ভারতীয় দলে শাস্ত্রির মতামতের গুরুত্ব ছিল না!

robi sastri
রবি শাস্ত্রি। ফাইল ছবি- সংগ্রহ

ভারতীয় দলের সঙ্গে সম্পর্ক চুকিয়ে ফেলার কিছুদিন পর বিস্ফোরক সব মন্তব্য করেছেন রবি শাস্ত্রি। কোচের পদে থাকাকালীন তার সঙ্গে নির্বাচক কমিটি ও টিম ম্যানেজমেন্টের তেতো সম্পর্কের আভাস দিয়েছেন তিনি। জানিয়েছেন ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপে তার মতামত না দিয়েই বেছে নেওয়া হয়েছিল দল। এছাড়া প্রথম দফায় টিম ডিরেক্টরের পদ থেকে তাকে সরিয়ে দেওয়া নিয়েও সমালোচনা করেছেন তিনি। 

সবশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দিয়েই ভারতের প্রধান কোচের পদে সমাপ্তি হয় শাস্ত্রী যুগের। দলটির নতুন কোচ হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন রাহুল দ্রাবিড়। পরিবর্তন এসেছে নেতৃত্বেও। টেস্টে বিরাট কোহলি বহাল থাকলেও টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডের অধিনায়ক করা হয়েছে রোহিত শর্মাকে।

পালা-বদলের দিকে থাকা ভারতীয় ক্রিকেটে এখন নানামুখী আলোচনা তুঙ্গে। এই সময়েই টাইমস অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া সাক্ষাতকারে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন শাস্ত্রী। জানান ইংল্যান্ডে ২০১৯ বিশ্বকাপের দল তার মত না নিয়েই দিয়েছিলেন এস কে প্রসাদের নির্বাচক কমিটি,  'তখন দল নির্বাচনে আমার কোন মতামতই নেওয়া হয়নি। বিশ্বকাপের জন্য তিনজন উইকেটকিপার নেওয়া আমি মানতে পারিনি। ধোনি, পান্ত, কার্তিক তিনজনকেই একসঙ্গে দলে নেওয়ার যুক্তিটা কি? এর বদলে আম্বাতি বা শ্রেয়াসের কাউকে দেওয়া যেত।'

চার নম্বর ব্যাটসম্যান হিসেবে ওই বিশ্বকাপে নেওয়া হয়েছিল বিজয় শঙ্করকে। যার আসলে দলে থাকা নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমে উঠে প্রশ্ন। পারফরম্যান্সও করতে পারেননি বিজয়। শাস্ত্রি এই সিদ্ধান্ত নিয়ে কিছু না বললেও জানান নির্বাচকদের কাজে হস্তক্ষেপ করতেন না তিনি,'এমনিতে সাধারণ আলোচনা যখন হতো আমি কখনো নির্বাচকদের কাজে নাক গলাতাম না।'

২০১৪ সালের অগাস্টে প্রথমবার টিম ডিরেক্টর হিসেবে যোগ দেন শাস্ত্রী। টিম ডিরেক্টর পদ হলেও আদতে তার কাজটা ছিল কোচেরই মতন। ওই সময়ে ২০১৫ ওয়ানডে বিশ্বকাপ, ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমি থেকে বিদায় নেয় ভারত। টেস্টে অবশ্য শীর্ষে ছিল ৮ মাস।

২০১৬ সালে শাস্ত্রির সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষ হলে তাকে বিদায় দেয় ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। সেই বিদায় তিনি মেনে নিতে পারেননি বলে জানান,  'যখন আমি দলটাকে গুছিয়ে এনেছিলাম, আমার ধারাভাষ্যকার পেশাকে সরিয়ে যোগ দিয়েছিলাম। তখন আকস্মিকভাবে আমাকে সরিয়ে দেওয়া হয়। বিসিসিআই থেকে এক শব্দে আমাকে জানানো হয় তারা আমাকে চায় না।'

২০১৬ সালে কোচের পদে আবেদন করেছিলেন শাস্ত্রি ও অনিল কুম্বলে। দায়িত্ব পান কুম্বলে। তার অধীনে দল সাফল্য পেলেও কোহলির সঙ্গে সম্পর্কের অবনতিতে ইতি হয় কুম্বলে যুগের। পরে দ্বিতীয় দফায় ভারতীয় দলে ফেরেন শাস্ত্রি। তাকে দেওয়া হয় প্রধান কোচের পদ। তখন নাকি তাকে বলা হয়েছিল দলে বড় সমস্যা আছে,  'আমাকে বলা হয় দলে বড় ধরণের সমস্যা আছে। ৯ মাস আগে যে দল রেখে গিয়েছিলাম সেখানে কী সমস্যা থাকতে পারে। ৯ মাসের মধ্যে একটা দল কীভাবে ভুল পথে যায়?'

শাস্ত্রীর অধীনে আইসিসির কোন ট্রফি জিততে পারেনি ভারত। পরের দফায় ২০১৭ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনাল হার, ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপের সেমিতে হার ও সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুপার টুয়েলভ থেকেই বিদায় নিতে হয় ভারতকে।

তবে টেস্টে বেশ বড় সাফল্য আনেন শাস্ত্রি। অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে দুবার সিরিজ জয়, ইংল্যান্ডের সিরিজ জয় ছিল অন্যতম। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠলেও হেরে যায় নিউজিল্যান্ডের কাছে। তবে লম্বা সময় ভারত টেস্ট র‍্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে ছিল তার সময়ে।

Comments

The Daily Star  | English

Yunus promises election on time

Chief Adviser Prof Muhammad Yunus yesterday reaffirmed his commitment to holding the 13th national election in the first half of February next year.

7h ago