এই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশের বড় সুযোগ

কার্টুন: বিপ্লব

সব সংস্করণ মিলিয়ে মোট ৩১ দেখায় মাত্র দুবার মুখে হাসি ফুটেছিল বাংলাদেশের। ২০০৫ সালে কার্ডিফ আর ২০১৭ সালে মিরপুরে ওয়ানডে আর টেস্টে এসেছিল ঐতিহাসিক দুই জয়। কিন্তু অজিদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি জেতা থেকেছে অধরা। অবশ্য দেখাই হয়েছে কেবল চারবার। তাও চার বিশ্বকাপের আসরে। এবার প্রথমবার দ্বি-পাক্ষিক টি-টোয়েন্টি সিরিজে মুখোমুখি দুদল। প্রথমেই বাজিমাত করার বড় সুযোগ এসেছে বাংলাদেশের সামনে।

অস্ট্রেলিয়ার বাংলাদেশ সফর মূলত, আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সামনে রেখে বেশ কিছু ক্রিকেটারকে বাজিয়ে দেখা। বাংলাদেশের দিক থেকে সেটা ভিন্ন। মাহমুদউল্লাহর দল আছে টি-টোয়েন্টিতে শক্ত ভিতে দাঁড়ানোর খুঁজে। সংক্ষিপ্ত সংস্করণে নিজেদের 'আনাড়ি' অপবাদ ঘোচানোরও মিশন বাংলাদেশের।

ইনজুরি এবং বিশ্রাম মিলিয়ে অস্ট্রেলিয়া পাচ্ছে না তাদের প্রথমসারির কয়েকজন তারকাকে। স্টিভেন স্মিথ, ডেভিড ওয়ার্নার, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, মার্কাস স্টয়নিস, জেই রিচার্ডস, কেইন রিচার্ডসন, অ্যারন ফিঞ্চ। তালিকাটা বেশ বড়। প্রভাব ফেলা ক্রিকেটারদের মধ্যে সিরিজে বাংলাদেশও পাচ্ছে না মুশফিকুর রহিম, লিটন দাসের মতো তারকাদের। অস্ট্রেলিয়ার তুলনায় অবশ্য সেটা কিছু না।

এতজন না থাকায় মূলত ব্যাটিংয়ের দিক থেকে দুর্বল হয়েছে অজিরা। সেই দুর্বলতা বোঝা গেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেই। পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ৪-১ ব্যবধানে উড়ে গিয়েছিল তারা।

সেন্ট লুসিয়ায় যেসব উইকেটে অজি ব্যাটসম্যানরা ভুগেছেন সেটাই আশা দেখাতে পারে বাংলাদেশকে। কিছুটা মন্থর উইকেটে দুই ক্যারিবিয়ান স্পিনার হেইডেন ওয়ালশ জুনিয়র আর ফ্যাবিয়েন অ্যালান অজিদের বিপক্ষে ছিলেন বেশ সফল।

মিরপুরে স্পিনারদের জন্য অনেক সহায়ক কন্ডিশনে সেই কাজটা আরও কঠিন হওয়ার কথা অস্ট্রেলিয়ার। বিশেষ করে নিজেদের মাঠে সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণ অস্ট্রেলিয়ানদের জন্য হতে পারে বড় পরীক্ষা।

অবশ্য অস্ট্রেলিয়ান বোলিং আক্রমণও বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের জন্য বড় পরীক্ষার নামই। ব্যাটিংয়ের দিক থেকে ঘাটতি থাকলেও সফরকারীদের বোলিং বেশ শক্তিশালী।

পেস আক্রমণে আছেন মিচেল স্টার্ক, জশ হ্যাজেলউডের মতো দুজন। স্কিল দিয়ে তারা যেকোনো উইকেটে হতে পারেন কার্যকর। বাংলাদেশের টপ অর্ডারকে তাই স্টার্ক-হ্যাজেলউডের চ্যালেঞ্জ সামলাতে হবে।

