লড়াই করে হারল সিলেট

বিপিএল ২০২৪
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

ব্যাটারদের ব্যর্থতায় একশও করতে পারেনি সিলেট সানরাইজার্স। সাদামাটা পুঁজি নিয়েই জমজমাট লড়াই উপহার দিলেন তাদের বোলাররা। শুরু থেকে দারুণ নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ম্যাচ জেতার দারুণ সম্ভাবনাও তৈরি করেছিল দলটি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ওই স্বল্প পুঁজির আক্ষেপ নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় তাদের। ম্যাচ জিতে নেয় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সই।

শনিবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ম্যাচে সিলেট সানরাইজার্সকে ২ উইকেটে হারিয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ১৯.১ ওভারে ৯৬ রানে গুটিয়ে যায় সিলেট। জবাবে ৮ বল বাকি থাকতে লক্ষ্যে পৌঁছায় কুমিল্লা।

ছোট পুঁজি নিয়ে লড়াই করতে সিলেটের প্রয়োজন ছিল শুরুতেই উইকেট তুলে নেওয়া। তা করতেও পারতো দলটি। ব্যক্তিগত ৭ রানেই ফিরতে পারতেন ক্যামেরুন ডেলপোর্ট। সোহাগ গাজীর প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলে শূন্যে তুলে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু মিডঅফে সহজ ক্যাচ লুফে নিতে পারেননি কেসরিক উইলিয়ামস।

অবশ্য ডেলপোর্টকে ফিরিয়েছেন সেই গাজীই। অষ্টম ওভারে তার বলে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে পড়েন এ প্রোটিয়া ওপেনার। অবশ্য এর আগেই ওপেনিং জুটি ভাঙেন গাজী। তার বলে তার হাতেই ক্যাচ তুলে ফিরে যান ফাফ দু প্লেসি।

মুমিনুল উইকেটে সেট হয়েছিলেন। কিন্তু স্লগ সুইপ করতে গিয়ে শর্ট থার্ডম্যানে ধরা পড়েন তিনি। অধিনায়ক ইমরুল কায়েস নেমেই আগ্রাসী। প্রথম বলেই বাউন্ডারি হাঁকান। এক পর ছক্কা। এরপর আরও একটি মারতে গিয়ে বিদায়। এরপর নাজমুল ইসলামের বলে আরিফুল হক এলবিডাব্লিউর ফাঁদে পড়লে জমে ওঠে ম্যাচ।

তবে করিম জানাত নেমে শুরুতেই আক্রমণাত্মক চাপ কমিয়ে আনেন। নাহিদুলের সঙ্গে ২৭ রানের কার্যকরী এক জুটি গড়েন। ভয়ঙ্কর কিছু করার আগেই এ জুটি ভাঙেন তাসকিন। জানাতকে সীমানায় উইলিয়ামসের ক্যাচে পরিণত করেন।

আর পরের ওভারে নাহিদুলকে ফেলে ফের ম্যাচ জমিয়ে দেন নাজমুল। জয়ের জন্য তখনও প্রয়োজন ছিল ১৩ রানের। এক ওভার পর ফিরে এসে শহিদুল ইসলামকেও ফেরান তিনি। তখন ম্যাচ পেন্ডুলামের মতোই দুই দিকে দুলছিল।

কিন্তু শুরুতে ক্যাচ মিস করা উইলিয়ামস বল হাতে ফিরে চাপ অব্যাহত রাখতে পারেননি। ১৯তম ওভারে মাত্র ৪ বল করেই ৬ রান। সবচেয়ে বড় কথা শেষ দুটি রান দেন ওয়াইড দিয়ে। তাতে শেষ হয়ে সিলেটের সব আশা।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ১৮ রানের ইনিংস খেলেন জানাত। নাহিদুল ও ডেলপোর্ট করেন ১৬ রান করেন মমিনুলের ব্যাট থেকে আসে ১৫ রান। সিলেটের পক্ষে ১৭ রানের খরচায় ৩টি উইকেট নেন নাজমুল। ২টি করে উইকেট নেন গাজী ও মোসাদ্দেক। 

