স্কুলের সম্পত্তি বিক্রির টাকা আত্মসাতের অভিযোগ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে

ফুলগাছ উচ্চ বিদ্যালয়টি বর্তমানে রেলওয়ে ও ত্রাণ অধিদপ্তরের জায়গার উপর অবস্থিত। ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের ফুলগাছ উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৫০ শতাংশ জমির মধ্যে ১১০ শতাংশ জমি গোপনে বিক্রি করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহজাহান আলীর বিরুদ্ধে।

অবশিষ্ট ৪০ শতাংশ জমি দখলে নিয়ে মার্কেট নির্মাণ করেছেন ওই বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী জয়নাল আবেদীন। বিদ্যালয়টির ভবন রয়েছে রেলওয়ে ও ত্রাণ অধিদপ্তরের জায়গার উপর। এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক ও অফিস সহকারীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন জেলা শিক্ষা অফিসার।

বিদ্যালয় সূত্র জানায়, বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয় ১৯৯৪ সালে। সেসময় স্থানীয় জমিদাতা জালাল উদ্দিন ১১০ শতাংশ এবং জহির উদ্দিন ৪০ শতাংশ জমি দান করেন। ১৯৯৭ সালে ১৫০ শতাংশ জমি বিদ্যালয়ের নামে খারিজ করা হয়। বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা থেকে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন শাহজাহান আলী। ১৯৯৯ সালে বিদ্যালয়টির অস্থায়ী স্থাপনা সরিয়ে রেলওয়ে ও ত্রাণ অধিদপ্তরের জায়গার ওপর পুন:নির্মাণ করা হয়। ২০১১ সালে গোপনে বিদ্যালয়ের ১১০ শতাংশ জমি বিক্রি করে দেওয়া হয়। অবশিষ্ঠ ৪০ শতাংশ জমি দখলে নেন বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী। সেখানে গড়ে তোলা হয় মার্কেট। কিন্তু বিদ্যালয় ফান্ডে অদ্যবধি কোনো টাকা জমা দেওয়া হয়নি। অফিস সহকারী ৪০ শতাংশ জমি ও মার্কেট থেকে পাওয়া টাকা ভোগ করছেন অবৈধভাবে।

ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রধান শিক্ষক ও অফিস সহকারী মিলেই বিদ্যালয়ের সম্পত্তি গোপনে বিক্রি করে টাকা আত্মসাত করেছেন। বিদ্যালয়ের নিজস্ব সম্পত্তি থাকার পরও এটি এখন অন্যের জমির উপর অবস্থিত।'

বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, বিদ্যালয়ের নামে এত সম্পত্তি থাকার পরও তাদের খেলার মাঠ নেই। বিদ্যালয়ের সম্পত্তি উদ্ধার করে তা খেলার মাঠ হিসেবে প্রস্তুত করার দাবি তাদের। এ ছাড়া দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি করেন তারা।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোগলহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, বিদ্যালয়ের সম্পত্তির ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখবেন বলে জানান তিনি।

ফুলগাছ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহজাহান আলী ডেইলি স্টারকে জানান, বিদ্যালয়ের সম্পত্তি কীভাবে বেহাত হয়েছে সেই বিষয়ে তিনি লিখিতভাবে শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানাবেন। এর বাইরে তিনি আর কিছুই বলতে চাননি।

বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী জয়নাল আবেদীনও ডেইলি স্টারকে একই বক্তব্য দিয়ে জানান, প্রধান শিক্ষকই বিদ্যালয়ের সম্পত্তির কাস্টোডিয়ান।

লালমনিরহাট জেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুল বারী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা পাওয়া গেছে। প্রধান শিক্ষক ও অফিস সহকারীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। ১০ নভেম্বরের মধ্যে সন্তোষজনক জবাব পাওয়া না গেলে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।'

 

 

Comments

The Daily Star  | English

Divisions widen over July Charter’s status, implementation

Major political parties are divided over the July Charter’s implementation timeline

11h ago