ঢাবির হলে সব ধরনের প্রকাশ্য ও গুপ্ত রাজনীতি নিষিদ্ধ: প্রক্টর

২০২৪ সালের ১৭ জুলাইয়ের ফ্রেমওয়ার্ক অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) হলে সব ধরনের ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে গতরাত ৩টার দিকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে এ কথা বলেন তিনি।
প্রক্টর বলেন, 'হল পর্যায়ে সব রকমের প্রকাশ্য এবং গুপ্ত রাজনীতি ১৭ জুলাইয়ের ফ্রেমওয়ার্ক অনুযায়ী নিষিদ্ধ থাকবে।'
এসময় ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে উপাচার্য শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, '১৭ তারিখে তোমরা ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে বা হল-কেন্দ্রিক যে সিদ্ধান্ত নিয়েছো, সে অনুযায়ী হল প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। ডাকসু-কেন্দ্রিক যে কাজকর্ম, ডাকসু-কেন্দ্রিক যে প্যানেল, তা করতে দিতে হবে।'
'হল পর্যায়ে ১৭ তারিখের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিষয়টি নিয়ন্ত্রিত থাকবে এবং সেটি হল প্রশাসন যেভাবে চাইবে সেভাবে হবে', বলেন তিনি।
অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, 'এখন যদি নির্দিষ্ট কোনো দলের ব্যাপার থাকে, তাদের সঙ্গে এই ব্যাপারে কথা বলব এবং বোঝার চেষ্টা করব, আমাদের এক্সিকিউটিভ কমিটির পরামর্শটা দরকার- যে ছাত্র সংগঠনগুলো ডাকসু প্রক্রিয়ায় কীভাবে অংশ নেবে, আবার কমিটি না দিয়ে কীভাবে এগুবে। তাদের তো কাজ করতে হবে, কিন্তু একইসঙ্গে আবার আমরা চাই না তারা রেগুলার নিবর্তনমূলক রাজনীতি করুক। সেই ক্ষেত্রে আমাদের তাদের সঙ্গে কথা বলতে হবে।'
উপাচার্য বলেন, 'আমরা নিবর্তনমূলক কোনো রাজনীতি হল পর্যায়ে চাই না, এটা খুব পরিষ্কার। ১৭ জুলাই, ওই সময় হল প্রশাসন ও ছাত্রদের মধ্যে যে সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেটি তারা তাদের মতো বিবেচনা করতে পারবে, তাতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।'
'এখন ডাকসুর জন্য হল-কেন্দ্রিক ছাত্র সংগঠনগুলোকে তাদের মতো করে কাজ করতে হবে। এখন সেটির রূপ কেমন হবে। যেমন: তারা হলে মিছিল করতে পারবে কিনা, তারা পোস্টারিং কীভাবে করবে, এই যে আচরণবিধিগুলো, এটি তোমাদেরই ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে বসে আলোচনা করে ঠিক করতে হবে', বলেন তিনি।
অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, 'ডাকসুর ব্যাপারে তাদের যখন প্যানেল হবে, তারা কীভাবে কাজ করবে, হলে তো তাদের কাজ করতে হবে। এ ব্যাপারে ঐক্যমত্য দরকার। তাদেরকে তো পরামর্শ দিতে হবে আমাদের। এই বিষয়গুলো তো তোমাদের বলতে হবে পরিষ্কার। আচরণবিধি অনুযায়ী তোমাদের সঙ্গে এই ব্যাপারে ঐক্যমত্য লাগবে।'
তিনি আরও বলেন, 'হলে রাজনীতি থাকার বিষয়টা অলরেডি মীমাংসিত। এই ব্যাপারে তোমাদের যে সিদ্ধান্ত ১৭ তারিখের, সেটা এর আগের হল প্রশাসন দিয়েছে। হল প্রশাসন যদি মনে করে, সে অনুযায়ী জানাবে।'
ঢাবির হলগুলোতে ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণার প্রতিবাদে গতকাল মধ্যরাতে বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে রোকেয়া হল ও শামসুন্নাহার হলের একদল ছাত্রী হলের ফটকের তালা ভেঙে বেরিয়ে এসে বিক্ষোভে যোগ দেন। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়কে মিছিল করেন তারা। এসময় তারা 'ওয়ান টু থ্রি ফোর, হল পলিটিক্স নো মোর', 'হলে হলে রাজনীতি, চলবে না চলবে না'সহ নানা স্লোগান দেন।
পরে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন। রাত আড়াইটার দিকে উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান বাসভবনের সামনে এসে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন।
Comments