নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিতে ঢাবি শিক্ষার্থীদের ১১ দাবি

রাজু ভাস্কর্যের সামনে অনুষ্ঠিত এই বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে তুলে ধরা হয় দাবিগুলো। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে সাবেক এক শিক্ষকের গাড়িচাপায় রুবিনা আক্তার নামের এক নারীর প্রাণহানির ঘটনার পর নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিত করতে ১১ দফা দাবিতে মুখে কালো কাপড় বেঁধে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

আজ রোববার সকাল সাড়ে ১১টায় টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের সামনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে কয়েকশ শিক্ষার্থী এই সমাবেশে অংশ নেন।

সমাবেশে আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আনিকা তাহসিনা শিক্ষার্থীদের পক্ষে যে ১১ দফা দাবি তুলে ধরেন সেগুলো হলো- বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল যানবাহনের গতিসীমা নির্ধারণ ও নিয়ন্ত্রণ, শব্দ দূষণ প্রতিরোধে ব্যবস্থা ও শান্তির বিধান নিশ্চিত করা, রুবিনা আক্তার হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিত করতে প্রশাসনের সর্বোচ্চ সমর্থন ও সহযোগিতা প্রদান, ক্যাম্পাসের প্রধান প্রবেশদ্বারগুলোতে চেকপোস্ট বসানো, বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে কেবল নিবন্ধিত রিকশা চলাচল এবং রিকশাচালকদের জন্য নির্ধারিত পোশাক ও ভাড়ার তালিকা তৈরি, ভ্রাম্যমাণ দোকানের জন্য নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ ও প্রশাসনে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা, ক্যাম্পাস পরিচ্ছন্ন রাখতে নূন্যতম ৩০০ ডাস্টবিন স্থাপনের ব্যবস্থা করা, মাদকাসক্ত ও ভবঘুরে ব্যক্তিদের ক্যাম্পাস উচ্ছেদ করা, পুরো ক্যাম্পাস সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা ও পর্যাপ্ত ল্যাম্পপোস্ট স্থাপন করা, প্রক্টর অফিসে জমে থাকা সব অভিযোগ নিষ্পত্তি করা, ইত্যাদি।

সমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে আনিকা বলেন, 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শতবর্ষ পার করেছে, সেইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে যুক্ত হয়েছে শত শত সমস্যাও। এই সমস্যাগুলোর কারণে আজ ক্যাম্পাসে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জীবনের শঙ্কাও তৈরি হয়েছে। প্রতিনিয়ত নিরাপত্তা ঝুঁকিতে ভুগছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।'

এই ১১ দফা দাবি আদায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হবে জানিয়ে আনিকা আরও বলেন, 'আগামী ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে দাবিগুলো বাস্তবায়নে যথাযথ পদক্ষেপ না নেওয়া হলে ১১ ডিসেম্বর থেকে আমরা কঠোর থেকে কঠোরতর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।'

গত শুক্রবার বিকাল ৩টার দিকে দেবরের মোটরসাইকেলে শাহবাগ হয়ে হাজারীবাগে ভাইয়ের বাসায় যাচ্ছিলেন রুবিনা আক্তার (৪৫) নামের এক নারী। তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক আজাহার জাফর শাহর প্রাইভেট কারের ধাক্কায় রুবিনা ছিটকে চলে যান ওই গাড়ির নিচে।

পেছন ও আশপাশ থেকে অনেকে চিৎকার করলেও গাড়ি থামাননি ওই চালক। গাড়ির বাম্পারে আটকে থাকা রুবিনাকে প্রায় ১ কিলোমিটার ছেঁচড়ে নিয়ে যান তিনি। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক রুবিনাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ওইদিন সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে মশাল হাতে বিক্ষোভ করে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, সেখানে সাধারণ শিক্ষার্থীদেরও অংশ নিতে দেখা যায়। এছাড়া রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ।

এসব কর্মসূচি থেকে বিক্ষোভকারীরা গাড়ি চাপায় ওই নারীর মৃত্যুর বিচারের পাশাপাশি ক্যাম্পাসে বহিরাগত নিয়ন্ত্রণ, অবাধে যানবাহন চলাচল বন্ধ করা ও ক্যাম্পাসের প্রবেশ পথগুলোতে তল্লাশি চৌকি বসানোসহ বিভিন্ন দাবি জানানো হয়।

Comments

The Daily Star  | English

Police, Bida launch special security measures for foreign investors

Held meeting with officials of foreign companies, introduced dedicated emergency contact line

1h ago