পান্তের পাশে নেই দিল্লির সহকারী কোচ ওয়াটসন
আম্পায়ারদের সিদ্ধান্তে ক্ষোভ জানিয়ে সতীর্থদের মাঠ ছেড়ে উঠে আসতে বলে আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছেন রিশভ পান্ত। দিল্লি ক্যাপিটালসের অধিনায়কের এমন আচরণ মেনে নিতে পারছেন না খোদ দলটির সহকারী কোচ শেন ওয়াটসন।
আগের দিন শুক্রবার আইপিএলে দিল্লি ও রাজস্থান রয়্যালসের ম্যাচের শেষ ওভারে ওই ঘটনা ঘটে। মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে ছয় বলে ৩৬ রান দরকার ছিল দিল্লির। রাজস্থানের ওবেড ম্যাককয়ের প্রথম তিন বলেই ছক্কা হাঁকিয়ে দেন রভম্যান পাওয়েল। তবে তৃতীয় বলটি নিয়ে বাঁধে গোল। দিল্লির দাবি ছিল, ম্যাককয়ের ফুল টস ডেলিভারিটা কোমরের চেয়ে বেশি উচ্চতায় থাকায় নো ডাকা হোক। টেলিভিশন রিপ্লেতেও দেখা যায়, ব্যাটে লাগার সময় বলটির উচ্চতা ছিল পাওয়েলের কোমরের সামান্য উঁচুতে।
মাঠের আম্পায়াররা নো বল না ডাকায় দিল্লির ডাগ আউটে দেখা দেয় তীব্র অসন্তোষ। তারা ডেলিভারিটি আরেকবার দেখার জন্য তৃতীয় আম্পায়ারের কাছে যাওয়ার দাবি তোলেন। আম্পায়ার নিতিন মেনন ও নিখিল পটবর্ধন সেটা মানতে রাজী ছিলেন না। এক পর্যায়ে, পাওয়েল ও কুলদীপকে মাঠ ছেড়ে উঠে আসতে বলেন পান্ত। কিন্তু তাদেরকে আটকে দেন আম্পায়াররা। তখন ঘটে আরেক অদ্ভুত কাণ্ড। দিল্লির সহকারী কোচদের একজন আমরে মাঠে ঢুকে তর্কে জরান নিতিন ও নিখিলের সঙ্গে।
শেষ পর্যন্ত, ক্রিজে থেকে যান পাওয়েল ও কুলদীপ। কিন্তু সময় চলে যায় বেশ কিছুক্ষণ। বিরতির পর খেলা ফের শুরু হওয়ার আগে নিজেকে গুছিয়ে নেন ম্যাককয়। চতুর্থ বলে কোনো রান দেননি তিনি। পঞ্চম বলে আসে ২ রান। শেষ বলে আউট হয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের তারকা পাওয়েল। তাতে ১৫ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে রাজস্থান।
ঘটনার সময়ই পান্তকে শান্ত করার চেষ্টা করতে দেখা গিয়েছিল ওয়াটসনকে। দিল্লির সহকারী কোচদের অন্যতম এই সাবেক অস্ট্রেলিয়ান তারকা ম্যাচের পর জানান, তার দলের অধিনায়কের ওই আচরণ ঠিক লাগেনি, 'শেষ ওভারে যা ঘটেছে, সেটা খুবই হতাশাজনক। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা ম্যাচে ওরকম অবস্থায় পড়ে গিয়েছিলাম। কারণ, ওই মুহূর্ত পর্যন্ত গোটা ম্যাচে আমরা আমাদের কাজগুলো ঠিকঠাকভাবে করতে পারিনি।'
'দিনশেষে, যা ঘটেছে তা দিল্লি ক্যাপিটালসের নীতির সঙ্গে যায় না। আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত ভুল হোক বা ঠিক, আমাদের সেটা মেনে নিতেই হবে। কেউ একজন মাঠে ছুটে যাচ্ছে, এটা নিশ্চিতভাবেই আমরা মেনে নিতে পারি না। এটা অবশ্যই ভালো কিছু নয়।'
ওয়াটসনের মতে, পান্তের বিতর্কিত কাণ্ডে খেলা কিছু সময় বন্ধ থাকায় তাল হারিয়ে ফেলে দিল্লি, আর ছন্দ খুঁজে পায় রাজস্থান, 'এরকম লম্বা সময় ধরে খেলা বন্ধ থাকলে যে মোমেন্টাম বদলে যায়, সেটা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। ওই সময়টুকুতে ম্যাককয় নিজেকে আবার গুছিয়েও নেয়। ওই বিরতি আসলে রাজস্থান রয়্যালসের পক্ষে কাজ করেছে। সেটা ছিল একটা দুর্ভাগ্যজনক বিরতি।'
'দিনশেষে, আম্পায়ারদের সিদ্ধান্ত মেনে নিতেই হবে, সেটা ভালো বা কম ভালো যা-ই হোক না কেন। খেলা চালিয়ে যেতে হবে। ছোট থেকেই আমাদের শিখিয়ে আসা হয়েছে যে আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত মেনে নিতেই হবে। আমাদের সেটাই করা উচিত ছিল।'
পান্তের ওরকম আচরণকে হালকাভাবে নেয়নি ম্যাচ অফিসিয়ালরা। আইপিএলের আচরণবিধি ভঙ্গের দায়ে তার কপালে জুটেছে শাস্তি। তাকে ম্যাচ ফির পুরোটা জরিমানা করা হয়েছে। সাজা পেয়েছেন দিল্লি আরেক ক্রিকেটার শার্দুল ঠাকুর ও সহকারী কোচ আমরেও।
Comments