রুবেল বাসায় ফেরার পর আশাবাদী হয়েছিলেন সাকিব

চরম অসুস্থতা থেকে কিছুটা সুস্থ হয়ে কয়েকদিন আগেই বাসায় ফিরেছিলেন মোশাররফ হোসেন রুবেল। সাবেক এই ক্রিকেটারের শারীরিক অবস্থার উন্নতি দেখা আশাবাদী হয়ে উঠেছিলেন সাকিব আল হাসান। তিনি ভেবেছিলেন, রুবেল বুঝি 'সারভাইভ করতে পারছেন'। কিন্তু মঙ্গলবার রাতে দেশে ফেরার পথে জানতে পারেন, অন্তিমের পথে পাড়ি দিয়েছেন প্রিয় সতীর্থ। সাকিবের এখন মনে হচ্ছে, গ্যারান্টি নেই কোন কিছুরই।
ব্রেন ক্যান্সারের সঙ্গে তিন বছরের লড়াই থামিয়ে মঙ্গলবার বিকেলে জীবনের ইতি টানেন জাতীয় দলের সাবেক বাঁহাতি স্পিনার রুবেল। রুবেলের চলে যাওয়ার খবরটা প্লেনে বসে পান সাকিব।
বুধবার সকালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে নামার পর রুবেলের চলে যাওয়া নিয়ে আবেগ ঝরে সাকিবের কন্ঠে, 'আসলে খুবই দুঃখজনক। আমি যুক্তরাষ্ট্রে ছিলাম, নিউজ দেখছিলাম যে উনি মাত্র বাসায় গেলেন, একটু ভালো অনুভব করছিলেন। ভাবলাম যে কোনোভাবে বুঝি সারভাইভ করলেন। আরেকজনের সঙ্গে কথাও বলছিলাম এটা নিয়ে যে, হয়তো কম বয়স দেখে সারভাইভ করতে পারছেন। তবে হঠাৎ করে… খবরটা পাই যখন প্লেনে ছিলাম। খুবই দুঃখজনক…তবে জীবনে যে কোনো কিছুর গ্যারান্টি নেই, সেটির একটি প্রমাণ।'
রুবেলকে ফেরাতে অনেকের সঙ্গে লড়াইয়ে সামিল হয়েছিলেন সাকিবও। ক'দিন আগে তার বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান মোনার্ক মার্ট থেকে ১৫ লক্ষ টাকার চেক তুলে দেওয়া হয়েছিল রুবেলের স্ত্রী চৈতি ফারহানা রুপার হাতে।
সেই চেক হাতে নিয়ে চৈতি সেদিন গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, 'রবেল খুব খুশি হয়েছে তার বন্ধু, তার সতীর্থ সাকিব পাশে দাঁড়িয়েছেন। মাশরাফি ভাই সব সময় পাশে ছিলেন। সাকিব ভাই কিন্তু এর আগেও খোঁজ খবর নিয়েছে। আমাদের দুঃসময়ে যে উনারা আমাদের সঙ্গে আছেন এটা আমাদের অনেক বড় শক্তি।'
বন্ধু, সতীর্থদের বাড়িয়ে দেওয়া শক্ত হাতও শেষ পর্যন্ত ধরে রাখতে পারল না রুবেলকে। তার মরদেহ বহনকারী এম্বুলেন্সের পাশে একমাত্র পুত্র রুশদান আর স্ত্রী চৈতির স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকার ছবি হয়েছে ভাইরাল। এই ক্রিকেটারের মাত্র ৪০ বছর বয়েসে এভাবে চলে যাওয়া বাংলাদেশের ক্রিকেট অঙ্গণকে ভাসিয়েছে শোকের সাগরে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রুবেলকে স্মরণ করেছেন দেশের প্রায় সব ক্রিকেটার। রুবেল যখন মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তখন ধানমন্ডিতে ক্রীড়া সামগ্রি এসজির শোরুম উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে ছিলেন লিটন দাস। সাংবাদিকদের কাছ থেকে সেখানেই খবরটা পান তিনি। আবেগঘন কন্ঠে স্মরণ করেন রুবেলকে। পুরো অনুষ্ঠানের আবহই বদলে যায়। পরে নিজের ফেসবুকে লিটন লেখেন, 'আপনার সঙ্গে কাটানো খেলার প্রত্যেকটা মুহূর্ত খুব মিস করব ভাই। যতবার আপনার সাথে দেখা হতো প্রতিবার সেলফি তোলার কথা বলতেন আজকের পর আর এই কথাটা কেউ বলবেনা। যেখানেই থাকবেন ভালো থাকবেন ভাইয়া।'
Comments