ওমিক্রন সংকট মোকাবিলায় আমরা কি প্রস্তুত?

করোনা সংক্রমণ এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে বাড়ছে। অতি সংক্রামক ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের কারণে সংক্রমণ বেড়ে থাকতে পারে। প্রশ্ন হলো, আমরা করোনা সংক্রমণের আরেকটি ঢেউ মোকাবিলায় কতখানি প্রস্তুত?
করোনার উচ্চ সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে অতীত অভিজ্ঞতার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের আশাবাদ ও নিন্দা উভয়ই প্রকাশের সুযোগ রয়েছে। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা আশাবাদী এক সপ্তাহের মধ্যে নতুন বিধিনিষেধ কার্যকর হলে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি এড়ানো যাবে।
পরিস্থিতি 'নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে' লকডাউনসহ আরও কঠোর বিধিনিষেধ জারির কথা রয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন নতুন বিধিনিষেধ জারি নয়, বরং সেগুলো সঠিকভাবে ও সহযোগিতাপূর্ণভাবে কার্যকর হয়েছে কিনা এটি নিশ্চিত করাই এখানে চ্যালেঞ্জিং।
বাংলাদেশ হয়তো সামগ্রিকভাবে কোভিড পজিটিভ ও মৃত্যুর হার তুলনামূলকভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছে। গত দুই বছরে কোভিড সংকট মোকাবিলায় সরকারের দুর্বল ব্যবস্থাপনার কারণে ব্যক্তিগত ও সামষ্টিকভাবে কতটা দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে এতে কোনো সন্দেহ নেই।
ওমিক্রনের ভালো দিক হলো এখন পর্যন্ত এটি অন্যান্য কোভিড ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় কম মারাত্মক হিসেবে দেখা গেছে। তবে খারাপ খবর হচ্ছে এর সংক্রমণ দ্রুত বাড়ছে, যেটি বিশ্বের অন্যান্য অংশের সংক্রমণের রেকর্ড থেকে প্রমাণিত। এর অর্থ মানুষ আগের মতোই ঝুঁকিতে আছে এবং মহামারি পূর্বানুমানের চেয়ে আরও বেশি দিন স্থায়ী হতে পারে। ইতোমধ্যেই, ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্য করোনার উচ্চ সংক্রমণের সঙ্গে লড়াই করছে।
পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতায় কারফিউ জারি হয়েছে। ৪ জানুয়ারি ভারতে কোভিড সংক্রমণ আগের দিনের তুলনায় ১০ দশমিক ৭৫ শতাংশ বেড়েছে। ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের কারণেই সংক্রমণ বাড়ছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ধারণা করা হচ্ছে যে আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আমাদের এখানে একটি বড় সংক্রমণের হার দেখতে পাবো বলে দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন একজন বিশেষজ্ঞ।
যদি এমনটা ঘটে তবে আমাদের কেবল সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য নয়, অতিরিক্ত রোগী সামলানোর জন্যেও আগে থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। অক্সিজেনের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে জরুরি ব্যবস্থা নিতে হবে। সারা দেশের হাসপাতালগুলোতে কোভিড রোগীদের প্রধান প্রয়োজন, অক্সিজেন। সেইসঙ্গে হাসপাতালের আসনের ক্ষমতাও বাড়াতে হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে হাসপাতালগুলোর ধারণক্ষমতা নিয়ে একটি নতুন পর্যালোচনা তাদের প্রস্তুতি নির্ধারণে সহায়তা করবে৷
এছাড়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জনসংখ্যার মাত্র ৩১ শতাংশ এ পর্যন্ত দুই ডোজ টিকা পেয়েছে। টিকাদান অভিযান আরও জোরদার করতে হবে। আরও গুরুত্বপূর্ণ হলো কর্তৃপক্ষের আরোপিত সমস্ত বিধিনিষেধ এবং স্বাস্থ্য নির্দেশাবলী যথাযথভাবে কার্যকর করতে হবে, তা না হলে ভাইরাসের বিরুদ্ধে এসব বিধিনিষেধ অকার্যকর বলে প্রমাণিত হতে পারে।
Comments