এক্স ছেড়ে ব্লুস্কাইয়ে ঝুঁকছেন ব্যবহারকারীরা?

ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স ছাড়ার হিড়িক পড়েছে। এখন প্রতি সপ্তাহেই লাখো ব্যবহারকারী যোগ দিচ্ছেন অন্যান্য যোগাযোগমাধ্যমে৷ বিকল্প মাধ্যম হিসেবে এখন জনপ্রিয়তা পাচ্ছে 'ব্লুস্কাই'।

যেসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এক্স ব্যবহার বাদ দিচ্ছেন, কারণ হিসেবে তারা মার্কিন নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে এক্সের মালিক ইলন মাস্কের সরাসরি সমর্থন এবং এই মাধ্যমে রাজনৈতিক মেরুকরণের প্রকৃতিকে উল্লেখ করছেন।

ব্লুস্কাই মূলত সাবেক টুইটারের একটি প্রকল্প৷ ২০১৯ সালে টুইটারের তৎকালীন সিইও জ্যাক ডরসির অধীনে নির্মিত হয় এই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম।

গত সপ্তাহে ১০ লাখের বেশি নতুন ব্যবহারকারী যুক্ত হয়েছেন এই মাধ্যমে। বর্তমানে ব্লুস্কাই ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় দেড় কোটি৷ প্ল্যাটফর্মটি এই সপ্তাহে অ্যাপলের অ্যাপ স্টোরের শীর্ষে জায়গা করে নিয়েছে।

এক্সের ব্যবহারকারী কমে যাওয়ার ঘটনা এবারই প্রথম না। ২০২২ সালের অক্টোবরে মাস্ক টুইটারের মালিকানা নেওয়ার পরও অনেকে এই প্লাটফর্ম ছেড়ে যান।

কারা এক্স ছাড়ছেন

বুধবার (১৩ নভেম্বর) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান ঘোষণা দেয়, তারা আর এক্সে পোস্ট করবে না৷ তবে গার্ডিয়ানের অ্যাকাউন্টগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়নি।

গার্ডিয়ানের মতোই মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনপিআর ও পিবিএস গত বছর এই প্ল্যাটফর্মের ব্যবহার ছাড়ে। অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং করপোরেশনও তাদের কয়েক ডজন এক্স অ্যাকাউন্টের মধ্যে মাত্র চারটি এখন চালু রেখেছে।

তারকাদের মধ্যে মার্কিন অভিনেতা জেমি লি কার্টিস এবং বেটি মিডলার অন্যান্য যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় থাকলেও এক্স ব্যবহার করছেন না। এলটন জন, জিম ক্যারি, হুপি গোল্ডবার্গ এবং জিজি হাদিদের মতো অনেকে ২০২২ সালে ইলন মাস্ক মালিকানা নেওয়ার পরই এক্সের ব্যবহার ছেড়ে দেন।

কেন এক্স ছাড়ছেন

ব্যবহারকারীরা বলছেন, ছেড়ে যাওয়ার কারণগুলোর মধ্যে একটি হলো প্ল্যাটফর্মটিতে নেতিবাচক কনটেন্ট বেড়ে যাওয়া।

দ্য গার্ডিয়ান তাদের বিবৃতিতে জানায়, 'এই প্লাটফর্মে ঘনঘন বিরক্তিকর কনটেন্ট প্রচারিত হয়, যার মধ্যে রয়েছে কট্টর ডানপন্থীদের বর্ণবাদী ও ষড়যন্ত্রতত্ত্ব৷'

তবে এক্সের ব্যবহার ছাড়ার কোনো নির্দিষ্ট কারণ জানায়নি গার্ডিয়ান। দীর্ঘদিন ধরেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছিল বলে জানায় তারা।

আমস্টারডামের ভ্রেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক যোগাযোগ গবেষক সিলভিয়া মাজো-ভাজকেজ ডয়চে ভেলেকে বলেন, 'সংবাদ সংস্থাগুলোর সীমাহীন অর্থ নেই, দর্শকদেরও সীমাহীন মনোযোগ নেই। তাই স্বল্প সময়ের মধ্যে কনটেন্ট-কেন্দ্রিক কথাবার্তা কীভাবে বিকশিত হবে, তা নিয়ে ব্যাপক অনিশ্চয়তা আছে এমন কোনো প্ল্যাটফর্মে না থাকার কৌশলগত সিদ্ধান্ত তারা নিতে পারে।'

তিনি আরও বলেন, 'সংবাদ মাধ্যমগুলো চায় তাদের পাঠক-দর্শকদের সামাজিকমাধ্যমে নিয়ে আসতে। এখন টুইটার ব্যবহারকারী কমে গেলে তারা কাদের দিকে মনোযোগ দেবেন? যেহেতু অন্যান্য প্লাটফর্মে ব্যবহারকারী বাড়ছে, তারা হয়তো সেসব প্লাটফর্মে বেশি বিনিয়োগ করবেন, যেখানে নতুন অনুসারী মিলবে তাদের, মিলবে নতুন পরিবেশ।'

রাজনীতি নিয়ে আলোচনা কমতে পারে

নতুন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রাজনৈতিক আলোচনা কম হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ তবে অন্য প্লাটফর্মগুলোও একদম রাজনীতি বা রাজনৈতিক প্রভাব মুক্ত না৷

অনলাইনে জনসাধারণের আলোচনার ভবিষ্যৎ কেমন হবে, তা অনুমান করা কঠিন৷ তবে গবেষকরা বিশ্বাস করেন, এই আলোচনা এখনই শুরু করা দরকার৷

ব্যবহারকারীরা নিজেদের মধ্যে এবং তাদের অনুসারীদের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখতে একাধিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করবেন।

Comments

The Daily Star  | English

CU students lock main entrance after peer 'assaulted by locals'

They began a sit-in after locking the gate, forcing teachers and students to enter the campus on foot

49m ago