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে সিলেট। যদিও তাদের শুরুটা ছিল সাবধানী। তবে তৃতীয় ওভারেই নাহিদুল ইসলামের বলে ব্যাটের কানায় লাগিয়ে সাজঘরে ফেরেন এনামুল হক বিজয়। সিলেটের ধসের শুরু তখন থেকেই।

চতুর্থ ওভারে এসে প্রথম বাউন্ডারি পায় দলটি। খোলস ভাঙার চেষ্টা চালান কলিন ইনগ্রাম। পঞ্চম ওভারের শেষ দুই বলে একটি ছক্কা ও চার মেরে ওভারে ১৩ রান নেন তিনি। কিন্তু পরের ওভারে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে আকাশে বল তুলে বিদায় নেন এ প্রোটিয়া ওপেনার। ফলে পাওয়ার প্লেতে ২ উইকেটে ৩৪ রান তুলতে পারে দলটি।

পাওয়ার প্লে শেষ হলেও থামেনি সিলেটের উইকেট পতন। পরের ওভারে নাহিদুলের বলে স্লগ করতে গিয়ে শর্ট থার্ডম্যানে সহজ ক্যাচ তুলে বিদায় নেন মিঠুন। এক ওভার পর অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন তানভিরের স্পিনে পরাস্ত হয়ে স্লিপে ক্যাচ তুলে দেন।

সিলেট শিবিরে আতঙ্ক ছড়ান কুমিল্লার পার্টটাইম স্পিনার মুমিনুল হকও। তার শিকার রবি বোপারা। দুই রান নিতে গিয়ে রানআউটের শিকার হন অলক কাপালী। ফলে লেজ বেরিয়ে আসে দলটির। পারেননি লেজের ব্যাটাররাও। সোহাগ গাজী, কেসরিক উইলিয়ামসরা উইকেটে সেট হয়েও কিছু করতে পারেননি।

সিলেটের মাত্র তিনজন ব্যাটার দুই অঙ্ক ছুঁতে পেরেছেন। সর্বোচ্চ ২০ রান আসে ইনগ্রামের ব্যাট থেকে। এছাড়া বোপারা ১৭ ও গাজী ১২ রান করেন। বাকি সবাই ছিলেন আসা যাওয়ায় ব্যস্ত।

এক আরিফুল ইসলাম ছাড়া কুমিল্লার সব বোলারই সিলেটের উইকেট ভাগাভাগি করে নিয়েছেন। মোস্তাফিজুর রহমান ১৪ রানের খরচায় পান ২টি উইকেট। ২০ রানের বিনিময়ে ২তি উইকেট নেন নাহিদুলও। এছাড়া শহিদুল ইসলাম, মুমিনুল, তানভির ইসলাম ও করিম জানাত নেন একটি করে উইকেট।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

সিলেট সানরাইজার্স: ১৯.১ ওভারে ৯৬ (এনামুল ৩, ইনগ্রাম ২০, মিঠুন ৫, বোপারা ১৭, মোসাদ্দেক ৩, কাপালি ৬, সোহাগ ১২, মুক্তার ০, উইলিয়ামস ৯, তাসকিন ২, নাজমুল ০*; নাহিদুল ২/২০, মোস্তাফিজুর ২/১৫, তানভীর ১/১০, শহীদুল ২/১৫, মুমিনুল ১/১৪, আরিফুল ০/১১, করিম ১/৭)

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস: ১৮.৪ ওভারে ৯৭/৮ (ডেলপোর্ট ১৬, ডু প্লেসি ২, মুমিনুল ১৫, ইমরুল ১০, নাহিদুল ১৬, আরিফুল ৪, করিম ১৮, মাহিদুল ৯*, শহীদুল ১, তানভীর ৩*; তাসকিন ১/১৯, সোহাগ ২/৩০, মোসাদ্দেক ২/১০, উইলিয়ামস ০/১১, নাজমুল ৩/১৭, অলক ০/৯)

ফল: কুমিল্লা ২ উইকেটে জয়ী।

 

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh tops sea arrivals to Italy in early 2025

According to the latest data from the United Nations High Commissioner for Refugees (UNHCR), 2,589 Bangladeshis landed in Italian shores in January and February this year while 1,206 went to the European country in the two months last year

19m ago