রবীন্দ্রনাথের মুখবাঁধা ভাস্কর্য সরিয়ে ফেলল ঢাবি কর্তৃপক্ষ

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সেন্সরশিপ ও নিপীড়নের ঘটনার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির বইমেলার প্রবেশমুখে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি প্রতিবাদী ভাস্কর্য স্থাপন করেছেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: স্টার

সেন্সরশিপ ও নিপীড়নের ঘটনার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির বইমেলার প্রবেশমুখে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতিবাদী ভাস্কর্যটি সরিয়ে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি রাজু ভাস্কর্যের পাশে বইমেলার প্রবেশপথে ভাষ্কর্যটি উন্মোচনের ২ দিন পর আজ বৃহস্পতিবার এটি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

চারুকলা অনুষদের কয়েকজন শিক্ষার্থীর নির্মিত কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাস্কর্যটিতে তার মুখ টেপ দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল এবং হাতে থাকা একটি বইয়ে পেরেক মেরে বন্ধ করে রাখা হয়েছিল।

জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড একেএম গোলাম রব্বানী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি সুন্দর ভাস্কর্যের পাশে আরেক ভাস্কর্য বানানো অপসংস্কৃতি। গোপনে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমতি ছাড়া এটি তৈরি করাকে কোনোভাবে আমরা সমীচীন মনে করি না এবং একজন নোবেল বিজয়ী কবির বিকৃত ভাস্কর্যে বানিয়ে তাকে অবমাননা করা কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য না।'

ভাস্কর্য সরিয়ে নেওয়ার প্রতিবাদে ওই জায়গাটিতে 'গুম হয়ে গেছেন রবীন্দ্রনাথ' ব্যানার টানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: সংগৃহীত

'বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আহ্বান করবো তারা যেন অপসংস্কৃতি পরিহার করে ইতিবাচক কাজ করে,' বলেন তিনি।

এদিকে ভাস্কর্য সরিয়ে নেওয়ার ঘটনায় নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বামপন্থী সংগঠনগুলো। ভাস্কর্য সরিয়ে নেওয়ার প্রতিবাদে ওই জায়গাটিতে 'গুম হয়ে গেছেন রবীন্দ্রনাথ' ব্যানার টানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। 

ভাস্কর্য স্থাপন কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের একাংশের সভাপতি শিমুল কুম্ভকার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ভাস্কর্যটি বানানো হয়েছে বাক ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার গুরুত্ব বোঝানোর উদ্দেশ্যে। এটি পুরো ফেব্রুয়ারি মাস জুড়ে রাজু ভাষ্কর্যের পাশে থাকবে এমনটাই আমরা চেয়েছিলাম।'

'বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে এটা নাকি অপসংস্কৃতি। আমি প্রশাসনের কাছে জানতে চাই, মত প্রকাশের স্বাধীনতা চাওয়া কি অপসংস্কৃতি? সেন্সরশিপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো কি অবমাননাকর কিছু?'

ভাস্কর্য সম্পর্কে তিনি বলেন, 'আমরা এমন কিছু তৈরি করতে চেয়েছিলাম যা মানুষকে কথা বলতে এবং আমাদের দেশের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে মানুষকে ভাবতে বাধ্য করবে। বাংলা একাডেমি আদর্শ প্রকাশনীর স্টল বই মেলাতে নিষিদ্ধ করেছে। শুধু তাই নয়, অনেক বই নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে মুক্ত চিন্তা এবং স্বাধীন মত প্রকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আমরা এর প্রতিবাদ জানাতে এ ভাস্কর্য নির্মাণ করেছি।'  

'রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মুক্ত চিন্তা ও সৃজনশীলতার প্রতীক এবং এটা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে এই মূল্যবোধগুলো আমাদের সমাজের জন্য অপরিহার্য,' বলেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Most Americans believe countries should recognise Palestinian state

The survey was taken amid hopes that Israel and Hamas would agree on a ceasefire

2h ago