শিক্ষকদের নতুন সংগঠন ‘ইউনিভার্সিটি টিচার্স লিংক’-এর আত্মপ্রকাশ

ঢাকা বিশবিদ্যালয়ের শিক্ষক-ছাত্র কেন্দ্রে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা করেছে ইউনিভার্সিটি টিচার্স লিংক। ছবি: স্টার

'ইউনিভার্সিটি টিচার্স লিংক (ইউটিএল)' নামে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের নতুন একটি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। আজ শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-ছাত্র কেন্দ্রে (টিএসসি) এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই প্ল্যাটফর্মের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়।

প্ল্যাটফর্মটির উদ্বোধন করেন জুলাই বিপ্লবে শহীদ শিক্ষার্থী ওসমানের বাবা আব্দুর রহমান। সংগঠনটির উদ্যোক্তারা বলছেন, ছাত্র-জনতার জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনাকে ধারণ করবে ইউনিভার্সিটি টিচার্স লিংক।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক মো. আতাউর রহমান বিশ্বাসকে আহ্বায়ক করে ৫৩ সদস্যের একটি কমিটি ঘোষণা করা হয়। সদস্যসচিব হিসেবে আছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিলাল হোসেন এবং কোষাধ্যক্ষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মোশাররফ হোসেন। কমিটিতে সাত জন যুগ্ম আহ্বায়ক, পাঁচ জন যুগ্ম সদস্যসচিব এবং ৩৮ জন সদস্য রয়েছেন।

আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে অধ্যাপক আতাউর রহমান বিশ্বাস বলেন, 'জুলাই বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষা ও ছাত্রসমাজের প্রত্যাশাকে ধারণ করে আমরা সামনে এগোতে চাই। আমরা মনে করি, বিশ্ববিদ্যালয়ে একদল নির্ভরযোগ্য শিক্ষক-গবেষক প্রয়োজন, যারা দেশের জন্য কাজ করবেন। জ্ঞান ও গবেষণার কাজে বিদেশে থাকা অনেক বাংলাদেশি সন্তান দেশে ফিরতে চান। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে পারলে তারা দেশের সম্পদে পরিণত হতে পারেন। এই চিন্তা থেকেই আমাদের যাত্রা। প্রাথমিকভাবে আমরা কয়েকটি সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ শুরু করেছি এবং একটি কমিটির মাধ্যমে দেশে-বিদেশে থাকা বাংলাদেশি স্কলারদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের চেষ্টা করছি। এই শিক্ষক-গবেষকদের সঙ্গে নিয়েই আমরা দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করতে চাই।'

সদস্যসচিব ড. মোহাম্মদ বিলাল হোসেন লিখিত বক্তব্যে বলেন, '২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লব বাংলাদেশের জাতীয় চেতনায় এক নতুন জাগরণ সৃষ্টি করেছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষকদের মর্যাদা সমুন্নত রাখা, অ্যাকাডেমিক সততা নিশ্চিত করা, নিরাপদ ক্যাম্পাস, গবেষণার উৎকর্ষ এবং জাতীয় উন্নয়নে অবদান রাখার লক্ষ্যে ইউটিএল গঠিত হয়েছে। সংগঠনটি রাজনৈতিক আনুগত্যমুক্ত থেকে শিক্ষা, গবেষণা ও জাতীয় দায়িত্ববোধ এগিয়ে নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।'

তিনি আরও বলেন, 'ইউটিএলের লক্ষ্য একটি মর্যাদাপূর্ণ, স্বাধীন ও নৈতিকতাসম্পন্ন অ্যাকাডেমিয়া গড়ে তোলা। এর মিশনের মধ্যে রয়েছে নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিত করা, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের স্বার্থ রক্ষা, নীতিনির্ধারণে অংশগ্রহণ এবং জ্ঞানচর্চার পরিবেশ তৈরি করা। স্বল্পমেয়াদি লক্ষ্যের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউটিএল ইউনিট গঠন, শিক্ষকদের নৈতিক সুরক্ষা, সেমিনার-কর্মশালার আয়োজন এবং পাঠ্যক্রম সংস্কার। দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্যের মধ্যে রয়েছে বিশেষজ্ঞ শিক্ষাবিদদের সংযুক্ত করা, জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করা।'

ড. বিলাল হোসেন জানান, সংগঠনের নীতির সঙ্গে একমত যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা ইউটিএলের সদস্য হতে পারবেন। গণতান্ত্রিক নির্বাচনের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচন করা হবে এবং একটি সংবিধানও প্রণয়ন করা হবে।

অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সহ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক, শিক্ষাবিদ এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

Comments

The Daily Star  | English

Parties agree on 10yr PM term limit, independent police commission

Consensus disclosed by Commission Vice-Chairman Ali Riaz on 19th day of political dialogues at Foreign Service Academy

45m ago