কাল বাংলাদেশের দুইটা হার দেখেছি: মাশরাফি

মরুর বুকে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল যখন স্কটল্যান্ডের কাছে হারছিল, তখন বাংলাদেশের একাংশে জ্বলছিল হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের বাড়ি-ঘর। একটি ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে অন্তত ২০টি বাড়ি-ঘর পুড়ে ছাই। এমন ঘটনায় হতভম্ব পুরো বাংলাদেশ। হতভম্ব বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মুর্তজাও।
রোববার পুরো বাংলাদেশের দৃষ্টি ছিল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। স্কটিশদের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে মাঠে নেমেছিল টাইগাররা। তবে দেশবাসীকে হতাশ করেছেন তারা। অপেক্ষাকৃত দুর্বল দলটির কাছে হেরে যায় মাহমুদউল্লাহরা। এমন হারে স্বাভাবিকভাবেই কষ্ট পেয়েছেন দেশের হাজারো সমর্থক। কিন্তু এ হারের রেশ কাটতে না কাটতে হারে পুরো বাংলাদেশই।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রোববার রাত ১০টার দিকে পীরগঞ্জ উপজেলার রামনাথপুর ইউনিয়নের তিনটি গ্রাম মাঝিপাড়া, বটতলা ও হাতীবান্ধা গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের প্রায় ২০টি বাড়ি-ঘরে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে দুর্বৃত্তদের এমন কাণ্ডে হৃদয় ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে মাশরাফির।
সোমবার নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুকে আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন সাবেক অধিনায়ক, 'কাল দুইটা হার দেখেছি, একটা বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের, যেটায় কষ্ট পেয়েছি। আর একটি পুরো বাংলাদেশের, যা হৃদয় ভেঙ্গে চুরমার। এ লাল সবুজ তো আমরা চাইনি। কতো কতো স্বপ্ন, কতো কষ্টার্জিত জীবন যুদ্ধ এক নিমিষেই শেষ। আল্লাহ আপনি আমাদের হেদায়েত দিন।'
এ প্রসঙ্গে ডেইলি স্টারের সঙ্গে একান্ত আলাপেও দুঃখ প্রকাশ করেন মাশরাফি। তবে খুব বেশি কিছু বলতে চাননি তিনি, 'জিনিসটা দেখার পর আমি খুব কষ্ট লেগেছে। আমি এ প্রসঙ্গে যা বলার তা ফেসবুকে লিখেছি। এর বেশি কিছু বলতে আপাতত রাজী নই। কারণ এখনও আমি মূল ঘটনা জানি না।'
দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে কুমিল্লায় পবিত্র কোরআন 'অবমাননা' করা হয়েছে বলে গুজব ছড়িয়ে পড়ে। তখন থেকেই শুরু। এরপর মৌলবাদীরা বেশ কয়েকটি জেলায় হিন্দুদের দুর্গাপূজার প্রতিমা, মন্দির ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর চালাও। গত কয়েকদিনে মুন্সীগঞ্জ ও কিশোরগঞ্জে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটেছে। নোয়াখালীতে বেশ কয়েকটি মন্দিরে তাণ্ডব চালানো হয়। পরে যতন সাহা, মানিক সাহা ও প্রান্ত সাহা নামে তিনজনের মৃতদেহও পাওয়া যায়। তবে রংপুরের ঘটনা সবকিছুকেই ছাপিয়ে যায়।
Comments