ঢাবির জরুরি সেবা নম্বরের ফোন ধরেন সুনামগঞ্জের এক নারী

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কোনোভাবে সম্পৃক্ত নন বলে জানিয়েছেন ওই নারী।

অনলাইনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) পরীক্ষার ফরম পূরণ করতে গিয়ে কোনো ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হলে জরুরি সেবায় ফোন করে সহযোগিতা নেওয়ার জন্য ৩টি ফোন নম্বর দেওয়া আছে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরের পক্ষ থেকে। নম্বর ৩টির প্রথমটিতে ফোন করলে ধরেন এক নারী, যার বাড়ি সুনামগঞ্জের শাল্লা থানায়। 

তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কোনোভাবে সম্পৃক্ত নন বলে জানিয়েছেন।

অন্য দুটি নম্বরের মধ্যে দ্বিতীয়টিতে ফোন করলে কেউ কল ধরেননি। তৃতীয় নম্বরটিতে ফোন করে সেটি সচল পাওয়া যায়নি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে ২০১৯ সালে বেশ কয়েকটি সেবা ডিজিটালাইজেশনের আওতায়  আনে।

এখন থেকে পরীক্ষার আগে শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণ করতে হয় অনলাইনে। যদি কেউ যদি অনলাইনে ফরম পূরণ করতে গিয়ে সমস্যায় পড়েন, তাহলে তাকে জরুরি সেবার সহযোগিতা নিতে নম্বর ৩টিতে যোগাযোগ করতে বলা হয় নির্দেশিকায়। নম্বর ৩টি হলো- (০১৭৯৫৫৭১৪৭৪, ০১৮৮৪৮৭৮৮০৮, ০১৮১০১১৩৯৮১)

শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি সংক্রান্ত ওয়েবসাইট eco.du.ac.bd-তে প্রবেশ করে লগ-ইন করলে দেখা যায়, সেখানে পরীক্ষার ফরম পূরণ, প্রবেশপত্র এবং ট্রান্সক্রিপ্ট সংক্রান্ত কাজের সহায়তার জন্য দেওয়া নির্দেশিকায় নম্বরগুলো দেওয়া আছে। 

তবে বাকি নম্বরগুলোতে ফোন করে কোনো সাড়া পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।

অভিযোগের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদক উল্লিখিত নম্বরগুলোতে ফোন করলে প্রথম নম্বরে করা কলটি ধরেন একজন নারী। তিনি ২ মাস আগে এ নম্বরের সিমটি দোকান থেকে কিনে নিজের নামে রেজিস্ট্রেশন করে এখন ব্যবহার করছেন বলে জানিয়েছেন। 

তিনি জানান, শিক্ষার্থীরা প্রায়শই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পরিচয়ে তাকে ফোন করেন। পরে তিনি 'ভুল নম্বর' বললে সবাই ফোন কেটে দেন বলে জানান তিনি। 

শিক্ষার্থীদের অনেকে অনলাইনে ফরম পূরণ করতে গিয়ে সমস্যায় পড়ে ওই নম্বরগুলোতে ফোন দিয়েছেন। কিন্তু জরুরি সেবার এই হাল দেখে অনেকে হতাশ হয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক একজন শিক্ষার্থী তার পরীক্ষার ট্রান্সক্রিপ্ট তুলতে গিয়ে অনলাইনে ফরম পূরণে ব্যর্থ হয়ে উপরের নম্বরগুলোতে ফোন করলে তিনি কোনো সাড়া পাননি।

তিনি উচ্চ শিক্ষার জন্য যুক্তরাজ্যে পড়তে যাচ্ছেন। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রান্সক্রিপ্ট তুলতে চান। ফোনে কারও সাড়া না পেয়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে এর সমাধান করেন বলে জানান।   

নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রান্সক্রিপ্ট তুলতে হলে অনলাইনে আবেদন করতে হয়। আমি নতুন পদ্ধতিতে তা পারছিলাম না, পরে জরুরি সেবায় ফোন করলে এক নারী ফোন রিসিভ করেন। ৩টি নম্বরের মধ্যে শুধু একটিতে কল গেল কিন্তু কেউ ধরলেন না। বাকি নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে।'

পরে তিনি ভর্তি সংক্রান্ত কাজের জন্য দেওয়া আরও কয়েকটি নম্বরে ফোন করেন, তবে কেউ কল ধরেননি বলে জানান তিনি। 

এ বিষয়ে জানতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বাহালুল হক চৌধুরীকে বিভিন্ন সময়ে বেশ কয়েকবার ফোন করলে তিনি ফোন ধরেননি। এরপর পরিচয় দিয়ে মেসেজ পাঠিয়ে ফোন করার পরও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।

যোগাযোগ করা হলে গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এটা অগ্রহণযোগ্য। কেন এমন হচ্ছে তা আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চাইব।'

আজ শুক্রবার সকালে ওয়েবসাইটে গিয়ে ০১৭৯৫৫৭১৪৭৪ নম্বরটি আর খুঁছে পাওয়া যায়নি। তবে, অনলাইন ফরম পূরণের নির্দেশিকা ও নোটিশ বোর্ডের নির্দেশিকার কপিতে ওই নম্বরটি রয়েছে। দ্য ডেইলি স্টারের কাছে যার একটি কপি আছে।

 

Comments

The Daily Star  | English
Outcomes of Cop28

The consensus and clashes COP28 brought up

It is almost certain that in the end, some progress would be made on some of the contentious issues, but a decision to act on key areas will most likely be kicked down the road once again.

2h ago