শুভ লেটারপ্রেস: ফিরে এলো ছাপাখানার হরফ
সম্প্রতি একটি বাংলা ফন্ট প্রকাশ করা হয়েছে, যা একেবারে এক সময়ের পুরনো বাংলা বইয়ে ব্যবহৃত ছাপার হরফ– লেটারপ্রেস টাইপফেসের মতো।
'শুভ লেটারপ্রেস' নামের এই ফন্টটি তৈরি করেছেন নকশাকার ও ডেভেলপার শুভদীপ রায়। বর্তমানে এটি লিপিঘরে অনলাইনেও পাওয়া যাচ্ছে।
ওয়েবসাইটের তথ্যানুযায়ী, এটি সবচেয়ে বড় বাংলা ফন্টের ভাণ্ডার হতে যাচ্ছে, যাতে রয়েছে মোট ২২১টি বাংলা ফন্ট। এর মধ্যে কিছু ফন্ট বিনামূল্যে ব্যবহার করা যাবে, অন্যগুলো কিনে নিতে হবে।
আজকাল ডিজিটাল হরফে নস্টালজিয়া খুঁজতে অনেকেই পুরনো ছাপার অক্ষর খোঁজেন। এ ক্ষেত্রে ইংরেজি লেটারপ্রেস ও টাইপরাইটার ফন্ট খুঁজে পাওয়া খুব একটা মুশকিল নয়। এমনকি এ ধরনের ফন্ট থেকে সবচেয়ে নান্দনিকটা খুঁজে পাওয়াও ব্যবহারকারীদের জন্য বেশ সহজ। কিন্তু বাংলার ক্ষেত্রে বিষয়টা অত সহজ নয়। কেন না বেশিরভাগ ডিভাইসে আগে থেকেই স্ট্যান্ডার্ড বা আদর্শ লিপি ফন্ট ইনস্টল করা থাকে, এতে কাস্টমাইজ করে নেওয়ার সুযোগটাও সীমিত।
অমর আসাদ নামের এক ফেসবুক ব্যবহারকারী তার পোস্টে বলেছেন, আগেকার দিনে ছাপাখানায় প্রতিটি অক্ষর এবং চিহ্নের জন্য আলাদা আলাদা ব্লক ব্যবহার করা হতো। এই ব্লক সাজিয়ে-গুছিয়ে রাখা হতো, তাতে কালি চড়ানো হতো এবং শেষমেশ ছাপার জন্য কাগজে চেপে ধরা হতো। আর এই প্রক্রিয়ার ফলেই টাইপফেসের বিশেষ মুদ্রণ সম্ভব হতো। শুভ লেটারপ্রেসও ডিজিটাল ডিভাইসের জন্য এই ধরনটারই অনুলিপি করতে চাচ্ছে। তিনি এও বলেন যে, এই ফন্টটি ইনস্টলের মাধ্যমে কিন্ডলের যুক্তাক্ষর অংশটুকু না ভেঙেই পড়া যাবে, যা কিনা অন্য সব বাংলা ফন্টের ক্ষেত্রে সবসময় সম্ভব হয় না। এ ছাড়া মুন+রিডার ব্যবহার করে ফোনে ই-বুক পড়ার জন্যও ফন্টটি কাজে লাগবে।
বর্তমানে লিপিঘরডটকমে শতকরা ৮০ ভাগ মূল্যছাড়ে শুভ লেটারপ্রেস পাওয়া যাচ্ছে, বাংলাদেশি টাকায় এর দাম পড়ছে মাত্র ২০ টাকার। তবে কিছু ব্যবহারকারী এর পেমেন্ট প্রক্রিয়ায় সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন বলে ওয়েবসাইটে অভিযোগ জানিয়েছেন। এই সমস্যাটি খুব সম্ভব ওয়েবসাইট বাড়তি ট্র্যাফিকের কারণে এবং সার্ভার অতিরিক্ত ব্যবহার হওয়ার ফলে হচ্ছে। পেমেন্ট জমা দেবার পরও ফন্টটি না পেলে, লিপিঘরের ফেসবুক পেজে ম্যাসেজ পাঠালে বা চ্যাটবক্সে পেমেন্ট প্রক্রিয়ার একটি প্রমাণ জমা দিলে ক্রেতার ইমেইলে ফন্টটি পাঠিয়ে দেয়া হবে।
অনুবাদ: অনিন্দিতা চৌধুরী
Comments