রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের অবরোধ

৬ ঘণ্টা পর উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে রেল চলাচল শুরু

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবিতে প্রায় ছয় ঘণ্টা রেলপথ অবরোধ করেন। ছবিধ সংগৃহীত

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবিতে প্রায় ছয় ঘণ্টা রেলপথ অবরোধ করেন। অবরোধ তুলে নিলে ছয় ঘণ্টা পর দুপুর তিনটা থেকে ঢাকার সঙ্গে আবার উত্তরাঞ্চলের রেল যোগাযোগ শুরু হয়।

রেল বিভাগ জানিয়েছে, রেলপথ অবরোধ করায় ঢাকার সঙ্গে যমুনা সেতু হয়ে চলাচলকারী ৩২ জোড়া ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় হয়েছে।

এর আগে, আজ বুধবার সকাল ৯টা থেকে উল্লাপাড়া রেলস্টেশন এলাকার রেলগেট অবরোধ করে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। ফলে সকাল থেকে ঢাকার সঙ্গে উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের ট্রেন চলাচল (যমুনা রেলসেতু হয়ে) সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়।

রেলওয়ের পাকশি বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা হাসিনা আক্তার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সকাল ৯টা থেকে রেলপথ অবরোধ করায় ঢাকার সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের ট্রেন যোগাযোগ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। এতে বিভিন্ন স্টেশনে আটকা পড়ে অন্তত ছয়টি আন্তঃনগর ট্রেন।'

'অবরোধ তুলে নেয়ার পরে বিকাল ৩টায় ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচলের মাধ্যমে আবারও ঢাকার সঙ্গে রেল যোগাযোগ শুরু হয়,' বলেন তিনি।

এদিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, প্রায় ৯ বছর হয়ে গেলেও রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ভবন গড়ে তোলা হয়নি। বারবার দাবি জানানো হলেও কোনো লাভ হয়নি, ফলে বাধ্য হয়েই রাস্তায় নেমেছে শিক্ষার্থীরা।

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপিপি অুনমোদনে সরকারের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা।

গত ২৬ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের অনুষ্ঠান বর্জন করে স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণে ডিপিপি অনুমোদনের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। টানা সড়ক অবরোধ, মহাসড়কে ক্লাস করা, মানববন্ধন, প্রতিবাদ সমাবেশ করার পর এবার রেলপথ অবরোধ শুরু করেছেন তারা।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, পাঁচটি বিভাগে (বাংলা, সমাজবিজ্ঞান, অর্থনীতি, সংগীত ও ব্যবস্থাপনা) বর্তমান শিক্ষার্থীর সংখ্যা এক হাজার ২০০ এর অধিক। ৩৪ জন শিক্ষক, ৫৪ কর্মকর্তা ও ১০৭ জন কর্মচারী নিয়ে শাহজাদপুর মহিলা কলেজ, সাইফুদ্দিন ইয়াহিয়া ডিগ্রি কলেজসহ দুটি ভাড়া বাড়িতে চলছে বিশ্ববিদ্যালয়টির একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম। অথচ নিজস্ব ক্যাম্পাস নির্মাণে প্রকল্প বারবার জমা দিলেও তা এখনো অনুমোদন হচ্ছে না।

বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মিরাজুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয় ২০১৮ সালে। প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ৯ বছর পেরিয়ে গেলেও স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করেও কোনো ফল হয়নি। তাই দাবি আদায়ে রাজপথে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা।'

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এস এম হাসান তালুকদার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণের জন্য ৫১৯ কোটি টাকার প্রকল্প ইতোমধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন হয়ে একনেকের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।'

তিনি আরও বলেন, 'রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের তৎকালীন জমিদারির অন্তর্গত খাস জমিতেই স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ করার জন্য প্রকল্প দেওয়া হয়েছে। ভূমি অধিগ্রহণের ঝামেলা ও পরিবেশের কোনো ক্ষতি ছাড়াই সেখানে নান্দনিক ক্যাম্পাস নির্মাণ সম্ভব।'

ভিসি বলেন, 'সর্বশেষ ৫১৯ কোটি ১৫ লাখ টাকার ডিপিপি উপস্থাপন করা হয়, যা চলতি বছরের ৭ মে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় আলোচনা হয়। পরবর্তী ১৬ জুন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সরেজমিন পরিদর্শন করেন। তবুও কাজ হচ্ছে না। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষ সংকট, আবাসন সংকট ও নিরাপত্তাহীনতাসহ নানা সমস্যায় ভুগছেন।'

Comments

The Daily Star  | English

The consensus to keep women out

The project of egalitarianism cannot be subcontracted to the very custodians of inequality.

9h ago