দুর্দান্ত নৈপুণ্যে পিএসজিকে রুখে দিল ব্রুগে

ছবি: টুইটার

শুরুর দিকে এগিয়ে যাওয়া ফরাসি পরাশক্তি পিএসজি ধরে রাখত পারল না ম্যাচের লাগাম। অল্প সময়ের ব্যবধানে সমতায় ফিরে দুর্বার হয়ে হয়ে উঠল ক্লাব ব্রুগে। বাকিটা সময়ে তারাই গতিময় ফুটবলে দাপট দেখাল আক্রমণে। তাদের সঙ্গে পয়েন্ট ভাগাভাগি করে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে প্রত্যাশিত সূচনা পেল না মরিসিও পচেত্তিনোর শিষ্যরা।

বুধবার রাতে আসরের 'এ' গ্রুপের ম্যাচে বেলজিয়ামের দল ব্রুগে নিজেদের মাঠে ১-১ গোলে রুখে দিয়েছে তারকায় ঠাসা শিরোপাপ্রত্যাশী পিএসজিকে। স্প্যানিশ মিডফিল্ডার আন্দার হেরেরার লক্ষ্যভেদে স্বাগতিকরা পিছিয়ে পড়ার পর গোল শোধ করেন বেলজিয়ান মিডফিল্ডার হান্স ভানাকেন।

পিএসজির জার্সিতে প্রথমবারের মতো শুরুর একাদশে মাঠে নামাকে স্মরণীয় করে রাখতে পারেননি লিওনেল মেসি। তবে ভক্ত-সমর্থকদের একটি অপেক্ষার পালা শেষ হয়েছে। ম্যাচে একসঙ্গে খেলতে দেখা গেছে আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড মেসি, ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড নেইমার ও ফরাসি স্ট্রাইকার কিলিয়ান এমবাপেকে।

বার্সেলোনা ছেড়ে আসা মেসি গোলের খুব কাছে পৌঁছে গিয়েছিলেন অবশ্য। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে বাধা হয়ে দাঁড়ায় ক্রসবার। উপরন্তু ফাউল করে হলুদ কার্ডও দেখেন তিনি। এর আগে হেরেরার গোলের যোগানদাতা ছিলেন দ্বিতীয়ার্ধে চোট নিয়ে মাঠ ছেড়ে যাওয়া এমবাপে। কিন্তু গোটা ম্যাচে নেইমার ছিলেন একেবারেই নিষ্প্রভ।

সমতায় ফিরে উজ্জীবিত হয়ে ওঠা স্বাগতিকরা গোলমুখে ১৬টি শট নিয়ে লক্ষ্যে রাখে সাতটি। অন্যদিকে, পিএসজি বল দখলে এগিয়ে থাকলেও আক্রমণে পিছিয়ে ছিল। তাদের নয়টি শটের চারটি ছিল লক্ষ্যে।

ছবি: টুইটার

১৫তম মিনিটে ম্যাচের প্রথম ভালো সুযোগ থেকে এগিয়ে পিএসজি। বাম প্রান্ত দিয়ে দ্রুত আক্রমণে উঠে পায়ের কারিকুরিতে ব্রুগের রক্ষণে ফাটল ধরান এমবাপে। এরপর ডি-বক্সে নিচু ক্রস ফেলেন তিনি। বাকিটা সারতে কোনো ভুল করেননি হেরেরা। বাঁ পায়ের জোরালো শটে বল জালে পাঠান তিনি।

আট মিনিট পর ব্যবধান বাড়াতে ব্যর্থ হন এমবাপে। মেসি অসাধারণ দক্ষতায় তাকে খুঁজে নিলেও তিনি যে শট নেন, তা ফাঁকি দিতে পারেনি ব্রুগে গোলরক্ষককে। ঝাঁপিয়ে পড়ে দারুণভাবে বল আটকে দেন সিমন মিনিওলে।

২৭তম মিনিটে ম্যাচে আসে সমতা। পিএসজির মতো প্রায় একই কায়দায় গোল করে ব্রুগে। বাম প্রান্তে সতীর্থের কাছ থেকে বল পেয়ে ডি-বক্সে গড়ানো ক্রস ফেলেন এদুয়ার্দ সোবল। বাইরে থেকে দৌড়ে এসে কাছের পোস্টে নাভাসকে ফাঁকি দেন ভানাকেন।