অজিদের স্পিন বিভাগও জুতসই। দারুণ ছন্দে থাকা লেগ  অ্যাডাম জাম্পা দলের মূল ভরসা। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের লেগ স্পিন খেলার দুর্বলতা বিবেচনায় ম্যাথু ওয়েডকে ভরসা যোগাতে পারেন জাম্পা। অফ স্পিনার অ্যাস্টন টার্নার কার্যকর হতে পারেন বাংলাদেশের স্কোয়াডে বাঁহাতিদের ছড়াছড়ির কারণে। বাঁহাতি স্পিনার অ্যাস্টন অ্যাগার ওয়েস্ট ইন্ডিজে খারাপ করেননি।

তবে নিজেদের মাঠে এসব স্পিনারদের সামলে নেওয়া উচিত বাংলাদেশের। নিজেদের ভালো সম্ভাবনা দেখলেও বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর কণ্ঠ অবশ্য বেশ সতর্ক,   'সেরা সুযোগ কিনা সেটা এ মুহূর্তে বলাটা কঠিন। কারণ তারা খুব  ভালো একটি দল। ভালো ক্রিকেট খেলেই ওদেরকে হারাতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ হলো আমরা আমাদের স্কিলগুলো কত ভালোভাবে ম্যাচের দিন প্রয়োগ করতে পারি। ম্যাচের কন্ডিশন ও পরিস্থিতি অনুযায়ী আমরা নিজেদের কতটা প্রয়োগ করতে পারি। ওই জিনিসগুলোর ওপরও অনেককিছু নির্ভর করে।'

'আমার মনে হয় খুব ভালো একটা সিরিজ হবে। আমরা জিম্বাবুয়েতে পুরো সিরিজজুড়ে ভালো ক্রিকেট খেলেছি। আমাদের আত্মবিশ্বাসও আছে। আমরা অপেক্ষায় আছি যেন আমরা আমাদের সেরা ক্রিকেটটা খেলতে পারি।'

নিজেদের পেশাদারিত্বের সঙ্গে বেশ বেমানানভাবে ম্যাচের আগের দিন সকালে অধিনায়কের নাম ঘোষণা করে অস্ট্রেলিয়া। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে সহ-অধিনায়কত্ব করা ওয়েডই পান দায়িত্ব। তার ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলন অবশ্য কাভার করার সুযোগ হয়নি বাংলাদেশের সাংবাদিকদের। নিজ দেশের গণমাধ্যমের সামনে কথা বলতে গিয়ে অবশ্য এই সিরিজ আর প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ নিয়ে একটি কথাও বলেননি ওয়েড। সামনের বিশ্বকাপ, নিজ দলের নানান হিসেব নিকেশ নিয়েই তাদের যত চিন্তা। পারফরম্যান্স দিয়ে অজিদের নজর বর্তমানে ফিরিয়ে আনার কাজটার ভারও পড়েছে তাই বাংলাদেশের উপর।

দুই দলের দুই ভিন্ন সমীকরণের বাস্তবতার মাঝে মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার ম্যাচ শুরু হবে সন্ধ্যা ৬টায়। পরদিনই দ্বিতীয় ম্যাচ।  ৫ অগাস্ট বিরতি দিয়ে ৬ ও ৭ তারিখে আবার টানা দুদিন খেলা। ৮ অগাস্ট আরেকটি বিরতির পর ৯ তারিখ হবে শেষ ম্যাচ। ঠাসা সূচির সিরিজে অজিদের জৈব সুরক্ষা বলয়ের 'বাড়াবাড়ি চাহিদা' সামলে ফল নিজেদের দিকে আনতে পারলেই সার্থক হবে বাংলাদেশ। 

Comments

The Daily Star  | English

JnU second campus: Project stalled amid bureaucratic hurdles

The construction of Jagannath University’s long-awaited second campus in Keraniganj has stalled due to bureaucratic delays.

6h ago