মিরাজের ৫, সাকিবের ৪ উইকেটে বাংলাদেশের বিশাল লিড

হারারের বাইশ গজে পেসারদের বলেই যা একটু উইকেট পড়ার পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছিল। স্পিনারদের বল দেখাচ্ছিল খুবই সাধারণ। কিন্তু তৃতীয় দিনের বিকেলে স্পিনই হয়ে উঠল বিষধর। আচমকা ধস নামল জিম্বাবুয়ের ইনিংসে।  মেহেদী হাসান মিরাজ আর সাকিব আল হাসানের বলে মাত্র ১৫ রানেই পড়েছে স্বাগতিকদের শেষ ৫ উইকেট। বাংলাদেশ পেয়ে গেছে  বিশাল লিড।

হারারে টেস্টে বাংলাদেশের ৪৬৮ রানের বিশাল পুঁজির জবাবে  ২৭৬ রানে গুটিয়ে কেবল ফলোঅন এড়াতে পেরেছে স্বাগতিকরা। বাংলাদেশ পেয়েছে  ১৯২  রানেরচ লিড।  বিপর্যয়ে শুরু হওয়া এই টেস্টে বাংলাদেশের জেতার সম্ভাবনাই এখন বেশ উজ্জ্বল।

দলকে ভালো অবস্থানে নিতে ৮২ রানে ৫ উইকেট পেয়েছেন মিরাজ, ৮২ রানে ৪ উইকেট সাকিবের।

তৃতীয় দিনের শেষ সেশনটা দুহাত ভরিয়ে দিল মিরাজকে। পুরো টেস্টে খুবই সাদামাটা বল করা এই অফ স্পিনার হুট করে হয়ে গেলেন ভয়ংকর। প্রথম ২৪ ওভার বল করে ৭৪ রান দিয়ে তিনি পেয়েছিলেন কেবল ১ উইকেট। সেই উইকেটও এসেছিল ব্র্যান্ডন টেইলরের আত্মাহুতির কারণে। পরের ৭ ওভারে আর ৮ রান দিয়েই মিরাজের পকেটে গেল আরও ৪ উইকেট।

পুরো ধসের দায় জিম্বাবুয়ের লোয়ার মিডল অর্ডারেরই।

চা-বিরতির পর এসে তাকুদজয়নাশে কাইটানো-রেজিস চাকাভা মিলে সাবলীল খেলছিলেন। ধৈর্যের দারুণ পরীক্ষা দিয়ে অভিষেকে সেঞ্চুরির আশায় ছিলেন কাইটানো। কিন্তু হঠাৎ ভুল হয়ে যায় তার। ৫০ ওভারের উপর একাই ব্যাট করার ক্লান্তি হয়ত পেয়ে গিয়েছিল। মিরাজের অতি সাধারণ এক বল বেরিয়ে যাচ্ছিল লেগ স্টাম্পের বাইরে দিয়ে। সেটাই তাড়া করে ব্যাট ছুঁইয়ে দিলেন আলসেমি ভঙ্গিতে। কিপারের হাতে সহজ ক্যাচ। ৮৭ রান করে তিনি ফেরার পরই বদলে গেল ছবি। তখন জিম্বাবুয়ের রান ২৬১।

ডোনাল্ড টিরিপানো অবশ্য নিজেকে দুর্ভাগা ভাবতে পারেন।  আম্পায়ার মরিস এরামুস তাকে দিলেন ভুল আউট। মিরাজের বল ঠেকাতে গিয়ে ইনসাইড এজড হয়ে প্যাডে লেগেছিল। আম্পায়ার ঘোষণা করেন এলবিডব্লিউর সিদ্ধান্ত। রিভিউ না থাকায় হতাশ হয়ে ফিরতে হয় ২ রান করা টিরিপানোকে।

এরপর টেল খোলাশা হয়ে পড়ায় জিম্বাবুয়ের দ্রুত গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়। খানিক পর ভিক্টর নিয়াউচি মিরাজের নিচু বল বুঝতে না পেরে বোল্ড। ব্লেসিং মুজারাবানিরও একই দশা। মিরাজের টার্ন করে ভেতরে ঢোকা বল বুঝতেই পারলেন না। ৫ উইকেট পেয়ে গেলেন মিরাজ।

রিচার্ড এনগারাভাকে স্লিপে ক্যাচ বানিয়ে সাকিব মুড়ে দিলেন ইনিংস। ৩১ রানে অপরাজিত থেকে এক পাশে অসহায় চেয়ে থাকলেন চাকাভা।

এর আগে পুরো দিনে জিম্বাবুয়ের হয়ে দারুণ ঝলক দেখিয়েছিলেন অধিনায়ক টেইলর আর কাইটানো। দুজনের নৈপুণ্যে প্রথম সেশনে হতাশায় পুড়েছিল বাংলাদেশ। ৮১ করা টেইলর উইকেট ছুঁড়ে দিলে কেবল এক উইকেট নিতে পেরেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু পরের দুই সেশন বদলে দিল সব হিসেব নিকেশ। দ্বিতীয় সেশনে রান আটকে স্বাগতিকদের দারুণ চাপে ফেলল মুমিনুল হকের দল। সেই চাপে কাবু হয়ে বাজে শটে উইকেট হারাতে থাকল জিম্বাবুয়ে।

ডিওন মেয়ার্স সাকিবের লেগ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল পিটাতে গিয়ে দেন ক্যাচ। টিমসেন মারুমা রানের খাতা খুলতে না পারার চাপে প্যাড সুইপ করতে গিয়ে কাবু। আর রয় কাইয়াকে দারুণ এক বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানান তাসকিন আহমেদ।

পেসাররা ভালো বল করলেও উইকেট নিতে পারলেন কেবল একটি। শেষ সেশনে দুই স্পিনারই করলেন রাজত্ব।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ৪৬৮

জিম্বাবুয়ে প্রথম ইনিংস: ১১১.৫ ওভারে ২৭৬ (শুম্বা ৪১, কাইটানো ৮৭, টেইলর ৮১, মেয়ার্স ২৭, মারুমা ০, কাইয়া ০, চাকাভা ৩১*, টিরিপানো ২, নিয়াউচি ০, মুজারাবানি ২, এনগারাভা ০ ; তাসকিন ১/৪৬ , ইবাদত ০/৫৮ , সাকিব ৪/৮২, মিরাজ ৫/৮২, মুমিনুল ০/৩)

Comments

The Daily Star  | English

Trump says not yet made decision on whether to attack Iran

Israel army says struck Iran centrifuge production, weapons manufacturing sites

1d ago