ডি ব্রুইন-মাহরেজের নৈপুণ্যে ইউনাইটেডকে বিধ্বস্ত করল সিটি

প্রথমার্ধে লড়াই জমাতে পেরেছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। তবে দ্বিতীয়ার্ধে কেবল বলের পেছনেই দৌড়ে বেড়াতে হলো তাদের। বলের নাগাল আর পেল না তারা। তাদেরকে রীতিমতো ধরাশায়ী করে ছাড়ল শহর প্রতিদ্বন্দ্বী ম্যানচেস্টার সিটি। কেভিন ডি ব্রুইন ও রিয়াদ মাহরেজের নৈপুণ্যে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের শিরোপাধারীরা পেল দুর্দান্ত জয়।
রোববার রাতে ঘরের মাঠ ইতিহাদ স্টেডিয়ামে ম্যানচেস্টার ডার্বিতে ৪-১ গোলের বড় ব্যবধানে জিতেছে পেপ গার্দিওলার শিষ্যরা। বিরতির আগে দুবার লক্ষ্যভেদ করেন বেলজিয়ান মিডফিল্ডার ডি ব্রুইন। মাঝে ইউনাইটেডের পক্ষে ব্যবধান কমিয়েছিলেন ইংলিশ মিডফিল্ডার জ্যাডন স্যাঞ্চো। বিরতির পর আলজেরিয়ান ফরোয়ার্ড মাহরেজ দুবার জালে বল পাঠালে পূর্ণ পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ে সিটি।
গোটা ম্যাচে বল দখলে একক আধিপত্য দেখায় সিটিজেনরা। ৭০ শতাংশ সময় বল পায়ে রেখে আক্রমণেও পুরোপুরি প্রাধান্য বিস্তার করে খেলে তারা। গোলমুখে ২৪টি শট নিয়ে দলটি লক্ষ্যে রাখে দশটি। বিপরীতে, চোটে পড়া ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোকে ছাড়া মাঠে নামা রেড ডেভিলদের পাঁচটি শটের দুটি ছিল লক্ষ্যে। এর সবগুলোই ছিল প্রথমার্ধে। বিরতির পর তাদেরকে নাকানিচোবানি খাইয়ে ছাড়ে ম্যান সিটি।
ম্যাচের পঞ্চম মিনিটে স্বাগতিকদের এগিয়ে দেন ডি ব্রুইন। বার্নার্দো সিলভার পাসে ডি-বক্সের ভেতর থেকে বাম পায়ের শটে ইউনাইটেড গোলরক্ষক দাভিদ দে গেয়াকে পরাস্ত করেন তিনি। ১৮তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করতে পারতেন ডি ব্রুইন। তবে দে গেয়াকে এই দফায় ফাঁকি দিতে পারেননি।
চার মিনিট পর দারুণ এক পাল্টা আক্রমণে সমতায় ফেরে সফরকারীরা। পল পগবার পাসে বাঁকানো শটে সিটি গোলরক্ষক এদারসনকে কুপোকাত করেন স্যাঞ্চো। তবে ইউনাইটেডের স্বস্তি স্থায়ী হয়নি বেশিক্ষণ। ছয় মিনিট পর ফের লিড নেয় সিটি। ফিল ফোডেনের শট দে গেয়া ফিরিয়ে দেওয়ার পর পান বার্নার্দো। তার প্রচেষ্টা প্রতিহত করেন ডিফেন্ডার হ্যারি ম্যাগুইয়ার। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি ইউনাইটেডের। আলগা বল পেয়ে জোরালো শটে নিশানা ভেদ করেন ডি ব্রুইন।
৪৫তম মিনিটে মাহরেজকে হতাশ করেন ম্যাচে মোট ছয়টি সেভ দেওয়া দে গেয়া। এর চার মিনিট আগে দ্বিতীয়বারের মতো সমতায় ফেরার সুবর্ণ সুযোগ হারায় ইউনাইটেড। ব্রুনো ফার্নান্দেস, পগবা ও ফ্রেদের বোঝাপড়ায় রচিত আক্রমণে ডি-বক্সে বল পান স্যাঞ্চো। কিন্তু পোস্টের উপর দিয়ে উড়িয়ে মারেন তিনি।
দ্বিতীয়ার্ধের পুরোটা জুড়ে ছিল সিটির দাপট। তাদের সামনে একেবারে অসহায় ছিল প্রিমিয়ার লিগের সফলতম ক্লাব ইউনাইটেড। ৬৮তম মিনিটে দলটি হজম করে তৃতীয় গোল। ডি ব্রুইনার বুদ্ধিদীপ্ত কর্নারে বাঁ পায়ের শটে স্বাগতিক সমর্থকদের উল্লাসে মাতান মাহরেজ। ম্যাগুইয়ারের গায়ে হালকা ছোঁয়া লেগে বল চলে যায় ঝাঁপিয়ে পড়া দে গেয়ার আয়ত্বের বাইরে দিয়ে।
৭৩তম মিনিটে মাহরেজের আরেকটি শট রুখে দেন দে গেয়া। আট মিনিট পর জোয়াও ক্যান্সেলোর অ্যাক্রোব্যাটিক ভলিও ফিরিয়ে দেন তিনি। তবে নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে আর ত্রাতা হতে পারেননি এই স্প্যানিশ গোলরক্ষক। বদলি ইল্কাই গুন্দোয়ানের রক্ষণচেরা পাসে ইউনাইটেডের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেন মাহরেজ। শুরুতে অফসাইডের কারণে গোলটি বাতিল করা হলেও পরে ভিএআরে পাল্টে যায় সিদ্ধান্ত।
এই জয়ে ২৮ ম্যাচে ৬৯ পয়েন্ট নিয়ে লিভারপুলের সঙ্গে ব্যবধান বাড়াল প্রিমিয়ার লিগের শীর্ষে থাকা ম্যান সিটি। এক ম্যাচ কম খেলা লিভারপুলের অর্জন ৬৩ পয়েন্ট। পাঁচে নেমে গেছে ভারপ্রাপ্ত কোচ রালফ রাংনিকের ম্যান ইউনাইটেড। ২৮ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ৪৭। তাদের টপকে চারে ওঠা আর্সেনালের পয়েন্ট ৪৮। তারা খেলেছে কেবল ২৫ ম্যাচ।
Comments