ভোটারদের হুমকি প্রদান গ্রহণযোগ্য নয়

দেশের নির্বাচন কমিশন নির্ধারিত সব নিয়ম-কানুন ও আচরণবিধি লঙ্ঘন করে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মিলন মণ্ডল অন্যান্য রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণের বিষয়ে চরম অসহিষ্ণুতা দেখানোর উদাহরণ তৈরি করেছেন।
নৌকায় ভোট না দিলে স্থানীয় ভোটারদের ভয়াবহ পরিণতি হবে বলে হুমকি দিয়ে তিনি বলেছেন, 'এ সংক্রান্ত তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। তার কথা না মানলে ভোটের পর কাউকে রেহাই দেওয়া হবে না।'
তিনি এক জনসভায় স্পষ্টভাবে ঘোষণা করেছেন, জনগণকে তাদের দলের মনোনীত প্রার্থীকেই ভোট দিতে হবে। দলের প্রতি কোনো অসম্মান বরদাস্ত করা হবে না।
অন্য প্রার্থীদের ভোট দিলে এই ইউনিয়নে উন্নয়নের সুফল ভোগ করতে দেবেন না—এমন হুমকি দিয়ে তিনি বলেন, 'নৌকার বিপক্ষে যাবেন না। কেউ বাঁচাতে পারবে না। বিপদে পড়লে কেউ পাশে দাঁড়াতে পারবে না।'
গণতন্ত্র আমাদের সংবিধানের অন্যতম স্তম্ভ। এর সারমর্ম হলো জনগণের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার অধিকারকে স্বীকৃতি দেওয়া। কিন্তু আমরা এমন এক অবস্থায় পৌঁছেছি, যেখানে ক্ষমতাসীন দলের একজন প্রভাবশালী স্থানীয় নেতা কোনোরকম পরিণতির ভয় ছাড়াই জনসভায় এভাবে সরাসরি আমাদের সাংবিধানিক অধিকারকে উপহাস করার যথেষ্ট সাহস পান। এটি উদ্বেগজনক বিষয়।
আওয়ামী লীগ যখন অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র সমুন্নত রাখার কথা বলে, তখন একজন স্থানীয় নেতার এমন কথা সত্যিকার অর্থে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে দলটির উদ্দেশ্যের ওপর সন্দেহের ছায়া ফেলে।
তাই স্থানীয় রাজনীতির আরও ক্ষতি হওয়ার আগেই মিলনের মতো নেতাদের নিয়ন্ত্রণ করা অত্যন্ত জরুরি। তার চেয়ে বড় কথা, সংবিধান ও নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের জন্য তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
অনুবাদ করেছেন জারীন তাসনিম
Comments