'প্রায় প্রতিদিনই অস্ত্র নিয়ে কলেজে আসতেন শিক্ষক রায়হান শরিফ'

সোমবার ওই শিক্ষকের ছোড়া গুলিতে তৃতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী আহত হওয়ার পর থেকেই কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা তার বিরুদ্ধে কথা বলতে শুরু করেছেন।
সিরাজগঞ্জ মেডিকেলে শিক্ষার্থীকে গুলি
শিক্ষক রায়হান শরিফ। ছবি: সংগৃহীত

সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের শিক্ষক রায়হান শরিফ প্রায়ই ক্লাসে অস্ত্র নিয়ে আসতেন, শিক্ষার্থীদের ভয় দেখাতেন। বিভিন্ন সময় কলেজেই শূন্যে গুলি ছুড়তেন।

সোমবার ওই শিক্ষকের ছোড়া গুলিতে তৃতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী আহত হওয়ার পর থেকেই কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা তার বিরুদ্ধে কথা বলতে শুরু করেছেন। তবে পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন এর আগে কেউ তার ব্যাপারে কোনো অভিযোগ করেননি।

সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে কলেজের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের ভাইভা পরীক্ষা নেওয়ার সময় ক্লাসরুমে আকস্মিক গুলি চালান মনসুর আলি মেডিকেল কলেজের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের শিক্ষক রায়হান শরিফ। এতে তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আরাফাত আবির তমাল পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে সিরাজগঞ্জ মনসুর আলি মেডিকেল কলেজের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। 

এ ঘটনায় পুরো মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ওই শিক্ষককে আটক করে রাখেন। পরে পুলিশের হাতে সোপর্দ করেন। সেসময় তার ব্যবহৃত অস্ত্রটিও উদ্ধার করা হয়েছে।

ছবি: সংগৃহীত

কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র রাকিব উদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সোমবার পরীক্ষা চলাকালে আকস্মিক ওই শিক্ষক গুলি চলান, প্রথমবার কিছু না হলেও পরে তমালের পায়ে গুলি লাগে। শিক্ষক রায়হান শরিফ শুধু আজকেই না, তিনি প্রায় প্রতিদিনই কলেজে পিস্তল, চাকুসহ বিভিন্ন অস্ত্রের যেকোনো একটি ব্যাগে নিয়ে আসতেন। শিক্ষার্থীদের ভয় দেখাতেন। ভয়ে শিক্ষার্থীদের কেউ মুখ খুলতে সাহস পেত না।'

জানতে চাইলে মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ আমিরুল হাসান চৌধুরী দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, তিনি স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় এ ব্যাপারে কেউ সেভাবে কিছু বলতে পারেনি। বিভিন্ন সময় তাকে নিষেধ করা হলেও তিনি তা শোনেননি। বিষয়টি এর আগেও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে, তার বদলির জন্যও বলা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

এদিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল হান্নান সাংবাদিকদের জানান, একজন শিক্ষক অস্ত্র নিয়ে ক্লাসে যাচ্ছে এমন খবর কেউই কখনো তাদের জানায়নি। বিষয়টি আগে জানানো হলে আগেই ব্যবস্থা নেওয়া যেত, এ ধরনের ঘটনা ঘটত না বলে জানান তিনি।

'ওই শিক্ষককে আটক করা হয়েছে, তার অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে। অস্ত্রটির ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য সিআইডিতে পাঠানো হবে। এরপরে বলা যাবে ওই অস্ত্র থেকে গুলি চলেছে কি না এবং কয় রাউন্ড গুলি চলেছে,' বলেন তিনি।

উদ্ধারকৃত অস্ত্রটির এখনো কোনো লাইসেন্স পাওয়া যায়নি বলেও জানান তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Production fully suspended at Barapukuria power plant due to technical glitch

The shutdown has led to further power outages as the plant has the capacity to produce 275-megawatt of electricity.

56m ago