শুল্ক ফাঁকির অভিযোগে ঢাকা থেকে রোলস রয়েস জব্দ

চট্টগ্রাম কাস্টমস থেকে শুল্কায়ন না করে খালাস করা রোলস-রয়েস ব্র্যান্ডের একটি বিলাসবহুল গাড়ি ঢাকার বারিধারা থেকে জব্দ করেছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। যুক্তরাজ্য থেকে আমদানি করা এই গাড়িটির দাম ২৭ কোটি টাকা।
ঢাকার বারিধারা থেকে বিলাসবহুল রোলস-রয়েস ব্র্যান্ডের গাড়িটি জব্দ করেছে শুল্ক গোয়েন্দারা। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম কাস্টমস থেকে শুল্কায়ন না করে খালাস করা রোলস-রয়েস ব্র্যান্ডের একটি বিলাসবহুল গাড়ি ঢাকার বারিধারা থেকে জব্দ করেছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।

আজ বুধবার সকালে বারিধারার একটি বাড়ি থেকে শুল্ক গোয়েন্দারা গাড়িটি আটক করে বলে সংস্থাটির চট্টগ্রাম কার্যলয়ের উপকমিশনার এ কে এম সুলতান মাহমুদ দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন।

ঢাকার বারিধারায় একটি বাড়ি থেকে রোলস-রয়েস ব্র্যান্ডের গাড়িটি জব্দ করা হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

তিনি বলেন, কোনো পণ্যই শুল্কায়ন কার্যক্রম সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত বন্দর বা শুল্ক স্টেশন থেকে বের হওয়ার সুযোগ নেই। ৭০ দিন আগে গাড়িটি আমদানি কারা হলেও আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান অজানা কারণে শুল্কায়ন করেনি। গাড়িটি কীভাবে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সিইপিজেড এবং সেখান থেকে ঢাকায় এসেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শুল্কসহ গাড়িটির দাম ২৭ কোটি টাকা। 

কাস্টমসের নথি অনুযায়ী, গত ১৭ মে গাড়িটি যুক্তরাজ্যের ভারটেক্স অটো লিমিটেড থেকে আমদানি করে বাংলাদেশের অনন্ত গ্রুপ ও চীনা নাগরিকের যৌথ মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান জেড এন্ড জেড ইন্টিমেটস লিমিটেড। 

আমদানি নথিতে ৬৭৫০ সিসির গাড়িটির দাম দেখানো হয়েছে ২ লাখ ডলার।

গাড়িটি আমদানির জন্য এলসি খোলা হয়েছে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকে। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে আমদানিকারকের পক্ষে খালাসের দায়িত্বে ছিল চট্টগ্রামের প্রতিষ্ঠান এম আই ট্রেড অ্যাসোসিয়েটস।

এ বিষয়ে এম আই ট্রেড অ্যাসোসিয়েটস এর ম্যানেজিং পার্টনার মো. নজরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।

চট্টগ্রাম ইপিজেডের তথ্য অনুযায়ী, জেড এন্ড জেড ইন্টিমেটস প্রতিষ্ঠানটি ইপিজেড এলাকার দুই নম্বর রোডের ১-৩ নম্বর প্লটে অবস্থিত। প্রতিষ্ঠানটির ওয়েব সাইটের দেওয়া নম্বরে যোগাযোগ করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

কাস্টমস নথি সূত্রে জানা গেছে, বেপজার ১৭০ সিপিসি (কাস্টমস প্রসিডিউর কোড) এর সুবিধায় আনায় প্রতিষ্ঠানটির ২৪ কোটি টাকার শুল্ক ছাড় পাওয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের মালিকানা ও নাম পরিবর্তন করায় এবং এনবিআর এর যথাযথ অনুমোদন না পাওয়ায় শুল্ক ছাড় দিচ্ছিল না কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।

তাছাড়া এনবিআরের ২০১০ সালের একটি স্ট্যাটুটরি রেগুলেটরি অর্ডার (এসআরও) সুবিধায় প্রতিষ্ঠানের জন্য যানবাহন আমদানি করলে তাতে বেপজার অনুমতি পত্র প্রয়োজন হয়। কিন্ত প্রতিষ্ঠানটি গাড়ি আমদানির জন্য যে অনুমতি পত্র দাখিল করেছে তার মেয়াদ চলতি বছরের ২২ মে শেষ হয়েছে। ফলে গাড়িটি ছাড় করতে হলে আমদানিকারককে আবারও বেপজার অনুমতি পত্র নিতে হতো।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম কাস্টমসের কমিশনার ফকরুল আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠানটি শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়ি আমদানি করার সুযোগ পাবে। সাধারণত ইপেজেডের পণ্য বন্দর থেকে ইপিজেডে যাওয়ার পর সেখানে শুল্কায়ন কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। কিন্তু সেখান থেকে কীভাবে ঢাকায় গেল এবং শুল্কায়ন কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ার আগেই তা মালিকপক্ষের হাতে পৌঁছাল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানটি সম্প্রতি মালিকানা ও নাম পরিবর্তন করেছে। তাই বর্তমান নামে তারা গাড়ি আমদানি করতে পারে না। আগের প্রতিষ্ঠানের এ সুবিধা পাওয়ার কথা। একই সুবিধা বর্তমান প্রতিষ্ঠানের নামে পেতে হলে তা সংশোধন করে নিতে হবে। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে আমরা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে পত্র দিয়েছি। বোর্ডের মতামত পেলে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Comments

The Daily Star  | English

'No justice in either country': Rohingya refugees face looting on both sides of the border

The most recent arrivals are staying with the relatives at the camp sharing their limited daily rations provided by the UN agencies.

1h ago