৪০ হাজার শূন্যপদে দ্রুত নিয়োগ ও নতুন পিএসসি গঠনের সিদ্ধান্ত

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের শূন্যপদে দ্রুত নিয়োগ দিতে নির্দেশ দিয়েছে সরকার। তিন উপদেষ্টা ও ছয় সচিবের বিশেষ বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

একইসঙ্গে অন্যান্য মন্ত্রণালয় ও বিভাগের শূন্যপদে নিয়োগ কার্যক্রম তরান্বিত করার পাশাপাশি নন-ক্যাডার পদে নিয়োগের জন্য পৃথক পিএসসি গঠনে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

রোববার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এবং জনপ্রশাসন বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটির সদস্য মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের সভাপতিত্বে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ে এ সংক্রান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা উপস্থিত ছিলেন।

এ ছাড়া, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবসহ মন্ত্রিপরিষদ সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ও পিএসসি সচিব উপস্থিত  উপস্থিত ছিলেন।

বিশেষ এ বৈঠকে ছয় হাজার ডাক্তার নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মধ্যে জরুরি ভিত্তিতে বিশেষ বিসিএসের মাধ্যমে সেপ্টেম্বরের মধ্যে দুই হাজার ডাক্তার নিয়োগ দেওয়া হবে। আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যে এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিতে পিএসসিকে অনুরোধ জানাবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

পর্যায়ক্রমে আরও চার হাজার ডাক্তার নিয়োগ দেওয়া হবে।

বৈঠকে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ জানিয়েছে, দুই হাজার ৩০০ নার্স নিয়োগের ভাইবা চলমান আছে। এদের নিয়োগ শেষ হলে আরও সাড়ে তিন হাজার নার্স নিয়োগ উদ্যোগ নেওয়া হবে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মামলার কারণে ৩০ হাজার সহকারী শিক্ষকের পদোন্নতি আটকে আছে। আগামী ২৩ এপ্রিল এ সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে তাদের পদোন্নতির জটিলতা কাটলে সমান সংখ্যক, অর্থাৎ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩০ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হবে।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ জানিয়েছে, দুই হাজার ৮৭৬ জন শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া চলমান আছে। প্রয়োজনে বিশেষ বিসিএসের মাধ্যমে আরও শিক্ষক নিয়োগের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বৈঠকের সভাপতি ফাওজুল কবীর খান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের আওতাধীন দপ্তর-সংস্থায় দ্রুত শূন্যপদে নিয়োগের তাগিদ দেওয়া হয়েছে। তবে এই বৈঠকে স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের জরুরি নিয়োগের বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।'

পৃথক পিএসসি গঠন

রোববারের বৈঠকে উপস্থিত শীর্ষ এক কর্মকর্তা জানান, নন-ক্যাডার সরকারি কর্মচারী নিয়োগে পৃথক পিএসসি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

তিনি বলেন, 'নন-ক্যাডার শূন্যপদে নিয়োগ জটিলতা বেশি থাকার কারণে অনেক পদ খালি পড়ে আছে। বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর দ্রুত নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্নের নির্দেশ দিলেও নিয়োগে কাঙ্ক্ষিত গতি আসছে না। তাই পৃথক পিএসসির গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।'

সরকারি চাকরির ক্যাডার ও নন-ক্যাডার প্রথম শ্রেণীর নিয়োগ দেয় পিএসসি।

এ ছাড়া, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগ হয় সংশ্লিষ্ট দপ্তর-সংস্থার মাধ্যমে।

গত সরকারের আমলে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগে পৃথক পিএসসি গঠনের বিষয়ে একটি মূল্যায়ন কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই কমিটি পৃথক পিএসসি গঠনের সুপারিশও করেছিল। কিন্তু সেটি আর আলোর মুখ দেখেনি।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের 'স্ট্যাটিসটিকস অব সিভিল অফিসার্স অ্যান্ড স্টাফস'-এর সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে সরকারি পদ আছে ১৯ লাখ ১৬ হাজার ৫১৯টি। এর মধ্যে ১৩তম থেকে ২০তম গ্রেডের কর্মচারীদের জন্য অনুমোদিত পদ ১৩ লাখ ৫৩ হাজার ৫০৯টি। যা মোট সরকারি কর্মচারীর ৭১ শতাংশ। প্রথম গ্রেড থেকে নবম গ্রেডের কর্মচারীরা প্রথম শ্রেণির এবং ১০ম থেকে ১২তম গ্রেড পর্যন্ত কর্মচারীরা দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে পরিচিত।

প্রসঙ্গত, সংবিধানে সবপর্যায়ের কর্মচারী নিয়োগের দায়িত্ব সরকারি কর্ম কমিশনকে দেওয়া হয়েছে। সংবিধানের ১৪০(১)(ক) ধারায় পিএসসির দায়িত্ব হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, 'প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগদানের জন্য উপযুক্ত ব্যক্তিদিগকে মনোনয়নের উদ্দেশ্যে যাচাই ও পরীক্ষা-পরিচালন।' সংবিধানের ১৩৭ অনুচ্ছেদে কর্মচারী নিয়োগে একাধিক পিএসসি গঠনের সুযোগ রাখা হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

BB to adopt more flexible exchange rate to meet IMF conditions

After a months-long stalemate, the Bangladesh Bank (BB) is finally set to adopt a more flexible exchange rate regime to fulfil conditions tied to a $4.7 billion International Monetary Fund (IMF) loan programme, which will likely enable Bangladesh to receive $1.3 billion in the fourth and fifth tranches.

8h ago