়েও বেশি হ্যান্ডসেটে ৫জি সংযোগ ছিল। ২০২৫ সাল নাগাদ সংখ্যাটি ২০০ কোটি হতে পারে। প্রতিবেশী দেশ ভারতে ২০২২ এর অক্টোবরে ৫জি চালুর পর ১০ কোটি গ্রাহক এই সেবা ব্যবহার করছেন।

লার্নএশিয়ার সিনিয়র পলিসি ফেলো আবু সাঈদ খান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, '(এক বছরের মধ্যে) সেবা চালুর বাধ্যবাধকতা সরকারের নীতিমালার পরিপন্থী, কারণ মোবাইল অপারেটরদের ফিক্সড ওয়্যারলেস অ্যাক্সেস (এফডব্লিউএ) চালু করার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।'

এফডব্লিউএ একটি দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা, যেটি ওয়্যারলেস নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট অবস্থান, যেমন বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ইন্টারনেট সংযোগ পৌঁছে দিতে পারে। এর মাধ্যমে উপযোগিতার সঙ্গে ব্রডব্যান্ড সেবার বিস্তৃতি বাড়ানো যায়, বিশেষত, যেসব এলাকায় তারের মাধ্যমে দেওয়া ইন্টারনেট সেবা সীমিত।

 

ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন মোহাম্মদ ইশতিয়াক খান

ইংরেজিতে মূল প্রতিবেদন পড়তে ক্লিক করুন 

Comments

The Daily Star  | English

3 killed in Iranian missile strike on southern Israel, says MDA

Trump brokered ceasefire agreement in contact with Israel, Iran: White House official

2d ago