কে হচ্ছেন নতুন টেস্ট অধিনায়ক?

Shakib al hasan, Liton Das & mehedi hasan miraz
সাকিব আল হাসান, লিটন দাস ও মেহেদী হাসান মিরাজের মধ্য থেকে কেউ একজন হতে পারেন নতুন টেস্ট অধিনায়ক। ফাইল ছবি

আর তিনদিন পরই বাংলাদেশ দলের প্রথম গ্রুপটি অ্যান্টিগার ফ্লাইট ধরবে। দিন পনেরো পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেখানে নামতে হবে আরেকটি টেস্ট সিরিজে। এরকম সময়ে নানামুখী চাপে অধিনায়কত্বটা ছেড়ে দিলেন মুমিনুল হক। খুব দ্রুতই তাই আরেকজনকে বাছতে হবে বিসিবিকে। বৃহস্পতিবার বোর্ড সভায় সেই সিদ্ধান্তের আগে আলোচনায় তিন নাম।

সাকিব আল হাসান

২০১৯ সালে সাকিবের নিষেধাজ্ঞার কারণেই আকস্মিকভাবে নেতৃত্ব পেয়েছিলেন মুমিনুল। অনেকটা আপদকালীন অধিনায়ক থেকে হয়ে যান স্থায়ী।  এরপর তার অধীনে এই আড়াই বছরে বাংলাদেশ খেলেছে ১৭ টেস্ট। সাকিব নিষেধাজ্ঞা থেকে ফেরার পরও তাকে নেতৃত্বে ফেরানোর আলোচনা সেভাবে জোরালো হয়নি।

মূলত  সাকিবকে নিয়মিত টেস্টে পাচ্ছিলই না বাংলাদেশ। সাকিবের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরার পর বাংলাদেশ খেলেছে ১৩ টেস্ট, যার কেবল ৫টিতে খেলেছেন সাকিব। কখনো চোট, কখনো আইপিএলের কারণে বিরতি, কখনো আবার পারিবারিক কারণে তাকে পাওয়া যায়নি। টেস্ট খেলার অনীহার কথাও তিনি একাধিকবার জানিয়ে আসছেন।

যেকোনো বিচারে নেতৃত্বে সাকিবই হতেন প্রথম পছন্দ। কিন্তু তাকে সব খেলায় পাওয়া যাবে কিনা, এই অনিশ্চয়তাই যে দূর হয়নি। বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপে, এই জায়গাতেই আটকে গেছেন। সর্বশেষ অধিনায়ক থাকার সময়ও সাকিব একাধিকবার অধিনায়কত্ব উপভোগ না করার কথা বলেছিলেন।

শোনা যাচ্ছে, সাকিব এবার অধিনায়কত্ব নিতে ইচ্ছুক। সেটা যদি হয়েই তাকে তাহলে অন্তত তিন বছর টানা খেলার গ্যারান্টিও দিতে হবে তাকে। সাকিবের অধিনায়ক ফেরার পথে একমাত্র বাধাও এখানে।  

লিটন দাস

কিপার ব্যাটসম্যান লিটন দাস সাম্প্রতিক সময়ে আছেন দারুণ ছন্দে। টেস্টে গত দুই বছরে দেশের সেরা পারফর্মার তিনি। দলে জায়গা থিতু থাকা এবং লম্বা ক্যারিয়ার বিবেচনায় লিটন অধিনায়কত্বের আলোচনায় আছেন। এর আগে মাহমুদউল্লাহর অনুপস্থিতিতে টি-টোয়েন্টিতে এক ম্যাচে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি। এর বাইরে ঘরোয়া পর্যায়েও তার নেতৃত্ব দেওয়ার নজির নেই।

নেতৃত্বের অভিজ্ঞতা সীমিত থাকলেও সাকিবের মতো ক্ষুরধার ক্রিকেট মস্তিষ্কের জন্য দলে সুনাম আছে লিটনের। মুমিনুলের অধিনায়ক থাকার সময়ও ফিল্ডিং সাজানোর কাজটা করে আসছিলেন তিনিই। সতীর্থদের সঙ্গে তার সম্পর্কও ভীষণ ভালো। তবে লিটনের জন্য নেতিবাচক দিক হচ্ছে তিনি খেলার বাইরে একটু অন্তর্মুখী স্বভাবের। আরেকটি বিষয়ও ভাবাতে পারে বিসিবিকে। লিটন বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের অন্যতম ভরসার নাম। দারুণ ছন্দে থাকা অবস্থায় তার উপর নেতৃত্বের বোঝা চাপিয়ে দেওয়াটা ঠিক হবে কিনা এটিও ভেবে দেখার বিষয়। তিনিও রান খরায় পড়ে গেলে চরম সংকটে পড়তে  হবে দলকে।

মেহেদী হাসান মিরাজ

নেতৃত্বের আলোচনায় আরেক নাম অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। বাকি দুজনের মতো তারও একাদশে জায়গা একদম পাকা। চোট না থাকলে অফ স্পিনের পাশাপাশি লোয়ার অর্ডারে মিরাজের ব্যাটিং দলের জন্য অক্সিজেনের মতো।

মিরাজের সবচেয়ে ইতিবাচক দিক তার নেতৃত্বের অভিজ্ঞতা এরমধ্যেই বেশ ঋদ্ধ। যুব বিশ্বকাপ পর্যায়ে তিনি বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ঘরোয়া ক্রিকেটের আসর বিপিএলেও তাকে একাধিকবার অধিনায়কত্ব করতে দেখা গেছে। সে হিসেবে টেস্ট অধিনায়কত্ব পেতে পারেন তিনি।

তবে তারও একটি নেতিবাচক দিক আছে। ঘরোয়া ক্রিকেটে অধিনায়কত্ব করার সময় সতীর্থদের সঙ্গে একটু দূরত্ব তৈরি হয়েছে তার। মিরাজের ম্যান ম্যানেজমেন্ট নিয়েও নানা সময়ে কিছু প্রশ্ন উঠেছে। জাতীয় দল সামলাতে তিনি কতটা পারদর্শী হতে পারেন তা দেখার বিষয়।

বৃহস্পতিবার (২ জুন) বিসিবির কার্যকরি কমিটির সাধারণ সময় অবশ্য সব কৌতূহল মিটে যাওয়ার কথা। মুমিনুলের নেতৃত্ব থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণার পর বোর্ড প্রধান নাজমুল হাসান ডেইলি স্টারকে জানান সে কথাই,  'এখন উনারা কি কি বিকল্প নিয়ে আসে দেখি। জালাল (ইউনুস) ভাইর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ, ক্রিকেট অপারেশসন্সের চেয়ারম্যান তিনি,  (খালেদ মাহমুদ) সুজন আছে। তারা মিলে বিকল্প আসলে পরশু দিন সিদ্ধান্ত নিয়ে নেব, দেরি করব না। যাই করি না কেন।'

Comments

The Daily Star  | English

68.45% students pass SSC, equivalent exams; 139,032 get GPA-5

Pass percentage drops by 14.59 points, GPA-5 drops by over 40 thousand

28m ago