তুর্কমেনিস্তানের সঙ্গে লড়াই করে হারল বাংলাদেশ

ইন্দোনেশিয়ার বিপক্ষে ড্র। এরপর শক্তিশালী বাহরাইনের বিপক্ষে ২-০ গোলের হার। ফলাফল সন্তোষজনক হলেও লড়াইটা সে অর্থে করতে পারেনি বাংলাদেশ। কেবল রক্ষণ সামলানোর কাজেই ব্যস্ত ছিল তারা। তবে এদিন তুর্কমেনিস্তানের সঙ্গে প্রায় সমান তালেই লড়াই করেছে বাংলাদেশ। যদিও ফরোয়ার্ডদের ব্যর্থতায় হার এড়াতে পারেনি দলটি।
শনিবার মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরের বুকিত জলিল জাতীয় স্টেডিয়ামে এএফসি এশিয়ান কাপ ২০২৩ কোয়ালিফায়ারের 'ই' গ্রুপের ম্যাচে তুর্কমেনিস্তানের কাছে ২-১ গোলের ব্যবধানে হারে বাংলাদেশ। প্রথমার্ধে একটি করে গোল দেয় দুই দল। তুর্কমেনিস্তানের পক্ষে গোল দুটি করেছেন আন্নাদুরদিয়েউ আলতিমিরাত ও আমানউ আরসলানমিরাত। বাংলাদেশের হয়ে গোলটি করেন মোহাম্মদ ইব্রাহীম।
এদিন শুরুতে পিছিয়ে পড়লেও সমতায় খুব দ্রুতই ফেরে বাংলাদেশ। এরপর পাল্টা আক্রমণে নির্ভর করেই খেলছিল তারা। কিন্তু ফরোয়ার্ডদের ব্যর্থতায় কাঙ্ক্ষিত গোল খুঁজে পেল না লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। উল্টো রক্ষণের দুর্বলতায় গোল হজম করে দলটি। এরপর ফাঁকা পোস্ট পেয়েও লক্ষ্যভেদ করতে পারেনি টাইগাররা। তাই হতাশা নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় হাভিয়ের কাবরেরার দলকে।
এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে এ নিয়ে টানা দ্বিতীয় ম্যাচ হারল বাংলাদেশ। এর আগে বাহরাইনের কাছে ২-০ গোলে হেরে শুরু করে দলটি। অন্যদিকে স্বাগতিক মালয়েশিয়ার কাছে ৩-১ গোলে হেরে শুরু করার পর প্রথম জয় পেল তুর্কমেনিস্তান।
এদিন ম্যাচের শুরুতেই দারুণ চাপ সৃষ্টি করে সপ্তম মিনিটেই গোল আদায় করে নেয় তুর্কমেনিস্তান। এ সময়ের মধ্যে চারটি কর্নার পায় দলটি। তার শেষটি থেকে গোল পায় মধ্য এশিয়ার দলটি। কর্নার থেকে কোনাকুনি প্লেসিং শটে লক্ষ্যভেদ করেন আলতিমিরাত।
অবশ্য সমতায় ফিরতে খুব বেশি সময় নেয়নি লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। দ্বাদশ মিনিটে বিশ্বনাথ ঘোষের লম্বা থ্রো ইন থেকে রাকিব হাসানের হেড লাফিয়ে ঠেকান গোলরক্ষক। তবে পুরোপুরি বিপদমুক্ত করতে পারেননি। ফিরতি বলে দারুণ এক হেডে সমতা ফেরান মোহাম্মদ ইব্রাহিম।
৭৭তম মিনিটে রক্ষণের দুর্বলতায় গোল হজম করে বাংলাদেশ। বাঁ প্রান্ত থেকে আলতিমিরাতের ক্রস গোলমুখ থেকে আলতো টোকায় লক্ষ্যভেদ করেন আরসলান। অথচ তাকে ঘিরে ছিল বাংলাদেশের চার খেলোয়াড়। কিন্তু কেউ আটকাতে পারেননি। পেছন থেকে ডিফেন্ডার ইয়াসিন চেষ্টা করলেও লাভ হয়নি।
ম্যাচে এদিন বেশ কিছু সুযোগ তৈরি করেছিল বাংলাদেশ। ২০তম মিনিটে সাজ্জাদ হোসেন ফাঁকায় ডি বক্সে ঢুকে পড়লেও শেষ পর্যন্ত ভারসাম্য রাখতে পারেননি। ৩৬তম মিনিটে বিশ্বনাথের থ্রো ইন থেকে সাজ্জাদের হেডে গোলমুখে বল পেয়ে গিয়েছিলেন ইয়াসিন আরাফাত। কিন্তু মাথা ছোঁয়াতে পারেননি তিনি।
৪১তম মিনিটে সাজ্জাদের উদ্দেশ্যে বাড়ানো রাকিবের ক্রস গুশমিরাত স্লাইড করে বিপদমুক্ত না করতে পারলে গোল পেতে পারতো বাংলাদেশ। ৪৯তম মিনিটে পাল্টা আক্রমণে এক খেলোয়াড়কে কাটিয়ে বিপদ সীমানায় ঢুকে পড়ে সাজ্জাদকে পাস দিয়েছিলেন রাকিব। ফাঁকায় থাকা সাজ্জাদ গোলরক্ষককে একা পেয়েও বল নিয়ন্ত্রণে করতে দেড়ি ফেলেন। পাঁচ মিনিট পর ইব্রাহিমের ক্রসে সাজ্জাদ ঠিকমতো মাথা ছোঁয়াতে পারলে এগিয়ে যেতে পারতো বাংলাদেশ।
৭১তম মিনিটে বিপলু আহমেদ পাস থেকে ফাঁকায় পেয়েছিলেন ফয়সাল আহমেদ ফাহিম। কিন্তু গোলরক্ষক বরাবর শট নিয়ে নষ্ট করেন সে সুযোগ। নির্ধারিত সময়ের দুই মিনিট আগে তো অবিশ্বাস্য এক সুযোগ নষ্ট করে বাংলাদেশ। ফ্রি কিক থেকে নেওয়া জামাল ভুঁইয়ার শট থেকে এক খেলোয়াড় নিলে গোলমুখে ফাঁকায় পেয়ে যান বাংলাদেশের তিন খেলোয়াড়। সেখান থেকে শট নেন টুটুল হোসেন বাদশাহ। কিন্তু অবিশ্বাস্যভাবে উড়িয়ে মেরে সমতায় ফেরার সুবর্ণ এক সুযোগ নষ্ট করেন।
Comments