নিউজিল্যান্ড সফরে সাকিবের ছুটির আবেদন মঞ্জুর
আসন্ন নিউজিল্যান্ড সফরে দুই টেস্টের সিরিজ থেকে ছুটি চেয়ে করেছিলেন সাকিব আল হাসান। আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি চিঠি পাঠিয়েছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি)। তার ছুটির আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে। ফলে নিউজিল্যান্ডে যাচ্ছেন না এই তারকা অলরাউন্ডার।
সোমবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে বাংলাদেশ নারী দলের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলেন বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপন। সেখানেই এক সংবাদ সম্মেলনে সাকিবের ছুটি মঞ্জুর করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন তিনি।
শুরুতে নিউজিল্যান্ড সফরে যেতে না চাওয়ার কথা অনানুষ্ঠানিকভাবে বোর্ডকে জানিয়েছিলেন সাকিব। তারপরও গত শনিবার তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয় এই সফরের ১৮ সদস্যের স্কোয়াডে। বোর্ড প্রধান নাজমুল সেসময় গণমাধ্যমকে জানান, আনুষ্ঠানিক কোনো চিঠি ছাড়া সাকিবের আবেদন তারা বিবেচনায় নেবেন না।
সাকিব দেরি করেননি। 'পারিবারিক কারণের' কথা উল্লেখ করে আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠিয়ে দেন দল ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে। শেষ পর্যন্ত ছুটি মিলেও গেছে তার।
সাকিবের ছুটির প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বোর্ড সভাপতি বলেন, 'অবশ্যই, অবশ্যই (সাকিবকে ছুটি দেওয়া হয়েছে)।'
'যার বিশ্রাম দরকার তাকে তো বিশ্রাম দিতেই হবে। গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হোক বা না হোক। ওর ব্যাপারটা ভিন্ন। ও তো আর চোটে না। ও বিশ্রাম চায়নি। পারিবারিক কারণে সে ছুটি চেয়েছে। কাজেই জিনিসটা কিন্তু এক নয়। এটা চোটও না, বিশ্রামও না। অবশ্যই সে আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার। কোনো সন্দেহ নেই।'
কোনো ক্রিকেটারকে বিশ্রাম বা ছুটি দেওয়া নিয়ে আপত্তি নেই বোর্ডের। তবে নাজমুল বলেন, আগামী বছর থেকে খেলোয়াড়দের সেটা আগেভাগে জানাতে হবে, 'এটা তো আগে থেকেই বলে আসছি, কেউ যদি ছুটি চায়, খেলতে না চায়, বিশ্রাম চায় আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু সেটা আনুষ্ঠানিকভাবে হতে হবে।'
'আমরা এ বিষয়টি আগাম জানতে চাই। হঠাৎ করে (ছুটি চাইলে) আসলে আমাদের জন্য কঠিন (হয়ে পড়ে)। আগামী জানুয়ারি থেকে আমরা যে জিনিসটা করছি, সেটা হচ্ছে, কারো যদি বিশ্রাম বা ছুটি লাগে আমাদের আগে থেকে জানাতে হবে। তাহলে আমরা অন্য খেলোয়াড়কে তৈরি রাখতে পারব।'
সাকিবের ছুটি চাওয়া নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতি নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। বোর্ড প্রধান অবশ্য বিব্রতকর কিছু দেখছেন না, 'না, না, বিব্রতকর না। অনানুষ্ঠানিকভাবে আমরা জানতাম। ব্যাপারটা হচ্ছে, এতদিন ধরে সবকিছু অনানুষ্ঠানিকভাবেই হয়ে আসছে। যার কারণে অনেক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। এই বিশৃঙ্খলা যাতে না হয়, এই কারণে জোর দিয়ে বলা হচ্ছে, যেন তারা আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়।'
এই নিয়ে তৃতীয়বারের মতো নিউজিল্যান্ড সফরে যাচ্ছেন না সাকিব। ২০১৯ সালে চোটের কারণে তিনি খেলতে পারেননি। এরপর চলতি বছরের শুরুর দিকে পারিবারিক কারণে তিনি নিজেকে সরিয়ে নেন। এই দফায়ও একই কারণে ছুটি পেয়েছেন তিনি।
চোট, ছুটি আর নিষেধাজ্ঞা মিলিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের খুব সংখ্যক টেস্টেই খেলছেন সাকিব। ২০১৭ সালের অস্ট্রেলিয়া সিরিজের পর থেকে জাতীয় দল টেস্ট খেলেছে ২৬টি। কিন্তু সাকিব মাঠে থেকেছেন কেবল ৮ ম্যাচে।
গত এপ্রিলে শ্রীলঙ্কার মাটিতে টেস্ট সিরিজ থেকে নিজেকে সরিয়ে সাকিব। সেসময় তিনি আইপিএলে খেলেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে। এর আগে ২০১৭ সালে ছুটি নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে টেস্ট খেলেননি তিনি।
উল্লেখ্য, নিউজিল্যান্ডের মাটিতে আসন্ন সফরে দুটি টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ। ম্যাচগুলো আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ। আগামী বছরের ১ জানুয়ারি থেকে মাউন্ট মঙ্গানুইতে হবে প্রথম টেস্ট। ক্রাইস্টচার্চে দ্বিতীয়টি শুরু হবে ৯ জানুয়ারি।
Comments