ক্যানসার চিকিৎসা নেওয়ার পর আইরিশ উচ্চারণে কথা বলছেন মার্কিন রোগী
যুক্তরাষ্ট্রে প্রোস্টেট ক্যানসারের চিকিৎসা নেওয়া এক রোগীর মধ্যে 'অনিয়ন্ত্রিত আইরিশ উচ্চারণের' প্রবণতা দেখা গেছে, যদিও আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে ওই রোগীর কোনো সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। চিকিৎসকরা ধারণা করছেন এটি 'ফরেন অ্যাকসেন্ট সিনড্রোম (এফএএস)'-এর একটি প্রবণতা।
ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নাল সম্প্রতি এই খবর প্রকাশ করে।
বয়স পঞ্চাশের ঘরে থাকা এই রোগী অ্যান্ড্রোজেন ডিপ্রাইভেশন থেরাপি নিচ্ছিলেন। ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিনের তথ্যমতে, মেটাস্ট্যাটিক (দেহের ভেতরে থাকা কোনো রোগসৃষ্টিকারী এজেন্ট) হরমোন-সংবেদনশীল প্রোস্টেট ক্যানসারের ক্ষেত্রে যে চিকিৎসা সেবা অনুমোদিত রয়েছে, সেটিই ওই রোগীকে দেওয়া হচ্ছিল।
ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পরীক্ষায় ওই রোগীর স্নায়ুতাত্বিক কোনো অস্বাভাবিকতা ধরা পড়েনি, যদিও দেখা গেছে তার ক্যানসার আরও ছড়িয়ে পড়ছে।
চিকিৎসকরা দেখেছেন, কেমোথেরাপি দেওয়া সত্বেও ওই রোগীর শরীরে ক্যানসার ছড়িয়ে পড়ছে এবং তিনি ক্যানসারের শেষ ধাপে পৌঁছেছেন, যা তাকে মৃত্যুর দিকে ধাবিত করেছে।
এই রোগীর যাবতীয় তথ্য বিশ্লেষণ করে চিকিৎকরা বলছেন, তার মধ্যে প্যারানিওপ্লাস্টিক নিউরোলজিক্যাল ডিসঅর্ডার বা পিএনডির প্রবণতা আছে। ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে বলা হয়েছে, ক্যানসার রোগীরা যেসব অস্বাভাবিক ডিসঅর্ডারে ভোগেন, পিএনডি হচ্ছে তাদের একটি।
ফরেন অ্যাকসেন্ট সিনড্রোম কী?
ফরেন অ্যাকসেন্ট সিনড্রোম বা এফএএস হচ্ছে এক ধরনের ডিসঅর্ডার, যার ফলে ভুক্তভোগীরা সম্পূর্ণ ভিন্ন উচ্চারণে কথা বলতে শুরু করে। ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে এফএএসকে 'স্ট্রাকচারাল নিউরোলজিক্যাল ড্যামেজ' এর একটি ফলাফল হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস বা এনএইচএস-এর তথ্যমতে, এফএএস একটি নিউরোলজিক্যাল ডিসঅর্ডার যা অনেক সময় রোগীর শরীরের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতাকে ব্যহত করে।
যুক্তরাজ্য, উত্তর আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ার ৪৯ জন ফরেন অ্যাকসেন্ট সিনড্রোম রোগীকে বিশ্লেষণ করে চিকিৎসকরা এর যেসব মূল কারণ অনুসন্ধান করতে পেরেছেন, সেগুলো হলো- মাইগ্রেন বা তীব্র মাথাব্যাথা, স্ট্রোক, মুখমণ্ডলে কোনো বড় আঘাত বা অপারেশন, সিজার।
২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে মুখের চোয়াল অপারেশনের পর এক নারী অনর্গল ব্রিটিশ উচ্চারণে কথা বলতে শুরু করেন।
সূত্র: স্কাই নিউজ, বিবিসি
গ্রন্থনা: আহমেদ হিমেল
Comments