ধাক্কা সামলে দুই মিনিটের ব্যবধানে ফের এগিয়ে যেতে পারত প্যারিসিয়ানরা। ডান প্রান্তে বল পেয়ে ট্রেডমার্ক কায়দায় ভেতরের দিকে ঢুকে ডি-বক্সের বাইরে থেকে বাঁ পায়ে বাঁকানো শট নেন মেসি। মিনিওলের করার কিছু না থাকলেও বল ফিরে আসে পোস্টে লেগে।

৩৩তম মিনিটে ভানাকেনের ফ্রি-কিক পরাস্ত করতে পারেনি নাভাসকে। ছয় মিনিট পর আবারও তাকে হাজির হতে হয় উদ্ধারকর্তার ভূমিকায়। নোয়া ল্যাঙের সঙ্গে বল আদান-প্রদান করে পেনাল্টি অঞ্চলে ঢুকে চার্লস ডি কেটলার নেওয়া শট কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন নাভাস। পরেও তাকে বেশ কয়েক দফা ভোগায় ল্যাঙ ও ডি কেটলারের জুটি।

মাঝমাঠে কর্তৃত্ব আনতে বিরতিতে দুটি পরিবর্তন করে দ্বিতীয়ার্ধে খেলতে নামে পিএসজি। জর্জিনিও ভাইনালদাম ও লেয়ান্দ্রো পারেদেস মাঠ ছাড়েন, ঢোকেন ইউলিয়ান ড্রাক্সলার ও দানিলো পেরেইরা। কিন্তু উল্টো শুরু থেকেই তাদের চেপে আক্রমণের বন্যা বইয়ে দেয় ব্রুগে।

ছবি: টুইটার

৪৮তম মিনিটে ল্যাঙের পাসে দুরূহ কোণ থেকে কামাল সোয়াহর শট ফিরিয়ে দেন নাভাস। পরের মিনিটে ডি কেটলারের ক্রসে জ্যাক হেন্ড্রির শট ব্লক করেন আব্দু দিয়ালো। ৫১তম মিনিটে এমবাপে পায়ে চোট নিয়ে মাঠ ছাড়লে দুশ্চিন্তা বাড়ে পিএসজির। তার জায়গা নেন মাউরো ইকার্দি।

৬৯তম মিনিটে ডি কেটলারের পাসে ল্যাঙের শট পরীক্ষায় ফেলতে পারেনি নাভাসকে। পরের মিনিটে ডি-বক্সের ভেতর থেকে মেসির কোণাকুণি শট রুক্ষা করেন মিনিওলে। চার মিনিট পর প্রায় এগিয়েই গিয়েছিল ব্রুগে। ডি কেটলারের চিপে দূরের পোস্টে ল্যাঙের ওভারহেড কিক অল্পের জন্য লক্ষ্যে থাকেনি।

জয়সূচক গোলের জন্য শেষদিকে পিএসজি কিছুটা গা ঝাড়া দিয়ে ওঠে। ৭৯তম মিনিটে বদলি নুনো মেন্দেসের ক্রসে সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করেন মেসি। তার ভলি পোস্টের অনেক উপর দিয়ে চলে যায়। দুই মিনিট পর আবারও সুযোগ তৈরি করেন মেন্দেস। কিন্তু ফাঁকায় থাকা ইকার্দির ফ্লিক লক্ষ্যেই থাকেনি।

ম্যাচের বাকি সময়ে বারবার হানা দিয়েও প্রতিপক্ষকে টলাতে পারেনি পিএসজি। ব্রুগের রক্ষণভাগে হেন্ড্রি-সোবল-স্ট্যানলি এনসোকিরা দৃঢ়তার পরিচয় দিয়ে ফিরিয়ে দেন একাধিক প্রচেষ্টা। ফলে পয়েন্ট প্রাপ্তির উল্লাস নিয়ে মাঠ ছাড়ে দলটি।

'এ' গ্রুপের আরেক ম্যাচে হয়েছে গোল উৎসব। নিজেদের মাঠ ইতিহাদ স্টেডিয়ামে ৬-৩ গোলে জার্মান ক্লাব আরবি লাইপজিগকে উড়িয়ে দিয়েছে প্রতিযোগিতার আরেক ফেভারিট ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের শিরোপাধারী ম্যানচেস্টার সিটি।

Comments

The Daily Star  | English

Uncovering the silent deaths of migrant women

In the shadows of booming remittance flows and the quiet resilience of Bangladesh’s labour diaspora, a disturbing reality persists: numerous Bangladeshi female migrant workers, particularly those employed as domestic help in Gulf countries, are returning home in coffins.

18h ago