এলপিজি সিলিন্ডার নির্মাতাদের হ্রাসকৃত ভ্যাট সুবিধার মেয়াদ বাড়ছে

বরিশালের রূপাতলী এলাকায় ডিপোতে জমা করে রাখা এলপিজি সিলিন্ডার। ছবি: টিটু দাস

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এলপিজি সিলিন্ডার নির্মাতাদের জন্য হ্রাসকৃত মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) সুবিধার মেয়াদ আরও এক বছরের জন্য বাড়িয়েছে।

সংস্থাটির বিশ্বাস, এই উদ্যোগ ক্রমবর্ধমান চাহিদার বিপরীতে জ্বালানির দাম কম রাখতে সহায়তা করবে।

আমদানি করা সিলিন্ডারের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য স্থানীয় উৎপাদকরা এলপিজি সিলিন্ডারের ওপর প্রযোজ্য ভ্যাটের পরিমাণ কমানোর দাবি জানিয়ে আসছিলেন।

এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এনবিআর ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে সিলিন্ডারের ওপর ভ্যাটের পরিমাণ ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করে।

আগামী ৩০ জুন এই সুবিধার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল।

এলপিজি সিলিন্ডার উৎপাদনকেন্দ্র ইস্ট কোস্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান আজম জে চৌধুরী বলেন, 'ভ্যাট সহায়তার মেয়াদ বাড়ানোর উদ্যোগ এই শিল্পকে আরও সামনে এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে।'

তিনি জানান, বিশ্বব্যাপী এলপিজির দাম বাড়ছে, যা অনেক পরিবারের ক্রয়ক্ষমতা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। ফলে হ্রাসকৃত ভ্যাটের মেয়াদ বৃদ্ধি দাম কম রাখতে সহায়তা করবে।

তিনি বলেন, 'আমরা দাবি জানিয়ে আসছি, বাজার একটি কাঠামোর মধ্যে না আসা পর্যন্ত সরকার যেন এই সুবিধা অব্যাহত রাখে। কিন্তু দাম যদি মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যায়, তাহলে বাজার আর বাড়বে না। সেটাও সরকারের মাথায় রাখতে হবে। সরকার আমাদের অনুরোধ রেখেছে, এটা ভালো বিষয়।'

এনবিআর কর্মকর্তারা বলেছেন, এলপিজি এখন শহর ও গ্রামে ব্যবহৃত হয়। বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের প্রবেশের কারণে গত কয়েক বছর ধরে এটি দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে।

বাংলাদেশে ২৫টিরও বেশি এলপিজি অপারেটর রয়েছে এবং দেশে বছরে প্রায় ১৪ লাখ টন এলপিজি ব্যবহার হয়।

শিল্প সংশ্লিষ্টদের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে প্রায় ৩ লাখ টন এলপিজি ব্যবহার হয়েছিল।

বর্তমানে ৩টি প্রতিষ্ঠান এলপিজি সিলিন্ডার তৈরি করে। বিস্ফোরক পরিদপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২০-২১ অর্থবছরে স্থানীয়ভাবে ৩৫ লাখ সিলিন্ডার উৎপাদন করা হয়, যা এর আগের বছরের তুলনায় ৬৮ শতাংশ বেশি।

২০১৭-১৮ অর্থবছরে সর্বোচ্চ ৩৯ লাখ ৬০ হাজার এলপিজি সিলিন্ডার আমদানি করা হয়। ২০২০-২১ অর্থবছরে এর আগের বছরের চেয়ে অর্ধেকেরও বেশি কমে আমদানির পরিমাণ দাঁড়ায় ৬ লাখ ১৩ হাজার ইউনিটে।

বসুন্ধরা এলপি গ্যাসের বিভাগীয় প্রধান জাকারিয়া জালাল বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে এলপিজির দাম বেশি থাকায় তারা সরকারের কাছে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ভ্যাটের ক্ষেত্রে পূর্ণ ছাড় দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

১৯৭৮ সালে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কোম্পানি গৃহস্থালি কাজের জন্য প্রথমবারের মতো এলপিজির প্রচলন করে। ২০০৮ সালে থেকে সরকার প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুদ কমার কারণে নতুন গ্যাস সংযোগ দেওয়া বন্ধ করে দেয়। সে সময় থেকেই এলপিজির জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে।

এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এলপিজি বেশ কিছু নিষ্ক্রিয় গ্যাসের তরলীকৃত মিশ্রণ, যার মধ্যে আছে প্রোপেন, বিউটেন ইত্যাদি। অপরদিকে, প্রাকৃতিক গ্যাস হচ্ছে একটি অতিমাত্রায় দাহ্য, গ্যাসীয় হাইড্রোকার্বন, যার মধ্যে মূলত মিথেন ও ইথেন রয়েছে।

অনুবাদ করেছেন মোহাম্মদ ইশতিয়াক খান

Comments

The Daily Star  | English

Tk 707cr spent in 9yrs, dengue still ravages Dhaka

This year, DNCC proposed Tk 135 crore budget and DSCC Tk 46.50 crore for mosquito-control activities.

8h ago