ইতালি-স্পেনের পাঁচ ‘ক্লাসিক’ ম্যাচের গল্প

Spain & Italy
ফাইল ছবি

ফুটবল ঐতিহ্যে ভরপুর দুই দেশই। দুদলেরই আছে বড় বড় সব সাফল্য।  বড় মঞ্চে ইতালি-স্পেনের দেখা হলেও তাই তা রূপ নেয় টানটান উত্তেজনায়। কখনো জেতে স্পেন, কখনো শোধ তুলে ইতালি। এবার ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের সেমি-ফাইনালে দেখা হচ্ছে ইউরোপের দুই ফুটবল পরাশক্তির। 

মঙ্গলবার রাতে লন্ডনে ইউরোর ফাইনালে উঠার নামবে স্পেন-ইতালি। তার আগে জেনে নেওয়া যাক বড় মঞ্চে তাদের উত্তাপ ছড়ানো পাঁচ ম্যাচের গল্প। 

তাসত্তির কনুই এনরিকের মুখে, কোয়ার্টার ফাইনালে স্পেনের হার

[১৯৯৪ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল: ইতালি ২-১ স্পেন]

ইতালি-স্পেন বিশ্বকাপে প্রথম মুখোমুখি হয় সেই ১৯৩৪ সালে। সেবার প্রথমবার বিশ্বকাপ জেতার পথে স্পেনকে কোয়ার্টার ফাইনালে ১-০ গোলে হারায় ইতালি। ৬০ বছর পর ১৯৯৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র ফের বিশ্বকাপের শেষ আটে দেখা দুদলের।

সেই ম্যাচ আলোচিত হয়ে আছে স্পেনের বর্তমান কোচ লুইস এনরিকের মুখে ইতালির  মৌরো তাসত্তির আঘাতের কারণে। একটি আক্রমণের সময় ডি বক্সের ভেতরে এনরিকেকে কনুই দিয়ে গোঁতা দেন তাসত্তি। তাতে তার নাক দিয়ে রক্তও বেরিয়ে যায়।  রেফারির দৃষ্টি এড়িয়ে যাওয়ায় পেনাল্টি দেওয়া হয়নি। আপত্তি জানিয়ে মাঠে বাকবিতণ্ডায় জড়ায় স্পেন।

ওই ম্যাচ এবং পরে সেমি-ফাইনালও জিতে ফাইনালে উঠেছিল ইতালি। তবে ফাইনালে ব্রাজিলের কাছে টাইব্রেকারে রবার্তো ব্যাজ্জিওর পেনাল্টি মিসে হারতে হয় তাদের। 

স্পেনের সাফল্য

[২০০৮ সালে ইউরো কাপের কোয়ার্টার ফাইনাল:  স্পেন-ইতালি (০-০) টাইব্রেকারে স্পেন ৪-২ গোলে জয়ী।]    

বড় টুর্নামেন্টের ইতালির সঙ্গে এর আগে পাঁচটি কোয়ার্টার ফাইনাল হেরেছিল স্পেন। সেই ক্ষত সরিয়ে তখনকার বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের ২০০৮ সালে ভিয়ানাতে ইউরোর শেষ আটে হারিয়ে সাফল্য পায় স্পেন।

নিষেধাজ্ঞার কারণে ইতালি সে ম্যাচে পায়নি তখনকার আক্রমণের বড় ভরসা আন্দ্রে পিরলো ও ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার গাতুসোকে। মূল ম্যাচ গোলশূন্য ড্র থাকার পর অতিরিক্ত সময়েও হয়নি মীমাংসা।

খেলা যায় টাইব্রেকারে। স্পেনের ফর্মের তুঙ্গে থাকা গোলরক্ষক ইকার ক্যাসিয়াস ইতালির ডি রসি আর ডি নাটালের শট ঠেকিয়ে দিলে উল্লাসে মাতেন।

বিধ্বংসী স্পেনে বিধ্বস্ত ইতালি

[ইউরো ফাইনাল ২০১২: স্পেন ৪-০ ইতালি]

২০০৮ সালের ইউরো জেতার পর ২০১০ সালে প্রথমবার বিশ্বকাপ জিতে স্পেন। ২০১২ সালের ইউরো জিতেও অনন্য হ্যাটট্রিক করে ভিসেন্ট দেল বক্সের দল।  ২০১২ সালে ইউক্রেন ও পোল্যান্ডে টিকিটাকা ফুটবলের পসরা সাজায় তারা।

গ্রুপ পর্বের ম্যাচে দুদলের খেলা হয়েছিল ১-১ গোলে ড্র। পর্তুগালকে টাইব্রেকারে হারিয়ে ফাইনালে পৌঁছায় স্পেন। কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ড ও সেমি-ফাইনালে জার্মানিকে হারিয়ে তাদের প্রতিপক্ষ হয় ইতালি।

কিন্তু কিয়েভের সেই ফাইনাল হয়ে যায় একপেশে। দুর্দান্ত স্প্যানিশ দলটির সঙ্গে পাত্তা পায়নি আজ্জুরিরা। প্রথমার্ধেই গোল করেন ডেভিড সিলভা আর জর্দি আলভা। ফার্নেন্দো তরেস আর হুয়ান মাতা বিরতির পর দেন আরও দুই গোল। ৪-০ গোলে জিতে চ্যাম্পিয়ন হয় স্পেন।

আজ্জুরিদের প্রতিশোধ

[ইউরো ২০১৬ দ্বিতীয় রাউন্ড: ইতালি ২-০ স্পেন]

২০১৬ ইউরো কাপের গ্রুপ পর্বে চ্যাম্পিয়ন হয়ে দ্বিতীয় পর্বে উঠে ইতালি। অন্যদিকে নিজেদের গ্রুপে ক্রোয়েশিয়ার পেছনে থাকায় স্পেন দ্বিতীয় রাউন্ডে সামনে পায় ইতালিকে।

আগের আসরে বিধ্বস্ত হওয়ার শোধ নিতে মঞ্চটি ছিলো মোক্ষম। ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপের বাজে পারফরম্যান্সের কারণে কোণঠাসা সময়ে থাকা ইতালিয়ানরা খেল দেখায় এই ম্যাচে।

আন্তনিও কন্তের দল ভরপুর গ্যালারির সামনে জমজমাট ম্যাচে লাগাম নেয় নিজেদের দিকে। জর্জিয়ো কিয়েলিনির গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর গ্রাজিনো পেল্লের গোলে নিশ্চিত করে জয়।

ইতালির বিশ্বকাপে যেতে না পারার ক্ষত

[২০১৮ বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব: স্পেন ৩-০ ইতালি]

সাম্প্রতিক সময়ে দুদলের শেষ আলোচিত দেখা ২০১৭ সালে। রাশিয়া বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে ইতালিয়ানদের স্বপ্ন গুঁড়িয়ে ৩-০ গোলে হারায় স্পেন।

ইস্কোর দুই গোলের পর আলভারো মোরাতা করেন তৃতীয় গোল। বাছাইপর্বে গ্রুপ সেরা হয়ে যায় স্পেন। ইতালি চলে যায় প্লে অফে। প্লে অফের ম্যাচে তারা সুইডেনের কাছে হেরে গেলে ১৯৫৮ সালের পর প্রথম বিশ্বকাপে যেতে ব্যর্থ হয়।

Comments

The Daily Star  | English

Advisory council set to hold emergency meeting this evening

Sources from the CA office confirmed that the meeting will take place at the State Guest House, Jamuna.

5m ago