বসনে ভূষণে ঈদ

ঈদ এল বলে। আনন্দ উৎসব। প্রতিদিন তাই বাড়ছে ঈদের কেনাকাটা। পোশাক আর গয়নার দোকানে ভিড়টা বেশি। বড় এক উৎসব, সেটার সাজ মনমতো না হলে তো চলে না!
ঈদের দিন পিচ গলা রোদ থাকবে, নাকি চিটচিটে বৃষ্টি—জানা নেই কারও। এই সময়টা রোদ-বৃষ্টি দুটোই হতে পারে। তবে ভ্যাপসা গরম থাকবে, তা প্রায় নিশ্চিত। তাই পোশাকে আরামদায়ক কাপড় আর হালকা রঙের ছটা। ঈদবাজার ঘুরে দেখা গেল, চাঁপা সোনালি, সাদা আর লালের হালকা শেডগুলোই উজ্জ্বল হয়ে ফুটেছে জমিনে। তাতে যোগ হয়েছে এমব্রয়ডারি, জমকালো হাতের কাজ আর দেশি উপকরণে তৈরি অনুষঙ্গ।
ফ্যাশন হাউস ক্যাটস আইয়ের পরিচালক সাদিক কুদ্দুস বলেন, ‘হালকার পাশাপাশি উজ্জ্বল রংও এবার ঈদপোশাকে দেখা যাবে। যেমন আমরা নীলের অনেকগুলো শেড এনেছি, পাশাপাশি কালো, বেগুনি, লালও থাকছে।’ পোশাকের ডিজাইনের বেশ একটা বদল চোখে পড়ছে। সামনে খাটো এবং পেছনে লম্বা থাকছে, আবার একদিক থেকে কোনাকুনি করে কাটা পোশাকও দেখা যাচ্ছে। দুই লেয়ারের পোশাকে থাকছে শ্রাগের ধারণা থেকে তৈরি ডিজাইন।

ঈদের বড় দাওয়াত রাতের অংশে। একটু গাঢ় রঙের, অভিজাত ছাঁটের পোশাকের স্টাইল পাল্টায়নি এ বছরও। রঙ বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী সৌমিক দাস বলেন, হাফসিল্ক, মসলিন আর সিল্কেই তৈরি হচ্ছে ঈদের ঝলমলে পোশাক। লম্বা ধাঁচের এই পোশাকগুলোতে কারচুপি, এমব্রয়ডারি আর হাতের কাজই বেশি। স্টাইলসেলের প্রধান ডিজাইনার সায়েদুন বলেন, কেপ ড্রেস বা গাউন ধাঁচের পোশাকে একাধিক লেয়ার এসেছে। ফুল আর রঙের কাজ ছাড়াও ছাপা নকশার পোশাকে যোগ হয়েছে গয়না আর মুক্তার মোটিফ। এই ডিজাইন রাত কিংবা দিন—যেকোনো সময়েই মানিয়ে যাবে। উল্লেখ না করলেই নয়, আধুনিকতার পাশাপাশি এবার ঐতিহ্যবাহী কাতানের প্রত্যাবর্তন নজর কাড়ছে।
পোশাক কিংবা শাড়ি—যেমনই হোক, গয়না যোগ করলে তার সৌন্দর্য বাড়ে অনেকটাই। সোনা, পান্না বা চুনি নয়, ধাতব আর দেশি অনুষঙ্গে বানানো গয়নাই থাকছে এবারের পছন্দের শীর্ষ তালিকায়। কে-ক্রাফটের অন্যতম উদ্যোক্তা শাহনাজ খান বলেন, মেটালের তৈরি ঐতিহ্যবাহী নকশার বড় গয়নাগুলো পছন্দ করছেন ক্রেতারা। বিশেষ করে সীতাহার আর বড় ঝুমকা মানিয়ে যাচ্ছে এবারের ঈদপোশাকের নকশা ও রঙের সঙ্গে। কিশোরীরা বেছে নিচ্ছেন কাঠ আর বিডসের তৈরি রঙিন ও হালকা গয়না। বিবিআনার প্রধান ডিজাইনার লিপি খন্দকার বলেন, এমব্রয়ডারির সুতা আর কাঠ-কড়ি দিয়ে তৈরি রঙিন গয়না থাকছে। কেননা, দেশি উপকরণের তৈরি গয়নাগুলো আবহাওয়ার সঙ্গেও মিলে যায়।
ওটুর প্রধান ডিজাইনার সৈয়দা রুমানা হক বলেন, আধুনিক ধাঁচের পোশাকের মধ্যে গাউন এবার বেশ চলবে। বিশেষ করে লম্বা হাতা এবং উঁচু গলার গাউনে দেওয়া হচ্ছে ভিন্ন ধরনের কাট। হাতাকাটা গাউনের সঙ্গে ভারী কাজ করা শ্রাগ থাকবে। টপগুলোর বৈচিত্র্যে নজর দেওয়া হয়েছে অনেক। সিল্ক, সাটিন, সামুজের টপে মুক্তা, শামুক, ফিতা আর পাথরের অনুষঙ্গ দ্যুতি ছড়াবে।
তবে ভারী মানেই কিন্তু জবরজং নয়—এমনটাই মনে করেন ডিজাইনাররা। গলায় ভারী হার হলে কানে ছোট, আর কানে ভারী ঝুমকা হলে হালকা চেইনের ব্যাকরণ থাকছে অপরিবর্তিত। গয়না বলুন আর পোশাক—দুয়ে মিলে যেন ছিমছাম আর সহজ হয় লুক। এবার ঈদের সবচেয়ে ট্রেন্ডি লুক কিন্তু এটাই।

Comments

The Daily Star  | English

US tariff talks: First day ends without major decision

A high-level meeting between Bangladesh and the Office of the United States Trade Representative (USTR) ended in Washington, DC, yesterday without a major decision, despite the looming expiry of a 90-day negotiation window on July 9.

3h ago