যেসব সুবিধা রয়েছে ইলন মাস্কের ব্যক্তিগত উড়োজাহাজে

ছবি: গালফস্ট্রিম অ্যারোস্পেস করপোরেশন

গালফস্ট্রিমের তৈরি জি৬৫০ইআর মডেলের বিমানটি বিশ্বের অনেক ধনকুবেরদের কাছেই জনপ্রিয়। এই তালিকায় আছেন বর্তমানে বিশ্বের শীর্ষ ধনী ও প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্কও।

২০১৫ সালে এই জেটটি তৈরি কেরে গালফস্ট্রিম। ২০১৬ ইলন মাস্ক নিজের ব্যবহারের জন্য একটি কেনেন। যদিও এটিই মাস্কের কেনা প্রথম বিমান নয়। ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য ২০০৪ সালে তিনি ডাসল্ট ফ্যালকন ৯০০বি মডেলের একটি বিমান কিনেছিলেন।

অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস ও ফুটবলার ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর সংগ্রহেও গালফস্ট্রিম জি৬৫০ইআর মডেলের বিমান আছে।

গত এপ্রিল মাসে টেড সম্মেলনে দেওয়া এক স্বাক্ষাৎকারে মাস্ক বলেন, তিনি নিজের ভোগ-বিলাসিতার জন্য কোটি কোটি ডলার ব্যয় করেন না। কিন্তু এই বিমানটি তার মিতব্যয়ী জীবনযাপনের একমাত্র ব্যতিক্রম। মাস্ক জানান, তার কোনো প্রমোদতরী নেই, নিজের কোনো বাড়ি নেই এমনকি তিনি ছুটি কাটাতেও কোথাও যান না।  

'একমাত্র ব্যতিক্রম হচ্ছে এই বিমানটা। কিন্তু যদি বিমানটা ব্যবহার না করি, তাহলে আমার কাজের সময় কমে যেত,' মাস্ক বলেন।

ব্যক্তিগত বিমান থাকায় তিনি যখন যেখানে ইচ্ছা, সঙ্গে সঙ্গেই যেতে পারেন। এজন্য বাড়তি আনুষ্ঠানিকতা ও অপেক্ষার প্রয়োজন হয় না। ফলে তিনি আরও বেশি সময় কাজ করতে পারেন।

বিমানটির দাম ৬.৬৫ কোটি মার্কিন ডলার থেকে শুরু। এর পরিচালন ব্যয়ও কোটি কোটি ডলার।

ওয়াশিংটন পোস্টের খবর অনুযায়ী, শুধু ২০১৮ সালেই বিমানটির পেছনে মাস্কের খরচ হয়েছে ৭ লাখ ডলার। সে বছর যুক্তরষ্ট্র, ইউরোপ ও এশিয়ার বিভিন্ন স্থানে গিয়েছিলেন মাস্ক।

ওয়াশিংটন পোস্টের ওই খবরে বলা হয়, মাস্ক ও তার পরিবার 'বিনোদনমূলক ভ্রমণের' জন্য বিমানটি ব্যবহার করেছিলেন। এ ছাড়া ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেসে সাবেক বাড়িতে যাওয়া আসার জন্যও বিমানটি ব্যবহার করেছেন মাস্ক। ২০১৮ সালে মাস্ক বিমানটি দিয়ে ২৫০টি ফ্লাইট পরিচালনা করেছেন এবং মোট দেড় লাখ মাইল দূরত্ব পাড়ি দিয়েছেন।

এই বিমানটির পরিচালন ব্যয় অনেক বেশি।  উড্ডয়নকালে প্রতি ঘণ্টায় বিমানটির পেছনে ব্যয় হয় ৩ হাজার ৬৬২ মার্কিন ডলার।

১৯ সিটের বিমানটিতে খাবার ও পানীয় তৈরির ব্যবস্থা আছে।

৯৯ ফুট দীর্ঘ বিমানটির অন্দর সজ্জা করা হয়েছে আলাদাভাবে, মাস্কের রুচি ও চাহিদা অনুসারে। বিমানে দুটি সংরক্ষাণাগার, একটি মাইক্রোওয়েভ, একটি কনভেকশান ওভেন আছে। বিমানের বিভিন্ন অংশকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় একটি টাচস্ক্রিনের সাহায্যে।

বিমানটির ৪ জায়গায় আসন বসানো হয়েছে। প্রধান কেবিনে ১০টি আসন ও ১টি সোফা বসানো হয়েছে।

বিমানের অন্দরসজ্জায় চামড়া ও কাঠ ব্যবহার করা হয়েছে। মোট ১৬টি জানালা রয়েছে মাস্কের বিমানে। গালফস্ট্রিমের তথ্য অনুসারে, এত বড় জানালা পুরো অ্যাভিয়েশন শিল্পেই নেই।

বিমানের প্রতিটি আসনের সঙ্গে আরামে পা রাখার জায়গা আছে। আসনগুলোকে চাইলে ডানে-বামে ঘোরানো যায় এবং প্রয়োজনমতো বিছানায় রূপান্ত করা যায়। মেইন কেবিনে দুটি টিভি স্ক্রিন আছে। বিমানটির একপাশে ভাঁজকরা টেবিল আছে, চাইলে যেগুলোকে ডাইনিং টেবিল পরিণত করা যায়।

আসনগুলোর পাশে অ্যাশট্রে আর ওপরে ওভারহেড লাইটের লাইটের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।  

মেইন কেবিনের পেছনেই আছে ভিআইপি কেবিন। ব্যক্তিগত গোপনীয়তার জন্য এই কেবিনে স্লাইডিং দরজার ব্যবস্থা আছে। ভিআইপি কেবিনে আছে টিভি দেখার ব্যবস্থাও।

বিমানটিতে দুটি বাথরুম আছে। একটি মেইন কেবিনে, আরেকটি ভিআইপি কেবিনে।

তবে বিমানে গোসলের কোনো ব্যবস্থা নেই। বিমানের পেছনের দিকে আছে কার্গো এরিয়া, যেখানে লাগেজ রাখা যায়।

 

সূত্র: ওয়াশিংটন পোস্ট, বিসনেস ইনসাইডার

গ্রন্থনা: আহমেদ হিমেল

 

Comments

The Daily Star  | English
cyber security act

A law that gagged

Some made a differing comment, some drew a political cartoon and some made a joke online – and they all ended up in jail, in some cases for months. This is how the Digital Security Act (DSA) and later the Cyber Security Act (CSA) were used to gag freedom of expression and freedom of the press.

10h ago